ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের ৮ আসনেই সরব আওয়ামী লীগ, কোন্দলে জর্জর বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৬ নভেম্বর ২০১৮

টাঙ্গাইলের ৮ আসনেই সরব আওয়ামী লীগ, কোন্দলে জর্জর বিএনপি

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে আগ্রহী অনেকেই। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- নিয়ে সরব হয়ে মাঠেও আছেন একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে অভ্যন্তরীণ কারণে কোণঠাসা হয়ে মাঠে নেই বিএনপি। টাঙ্গাইলের আটটি আসনেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্য বিরোধ নেই। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে। অন্যদিকে জেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য। সকল কর্মসূচীই তারা পৃথকভাবে পালন করে আসছে। কোন প্রার্থীই এ মুহূর্তে মাঠে সক্রিয় নেই। নেতাকর্মীরা রয়েছেন ধোঁয়াশার মধ্যে। মামলা মোকদ্দমার ভয়ে অনেকেই মাঠ ছাড়া। কেন্দ্রীয় কর্মসূচী থাকলেও জেলা বিএনপি ছাড়া উপজেলাগুলোতে কর্মসূচী পালিত হয় না। মাঝে মধ্যে কর্মসূচী পালনের চেষ্টা করলেও নেতৃত্বের অভাবে এবং পুলিশের বাধার মুখে তা প- হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা মাঠে না থাকায় দিনদিন জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন বিএনপি। এদিকে কর্মী সমর্থক থাকলেও নেতা শূন্য দলে পরিণত হয়েছে জাতীয় পার্টি। এছাড়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা সকলেই তাকিয়ে আছে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সিদ্ধান্তের ওপর। অপরদিকে টাঙ্গাইল জেলায় জামায়াতের সাংগঠনিক কোন কার্যক্রম নেই এবং তারা কখনও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা দেন না। দেশের রাজনীতিতে টাঙ্গাইল জেলা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। টাঙ্গাইলে আটটি আসনের মধ্যে বর্তমানে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপিরা প্রভাব বিস্তার করে রেখেছেন। তবে বর্তমান এমপিদের মধ্যে একজন বয়সের ভারে ন্যুব্জ, একজন এমপি হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন, দুই আসনে এমপিদের সঙ্গে দলীয় কোন্দল প্রকট এবং দুইজন এমপি কর্মীবিমুখ হয়ে পড়েছেন বলে আলোচনা ও সমালোচনা রয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে। এসব আসনে উদ্যমী তরুণ ও নতুন পরীক্ষিত প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে। এমনটি মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠনের পর থেকেই দলীয় কোন্দল ও দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ টাঙ্গাইল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন এখন খালেদা জিয়া এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলার মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি সালাম পিন্টুর পরিবার এই দুই গ্রুপে বিভক্ত। জেলায় খালেদা জিয়ার কারামুক্তি আন্দোলন পালিত না হলেও সালাম পিন্টু কারামুক্তি আন্দোলন পালিত হয়। রাজপথে তারা সরকারবিরোধী কোন কর্মকা- পালনের চেয়ে নিজ নিজ দলের নেতাকর্মীদের কুশপুতুল দাহ করা নিয়ে ব্যস্ত। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় কর্মসূচী নামে মাত্র পালন করছে। জেলায় জাতীয় পার্টি (এরশাদ) সমর্থিতদের গুটিকয়েক নেতা থাকলেও কর্মীশূন্য দলে পরিণত হয়েছে। এছাড়া জেলায় জামায়াতে ইসলামের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। অপরদিকে কাদের সিদ্দিকীর দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কার্যক্রম চলে মূলত দুই-একটি আসনে। এরই মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা উন্নয়নমূলক কাজ, জনসভা, পথসভা, র‌্যালিসহ বিভিন্ন কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করছেন। শুধু নির্বাচনী প্রচার নয়, জনসাধারণের সুখ-দুঃখের অংশীদারিত্বের প্রমাণ দিতে তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা ও তরুণ কর্মীদের কাছে টানছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ এলাকায় নির্বাচনী আমেজ তৈরি করেছে। তারা নানা কৌশলে নিজেদের অবস্থান জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতে চেষ্টা করছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে অনেকেই কেন্দ্রে জোর লবিং করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, চা-স্টলগুলোতে রঙিন পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে নিজের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। এছাড়া হোটেল-রেস্তরাঁ, হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় সংসদ নির্বাচনের প্রচার এখন সর্বত্র। এদিকে জেলার আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশায় স্ব-উদ্যোগে ছোটখাট উন্নয়নমূলক কাজ, জনসভা, পথসভা ও উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যেই প্রতিটি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকদের দ্বারে দ্বারে জোর লবিংও চালিয়ে যাচ্ছেন। টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) ॥ আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর অন্যতম সদস্য, সংসদের অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, সাবেক খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এ আসনের এমপি। তিনি পরপর তিনবার ধরে এ আসনের প্রতিনিধিত্ব করছেন। দুই উপজেলাতেই তার শক্ত অবস্থানের কারণে তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। বিগত নির্বাচনগুলোতে তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। এছাড়াও মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলার আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী তার প্রতি আস্থাশীল। আগামী সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন এটা প্রায় নিশ্চিত। তিনি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। অপরদিকে বিএনপি থেকে বারবার পরাজিত প্রার্থী ফকির আহবুব আনাম স্বপন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদা জিয়ার আইনজীবি এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, মধুপুর উপজেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌরসভার মেয়র সরকার সহিদুল ইসলাম সরকার সহিদ এবার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) ॥ এই আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব খন্দকার আসাদুজ্জামান। বর্তমানে এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান বয়সের ভারে ন্যুব্জ। দীর্ঘদিন ধরে অসুুুস্থ থাকায় নির্বাচনী এলাকায় অনুপস্থিত। তার অবর্তমানে এই আসনে মনোনয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনি ও বর্তমান এমপির ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল। অন্যদিকে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি আব্দুস ছালাম পিন্টু জেলহাজতে থাকায় আইনী জটিলতায় তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারলে তার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এ আসনে প্রার্থী হবেন বলে দলীয় ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে। টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) ॥ এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। নেতৃত্ব সঙ্কটে পড়েছে আওয়ামী লীগ। ঘাটাইলে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের কোন কমিটি নেই। আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে কার্যক্রম চলছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দিশেহারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বর্তমান এমপি আমানুর রহমান খান রানা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি হয়ে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে হাজতবাস করছেন। এ অবস্থায় আগামী নির্বাচনে তার মনোনয়ন পাওয়া প্রায় অনিশ্চিত। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম লেবু ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তুহিন আব্দুল্লাহ। এদিকে ঘাটাইলে বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত ও শক্তিশালী। দলের অভ্যন্তরে নেতৃত্বের কোন্দল থাকলেও উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের সকল নেতাকর্মী বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদের প্রতি সবাই আস্থাশীল। তবে তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে এবার প্রার্থী হবেন জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মাইনুল ইসলাম। টাঙ্গাইল-৪ আসন (কালিহাতী) ॥ এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় নেতারা কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত রয়েছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দল না মিটিয়ে বরং একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে চলেছেন। এ আসনের বর্তমান এমপি হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী। তিনি এলাকায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। এদিকে বিএনপিতেও রয়েছে অস্বস্তি। উপজেলা বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমান মতিন নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এলাকা ছেড়েছেন। কদাচিত এলাকায় আসলেও দলীয় কর্মকা-ে তেমন তৎপরতা নেই। এ কারণে প্রার্থী সঙ্কটে ভুগছে বিএনপি। টাঙ্গাইল-৫ আসন (সদর) ॥ আসনে বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছানোয়ার হোসেন মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন। নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- করে চলেছেন। গণসংযোগ করছেন প্রতিনিয়ত। বিগত তিনটি নির্বাচনে পরাজিত হয়েও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী মাঠে রয়েছেন। তিনি এ আসনে শক্ত একজন প্রার্থী। নির্বাচনী এলাকায় সভা সমাবেশ ও উঠান বৈঠক করছেন। সাধারণ জনগণের মাঝে রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এদিকে জেলা বিএনপির নতুন কমিটির পর বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য ও সাংগঠনিক ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ নেতাকর্মীরাও হয়ে পড়েছে দ্বিধাবিভক্ত। বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত মেজর জেনারেল (অব) মাহমুদুল হাসান, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট খন্দকার আহমান হাবিব। অপরদিকে মহাজোটে থেকেও টাঙ্গাইলে সাংগঠনিক কোন ভিত্তি নেই জাতীয় পার্টির। ইতিপূর্বে নির্বাচনী কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ এই আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছিল। এবার দলের মনোনয়ন চাইছেন জেলা জাতীয় পার্টির নব্য সভাপতি পীরজাদা শফীউল্লাহ আল মুনীর ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক। টাঙ্গাইল-৬ আসন (নাগরপুর-দেলদুয়ার) ॥ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি খন্দকার আব্দুল বাতেনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। নেতাকর্মীদের অভিযোগ খন্দকার আব্দুল বাতেন এমপি হওয়ার পর থেকেই দলীয় নেতকর্মীদের বঞ্চিত করেছেন। দূরে ঠেলে দিয়েছেন ত্যাগী নেতাদের। সুবিধা দিয়েছেন দলের বাইরের তার আস্থাভাজন ও জাসদের লোকদের। এ কারণে তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দলীয় অনেক নেতাকর্মী। এবারও তিনি প্রার্থী হবেন। এদিকে দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও নিবেদিত বহু নেতাকর্মীরা বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আহ্সানুল ইসলাম টিটুর পক্ষে কাজ করছেন। নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তৃণমূল পর্যায়ে আহ্সানুল ইসলাম টিটুর রয়েছে শক্ত অবস্থান। মনোনয়ন পেলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া টিটুর পক্ষে সহজ হবে বলে মনে করেন সমর্থিতরা। অপরদিকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই দেলদুয়ার ও নাগরপুরে সভা সমাবেশ করছেন। তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন। ইতোমধ্যে তিনি ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়াও ফেলেছেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগের কোন্দল ও দলীয় নেতাদের রেষারেষির সুযোগ নিতে চায় বিএনপি। হারানো আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি। সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন। এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। টাঙ্গাইল-৭ আসন (মির্জাপুর) ॥ আসনে আওয়ামী লীগে রয়েছেন একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট দৌড়ঝাঁপ করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এবার এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বর্তমান এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মির্জাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুর রহমান খান ফারুকের ছেলে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ। এছাড়া মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ত্যাগী নেতা মীর শরীফ মাহমুদ নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এগিয়ে আছেন কেন্দ্রীয় কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। টাঙ্গাইল-৮ আসন (সখীপুর-বাসাইল) ॥ আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কোন রাজনৈতিক দলই এককভাবে টানা দীর্ঘদিন বিজয়ের সফলতা ধরে রাখতে পারেননি। আসনটি মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার হিসেবে খ্যাত থাকলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পাশাপাশি ভিন্নভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী এ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই আসনটিতে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য যে কোন মূল্যে আসনটি ধরে রাখা। এদিকে বিএনপির পাশাপাশি এ আসনটি উদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এই আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের অনুপম শাহজাহান জয়। তিনি ২০১৪ সালে সালের ২৯ মার্চ উপ-নির্বাচনে তার বাবা প্রয়াত শওকত মোমেন শাহজাহানের আসনে বিজয়ী হন। এবারও তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদ পাবেন বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। এছাড়া টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম ভিপি জোয়াহের এই আসনে মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও সখীপুর বোয়ালী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ মনোনয়ন পাওয়ার আশায় কাজ করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপি গৃহদাহে জ্বলছে দলীয় কোন্দল। সাংগঠনিকভাবেও দলটি বেশ দুর্বল। বিএনপির চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান এ আসন থেকে একাধিকবার হারলেও এবারও নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সখীপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি শেখ মোহাম্মদ হাবিব মনোনয়ন চাইবেন। জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব কাজী আশরাফ সিদ্দিকী ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবসংহতির সহসভাপতি রেজাউল করিম মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
×