ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে গণহারে মামলা ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৭ অক্টোবর ২০১৮

বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে গণহারে মামলা ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাইরে রাখতে গণহারে মামলা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন ২০০৯ সাল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ৯০ হাজার মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৫ লাখ। ফখরুল বলেন, বিএনপি যেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেজন্য সরকার সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নামে যেসব মামলা দেয়া হয়েছে তা দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে তাদেরকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যায়। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, তিনি বলছেন সুষ্ঠু ভোট হবে। কি চমৎকার তাদের গণতন্ত্রের নমুনা। ফখরুল বলেন, বিএনপির দেয়া ৭ দফা দাবি মেনে নেয়াই হলো নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা। তাই নির্বাচনের আগে আমাদের কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তিসহ আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিলেই কেবলমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা হয়েছে ৪ হাজার ১৪৯টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৯৬৯ জ কে। এর মধ্যে মামলার এজাহারে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৯২ জনকে। আর অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৭ জনকে। আর এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮৪ জনকে। ফখরুল বলেন, গায়েবি মামলাগুলো হাস্যকর। সরকারের একবারও বোধোদয় হচ্ছে না যে, এটা করে তারা সবাইকে বিপদে ফেলছেন। এই কাজগুলোর সঙ্গে যারা জড়িত, যারা এই মামলাগুলো করছেন, ভবিষ্যতে যদি এটাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করা যায়, তারা সবাই বিপদে পড়বেন। ফখরুল বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। নির্বাচনের পরিবেশ বর্তমান সরকারকেই তৈরি করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি দলের সকল নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সুষ্ঠু নর্বাচনের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। তা না করে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার কৌশল শুধু বিরোধী দলগুলোর জন্যই নয়, সমগ্র জাতির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবার আগের নাটক শুরু হয়ে গেছে। এই আলামত কিসের? কোন দিকে কোন উদ্দেশ্যে জাতিকে নিয়ে যেতে চায়, এটা আমাদের কাছে বড় আশঙ্কা ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এভাবে নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায় সরকার। কিন্তু সরকারের এ উদ্দেশ্য সফল হবে না। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, গায়েবি মামলার বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করব। আইনশৃংলা বাহিনীর প্রধান বা যারা এই মামলা দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না এ বিষয়ে আমরা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করব। একটা মামলাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে নিয়ে, যেমন হাতির ঝিল মামলাকে নিয়ে আমরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন করার চিন্তা করছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
×