স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে জড়িয়ে ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক গুজব রটানোর অভিযোগে দুই শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তারা হলো- খালিদ বিন আহম্মেদ (৩০) ও মোঃ হিজবুল্লাহ (২১)। সিনহা ছাড়াও রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও রাজনীতিকের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন ইস্যুতে অপপ্রচার চালিয়ে দেশে বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছে এই দু’জন। র্যাব জানিয়েছে, গত দু’বছর ধরেই তারা সরকারবিরোধী নানা ধরনের মিথ্যাচার, গুজব ও অপপ্রচারে জড়িত। এ চক্রের মূল হোতাদের ধরার চেষ্টা চলছে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর করওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-১ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম। তিনি জানান, ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এই খালিদকে শুক্রবার রাতে রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে আটক করে র্যাব-১। পরে তার স্বীকারোক্তিতে অপরজনকে ধরা হয়। খালিদ বিন আহম্মেদ চাঁদপুরের স্থানীয় কলেজে বিবিএ-তে ভর্তি হয় ২০১৪ সালে। ২০১৬ সালে ছোটভাই গোলাম মাওলা নাহিদের মাধ্যমে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খোলে নাম দেয় এসকে টিভি। এই চ্যানেলে তখন থেকে রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করতে থাকে। খালিদ ২০০৪ সালে রাজধানীর বাড্ডা আলাতুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৬ সালে হাজীগঞ্জ দেশগাঁও ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। এরপর ২০১৪ সালে হাজীগঞ্জ আইডিয়াল কলেজ অব এডুকেশনে বিবিএতে ভর্তি হয়। তার বাবা নূর আহম্মেদ জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
অপর ধৃত হিজবুল্লাহ ২০১৩ সালে হাজীগঞ্জ থেকে এসএসসি ও ২০১৫ সালে এইচএসসি পাস করে। বর্তমানে সে মহাখালীর বেসরকারী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। খালিদের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে গত দেড় বছর ধরে সেও এসকে টিভিতে ভিডিও আপলোড করে আসছিল।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, এসকে টিভির এ্যাডমিন খালিদ বিভিন্ন ভিডিওতে ভয়েস দিত এবং হিজবুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিতর্কিত বিভিন্ন ছবি সংগ্রহ করে এডিট করে আপলোড করত। তারা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর ও ভিডিও সংগ্রহ করে ইচ্ছেমতো তথ্য সংযোজন করে ভিডিও আকারে প্রকাশ করে আসছিল ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্প্রতি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে এসকে টিভির চ্যানেলে বিতর্কিত ভিডিও আপলোড করা হয়। এ ছাড়া কোটা ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনেও এ দু’জন মনগড়া বক্তব্য সংবলিত ভিডিও প্রকাশ করা হয় এই টিভিতে। অনেক সময় বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজটা আসল নিলেও তার মধ্যে ভয়েসটা থাকত তাদের মনগড়া। এ ধরনের মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিয়ে তারা উস্কানি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছে। এসকে টিভিতে বিপুল সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, চ্যানেলটিতে রাষ্ট্রবিরোধী বিরূপ সমালোচনা, গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানহানিকর গুজব প্রচার করে দেশে-বিদেশে হেয় করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। অনলাইনে এসব কার্যক্রম প্রতিনিয়তই মনিটরিং করা হচ্ছে, ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম কেউ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১ সিও বলেন, আপাতত এই চ্যানেলের সঙ্গে দুইজনই জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আরও কেউ জড়িত কি-না কিংবা কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এসকে টিভি পরিচালিত হতো কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে। একই সঙ্গে আরও যদি কোন টিভি এ ধরনের লিপ্ত থাকে তাদেরকেও শনাক্ত করা হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: