ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পূজায় কেনাকাটা

প্রকাশিত: ০৭:২৯, ৫ অক্টোবর ২০১৮

পূজায় কেনাকাটা

প্যান্ডেলের মধ্যমণি হওয়ার ইচ্ছাটা কিন্তু সবারই থাকে। আর এ বছরও তা বাদ যাবে না। এ বছরের পূজার নতুন ফ্যাশন কি? কি এসেছে বাজারে নতুন? তাহলে জেনে নেয়া যাক। আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা। প্রকৃতি প্রস্তুত শারদ উৎসবকে স্বাগত জানাতে। আর কদিন পরেই বাঙালী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মেতে উঠবে পূজা উদযাপনে। প্রকৃতির মতো উচ্ছল এখন সবাই ব্যস্ত পূজা উৎসবের রঙে রং মেলাতে। শরতকালে প্রকৃতির এই অপরূপ মোহনীয় রূপের সঙ্গে বাতাসে এখন ভেসে বেড়াচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ। কেমন হবে দুর্গোৎসবের সাজপোশাক? হিন্দী সিরিয়াল ও সিনেমা দেখে কেউ কেউ ভারতীয় পোশাকের দিকে ঝুকলেও অনেকের পছন্দ দেশীয় পোশাক। আর তাই বিদেশী পোশাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজস্ব স্বকীয়তায় পূজার বাজারে স্থান করে নিয়েছে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো। দেশীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে বিদেশী ধারা মিশিয়ে ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে নান্দনিক ডিজাইনের পোশাকে সেজেছে ছোট বড় সব বুটিক হাউসগুলো। ক্রেতারা বলছেন, হিন্দী সিনেমা দেখে কেউ কেউ ভারতীয় পোশাকের দিকে ঝুকলেও পরতে আরামদায়ক ও মান ভাল হওয়ায় উৎসবে দেশীয় পোশাকই পছন্দ। সে লক্ষ্যে হাউসগুলো আগের চেয়ে বর্তমানে পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেক রুচিশীল বিভিন্ন উৎসবের পোশাক তৈরি করছে। তবে দাম কমালে পোশাকের কদর বাড়ত বলে জানান ক্রেতারা। এবারের শারদীয় আয়োজনে ফ্যাশন হাউসগুলো নকশার অনুষঙ্গ হয়েছে দুর্গাপূজার নানা উপকরণ- পদ্ম, আলপনা, মন্দির ও রকমারি ফ্লোরাল মোটিফ। শারদ সংগ্রহে রয়েছে সকল বয়সের সবার জন্য বিভিন্ন ধরনের অনন্য ডিজাইনের পোশাক- শাড়ি, থ্রিপিস, কামিজ, ওড়না, আনস্ট্রিচ ড্রেস, পাঞ্জাবি, পায়জামা, টি-শার্ট, শার্ট, ফতুয়া, ব্লাউস পিস ইত্যাদি। ম্যাচিং পোশাকের বিশাল আয়োজন রয়েছে যুগলদের জন্য, পুরো পরিবারের জন্য। ম-পে ম-পে লালপেড়ে গরদের শাড়ি আর সাদা ধুতি-পাঞ্জাবিই আবহমান বাংলার দুর্গাপূজার পোশাকের বৈশিষ্ট্য। অনেক কিছুর মতোই পুজার ফ্যাশনকেও প্রভাবিত করেছে সময়। ফলে মাত্র দশক তিনেক আগেও যে ধুতি ছিল ওতপ্রোত, সেই ধুতির জায়গা নিয়েছে পায়জামা বা আরও এগিয়ে বললে জিন্স। অন্যদিকে শাড়ির জায়গায় অনেকদিন আগেই প্রবেশাধিকার পেয়েছে সালোয়ার-কামিজ। উৎসবের রঙে নিজেকে সাজাতে পূজার বর্ণিল কালেকশন এনেছে অঞ্জন’স। সিল্ক বা সুতি ফেব্রিকে থাকছে ব্লকপ্রিন্ট, এ্যাম্ব্রয়ডারির প্রাধান্য। পূজার প্রতিমাকে ডিজাইন মোটিফের অনুপ্রেরণা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। প্যাটার্ন বৈচিত্র্য থাকছে গতানুগতিক তারুণ্যনির্ভর। শাড়ির আঁচল, কামিজ বা কুর্তার নেক লাইন ও পাঞ্জাবির ক্যানভাসেও থাকছে স্বতন্ত্রতা। আন্তর্জাতিক ফ্যাশনের একটু ছোঁয়াও রয়েছে ফ্যাশন ডিজাইনারদের। ঘের দেয়া প্লাজো এবারেও বেশ রয়েছে। এছাড়াও কামিজ তার সঙ্গে লম্বা কোটি, সঙ্গে রয়েছে ফুল স্কাট। জিন্স ও কেনা হচ্ছে সঙ্গে জর্জেট বা শিফনের শাড়ি, শাড়ির সঙ্গে কেইপ থাকছে, এছাড়াও কামিজ তার সঙ্গে শাড়ি বা হাতকাটা ফুলেল ছাঁটের কামিজ এবারে ফ্যাশনে রয়েছে। এ বছর ফেব্রিক ড্রেসের সঙ্গে ওভার কোর্ট বেশ ভাল মানাচ্ছে। পূজার আয়োজনে পাঞ্জাবিতে ফুটে উঠেছে আভিজাত্যের ছোঁয়া। এবার পাঞ্জাবিতে এ্যাম্ব্রয়ডারি, এপলিক, হাতের কাজ প্রাধান্য পেয়েছে। আর নকশায় জমকালো ধাঁচ ফুটে উঠেছে। পাঞ্জাবির কাটিংয়ে ঝুল হাঁটু পর্যন্ত দেখা গেছে। পাশাপাশি পূর্বের কাটিংও রয়েছে। কাপড় হিসেবে চোখে পড়ছে সিল্ক, খাদি, এ্যান্ডি, সুতি, ভিসকোস প্রভৃতি। পাশাপাশি কাতান পাঞ্জাবির চল রয়েছে। সাদা পাশাপাশি নীল, ম্যাজেন্টা, সবুজ, গোলাপিসহ বিভিন্ন উজ্জ্বল রংই এবার ফ্যাশন। কোন কোন পাঞ্জাবিতে দেখা যাবে মন্দিরের দরজা, কোনটিতে পোড়ামাটির নকশা করা পিলার আবার কোনটিতে মন্দিরের নান্দনিক নকশার প্রতিচ্ছবি। লাল, সাদা, হলুদ, কমলাসহ বিভিন্ন কালারফুল পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবির নকশায় স্ক্রিনপ্রিন্টের কাজ বেশি হলেও এ্যাম্ব্রয়ডারি ও অন্যান্য নকশাও করা হয়েছে। গরমের কথা চিন্তা করে সুতি, এন্ডি আর তাঁতের কাপড়ের পাঞ্জাবিগুলো তৈরি করেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। হিন্দু ধর্মের নানা ফর্মসহ ফ্লোরাল মোটিফে করা হয়েছে তাদের পাঞ্জাবিগুলো।জিওমেট্রিক ফর্ম নিয়ে ও বেশি কাজ করেছে তারুণ্যের ব্র্যান্ডশপগুলো কাটিং আর প্যাটার্ন নিয়েও করা হয়েছে নানারকম পরীক্ষা। তাছাড়া মেয়ে শিশুদের জন্য আছে ফ্রক, থ্রি-পিস, শাড়ি, সিঙ্গেল কামিজ, স্কার্ট-টপস ইত্যাদি। ছেলে শিশুদের জন্য আছে ধুতি-কুর্তি, শার্ট, টি-শার্ট ইত্যাদি। আমাদের ফ্যাশন হাউসগুলো নান্দনিক ডিজাইনের পূজার পোশাক দিয়ে সাজিয়েছে তাদের আউটলেট। আপনি পূজার দিনের জন্য পছন্দের পোশাক কিনতে যেতে পারেন কুমিদিনী হ্যান্ডিক্রাফ্টস, ইয়েলো, গ্রামীণ ইউনিকলো, অঞ্জন’স, কে ক্র্যাফট, বিবিআনা, নগরদোলা, আড়ং, আর লুবনান, ইয়েলো, ক্যাটস আই বাংলারমেলাসহ ফ্রিল্যান্ডেও পাওয়া যাচ্ছে পূজার সাজ পোশাক। তাছাড়া গাউছিয়া, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, বনানীর ১১ নম্বর রোড ছাড়াও গুলশানও উত্তরার বিভিন্ন মার্কেটে খুঁজে পাবেন। তাহলে কি ভাবছেন? দোকানে ভিড় হওয়ার আগেই শুরু করে দিন পূজোর শপিং। আর কিন্তু বেশি দেরি নেই।
×