ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পতনের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিওতে পরিবর্তন

প্রকাশিত: ০৭:২২, ২ অক্টোবর ২০১৮

পতনের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিওতে পরিবর্তন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দরপতনের বাজারে পোর্টফলিওতে পরিবর্তন এনেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। দুর্বল এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরি ছেড়ে তারা বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। যে কারণে এসব কোম্পানির দৌরাত্ম্য আগের চেয়ে অনেক কমেছে। পক্ষান্তরে বেড়েছে মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা। যার জের ধরে এ ধরনের কোম্পানির লেনদেনও বেড়েছে। গত দুই মাসে এসব কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন প্রায় পাঁচ শতাংশ। ডিএসই থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। তথ্যমতে, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ৯০ শতাংশ রয়েছে মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির দখলে। দুমাস আগে যার পরিমাণ ছিল ৮৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অথাৎ এই সময়ের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে প্রায় পাঁচ শতাংশ। এদিকে বর্তমানে লেনদেনে ‘বি’ ক্যাটাগরির অবদান হচ্ছে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর ৪ দশমিক ১ শতাংশ অবদান রয়েছে নতুন বা ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির। বাকি ১ দশামক ১৫ শতাংশ অবদান রয়েছে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির। জানা গেছে, মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির লেনদেন বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ ‘এন’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হ্রাস পাওয়া। এছাড়া কমেছে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা দুর্বল শেয়ার ছেড়ে মৌলভিত্তি সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, পুঁজিবাজারে কিছু বিনিয়োগকারীরা দ্রুত মুনাফা ঘরে তুলতে চান। এ কারণে অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোম্পানিতে ঝুঁকে পড়েন। কারণ বাজারে এসব কোম্পানিতে বেশি কারসাজি হয়। কিন্তু যারা ঝুঁকি নিতে চাননা তারা ভাল কোম্পানির সঙ্গে থাকেন। বিশেষ করে বাজারে যখন দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দর কমতে থাকে তখন তখন বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফলিওতে পরিবর্তন আসনে চান। এটা বিনিয়োগকারীদের ভাল সিদ্ধান্ত। বর্তমান বাজারে এমন সিদ্ধান্ত পরিলক্ষিত হচ্ছে। যার ফলে ভালো কোম্পানির লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা পুঁজিবাজারের জন্য শুভ লক্ষণ। তারা বলেন এ কথা ঠিক যে, কিছু কোম্পানিতে এখনও কারসাজি হচ্ছে। তবে সামগ্রিকভাবে এগিয়ে রয়েছে মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি। এ প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, বিনিয়োগকারীরা ভালো কোম্পানির সঙ্গে থাকলে তা বাজার ও বিনিয়োগকারী উভয়ের জন্যই ভাল। অধিক লাভের আশায় নামসর্বস্ব কোম্পানিতে বিনিয়োগ না করে তাদের উচিত ভালো কোম্পানিতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করা। কারণ এখানে খুব বেশি লাভ না হলেও লোকসান হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে। একই মডার্ন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুজিস্তা নূর-ই- নাহারীন বলেন, বিনিয়োগকারীদের উচিত সব সময়ই ভালো মানের কোম্পানির সঙ্গে থাকা। ভালো মানের কোম্পানিতে বিনিয়োগ থাকলে তারা সব সময়ই অপেক্ষাকৃত নিরাপদে থাকতে পারেন। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা গুজবে কান দিয়ে কিংবা অন্যের দেওয়া নিউজ নিয়ে দ্রুত লাভবান হওয়ার জন্য যে কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই এর ফল উল্টো হয়। এক সময় এসব শেয়ার নিয়ে তাদের পস্তাতে হয়। এদিকে বিনিয়োগকারীরা পোর্টফলিওতে পরিবর্তন আনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে বীমা ও আর্থিক খাতের শেয়ার। বর্তমানে উর্ধমুখী রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর।
×