ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

উইঘুরদের ওপর দমনাভিযানে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের

চীনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চীনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ হচ্ছে

চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর ‘নির্মম দমনাভিযানের’ খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। এই ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সংশ্লিষ্ট চীনা কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা ভাবনা করছে বলে জানা গেছে। গার্ডিয়ান। চীনের সংখ্যালঘু জাতিগত উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিমদের ব্যাপক সংখ্যায় বন্দী করা হয়েছে, এমন সংবাদ প্রকাশের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচনা হয়। ওয়াশিংটন বেজিংয়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে মার্কিন কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে। মানবাধিকার ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াটা হবে নজিরবিহীন। যুক্তরাষ্ট্র একদিকে চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধে লিপ্ত অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী ইস্যুতে তাদের সহযোগিতা আশা করে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, উইঘুর ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে আছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নুয়েট বলেন, কেবল উইঘুর নয় ওই অঞ্চলে বসবাসরত কাজাখ মুসলিমদের ওপর নির্মম দমনাভিযানের খবরে আমরা চিন্তিত। বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনেক মার্কিন কর্মকর্তাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নুয়ার্ট জানান, সংশ্লিষ্ট চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও আগস্টেই কংগ্রেসের উভয় দলের পক্ষ থেকে লেখা একটি চিঠি পেয়েছেন। ওই চিঠিতে তারা চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছিলেন। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে চীনা কমিউনিসট পার্টি প্রধান চেন কোয়াঙ্গোসহ পলিটবুরে‌্যার কয়েকজন সদস্য আছেন।’ চীনা কর্মকর্তারা ছাড়াও যেসব চীনা কোম্পানি বন্দী শিবির তৈরি করেছে, নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপন করেছে, উইঘুরদের অবস্থান জানা ও মনিটর করার সিস্টেম তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানান হয়। এদিকে ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের প্রধান ডলকুন ইসা সোমবার হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্ট নামে একটি গ্রুপ একটি ছবি টুইটারে প্রকাশ করেছে। ইসা ব্রাসেলস থেকে খবরটি নিশ্চিত করলেও হোয়াইট হাউসের কোন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার আলাপ হয়েছে সেটি তিনি প্রকাশ করেননি। বুধবার তার ইইউ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান মিশেল বাচেলেত উইঘুর পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সেখানে পর্যবেক্ষকদের যাওয়ার অনুমতি দিতে বেজিংয়েল প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জবাবে বেজিং মঙ্গলবার চীনের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বেজিং মনে করে, ইসলামপন্থী জঙ্গী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সেখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। এদিকে আফগানিস্তানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মার্কিন সেনাদের বিচারের চেষ্টা করলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন আইসিসিকে আখ্যায়িত করেছেন ‘অবৈধ’ একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সবকিছুই করবে। বিবিসি। আফগান যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর হাতে আটকদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তদন্ত করার একটি আবেদন আইসিসি এখন বিবেচনা করছে। রোম সংবিধি অনুযায়ী ২০০২ সালে নেদারল্যান্ডসের হেগে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এই আদালতে এখনও যোগ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। জন বোল্টন বরাবরই কড়া ভাষায় আইসিসির ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন। তবে সোমবার ওয়াশিংটনে রক্ষণশীল গ্রুপ ফেডারেলিস্ট সোসাইটির এক অনুষ্ঠানে এ আদালত নিয়ে যে বক্তব্য তিনি দিয়েছেন, সেখানে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর প্রথমটি গতবছর আইসিসির কৌঁসুলি ফাতোও বেনসুদার করা একটি আবেদন নিয়ে, যেখানে আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথাও সেখানে আছে। আর দ্বিতীয়টি হল- গাজায় ইসরাইলী সৈন্যদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অভিযোগের তদন্ত করতে ফিলিস্তিনীদের চেষ্টা।
×