ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাজিলে জাদুঘরে আগুন ॥ দায়ী ‘তহবিল ঘাটতি’

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ব্রাজিলে জাদুঘরে আগুন ॥ দায়ী ‘তহবিল ঘাটতি’

ব্রাজিলের ২০০ বছরের পুরনো ন্যাশনাল মিউজিয়াম পুড়ে যাওয়ার পেছনে অর্থের অভাবকেই দায়ী করেছেন সেখানকার কর্মকর্তারা। রবিবার রিও দে জেনেইরোর জাদুঘরটিতে লাগা আগুন আমেরিকা মহাদেশের নৃতত্ত্ব ও প্রাকৃতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সংগ্রহকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ওয়েবসাইট। এসব সংগ্রহের মধ্যে ‘লুজিয়া’ নামে পরিচিত ১২ হাজার বছরের পুরনো এক নারীর দেহাবশেষও আছে; এটিই লাতিন আমেরিকায় পাওয়া মানুষের সবচেয়ে প্রাচীন দেহাবশেষ। দুই শ’ বছরের পুরনো এই জাদুঘরের ‘বিপজ্জনক অবস্থা’ নিয়ে আগে থেকেই কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দেয়া হচ্ছিল; বিশেষজ্ঞরাও ভবনটিতে অগ্নিকা-ের ব্যাপারে কয়েক বছর ধরেই সতর্ক করে আসছিলেন। এরপরও সরকার প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়নি বলে অভিযোগ কর্মকর্তাদের। ‘আমরা পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাইনি,’ অগ্নিকা-ের পর বলেছেন ন্যাশনাল মিউজিয়ামের উপ-পরিচালক লুইজ ফার্নান্দো দিয়াস দুয়ার্তে। ‘ক্রুদ্ধ’ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এজন্য ব্রাজিলীয় কর্তৃপক্ষের ‘মনোযোগের ঘাটতিকে’ দায়ী করেছেন তিনি। ‘আজ যেসব অমূল্য সম্পদ ধ্বংস হলো, তা রক্ষায় কয়েক বছর ধরে, বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে লড়েছিলাম আমরা,’ তহবিল ঘাটতির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন এ কর্মকর্তা। সোমবার সকালে জাদুঘরের ফটকে বিক্ষুব্ধ লোকজন জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এসব আন্দোলনকারীও আগুনের জন্য সরকারের বাজেট কাটছাঁটকেই দায়ী করেছেন। বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তেও দেখা গেছে। অগ্নিনির্বাপন সরঞ্জামসহ জাদুঘরটির আধুনিকায়নে সরকার ৫৩ লাখ ডলার দিতে জুনে রাজি হয়েছিল বলে গ্লোবো টিভিকে জানিয়েছেন দুয়ার্তে। অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ওই অর্থ দেয়ার কথা ছিল। তহবিল ঘাটতির তীব্র সমালোচনা করেছেন সামনের মাসের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া মারিনা সিলভাও। বাম ঘরানার এ রাজনীতিক টুইটারে বলেছেন, ‘রিও দে জেনেইরোর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গত তিন বছর ধরে আর্থিক সঙ্কটে রাখা হয়েছে। এই দুঃখজনক পরিণতি যে আসছেই, তা আগেই বোঝা উচিত ছিল।’ রবিবার রাতে জাদুঘর বন্ধ হওয়ার পর কোন এক সময় ওই ভবনে আগুন লাগে। এক সময় পর্তুগীজ রাজ পরিবারের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত ওই ভবনটির ২০০ বছর পূর্তি উদযাপন হয়েছিল চলতি বছরের শুরু দিকে। ব্রাজিলের সবচেয়ে পুরনো এই জাদুঘরে প্রতœসম্পদ থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক স্মারক মিলিয়ে প্রায় দুই কোটি নিদর্শন সংরক্ষিত ছিল। অগ্নিকা-ে কেউ হতাহত না হলেও বিশাল ওই সংগ্রহের বেশিরভাগই পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কী কারণে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
×