ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের বর্ণিল সমাপনী

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের বর্ণিল সমাপনী

মোঃ মামুন রশীদ ॥ এশিয়ান গেমসের মশাল জ্বলজ্বল করে জ্বলছিল জাকার্তার গেলোরা বাং কারনো স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। গত ১৬ দিন ধরেই ১৮তম আসরের এই মশালটি নেভানো হলো রবিবার সন্ধ্যায়। এরপর মশালটি হস্তান্তর করা হয় পরবর্তী এশিয়ান গেমস আয়োজক শহর হ্যাংঝুর প্রতিনিধির হাতে। অবশ্য এর আগেই ৪৫ দেশের প্রায় ১০ হাজার এ্যাথলেট ও কর্মকর্তাদের নিয়ে সমাপনী উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মতোই সমাপনীতে ছিল মূল আয়োজনের আগে বিভিন্ন কার্যক্রম। সমাপনী উৎসব শুরু হয় ব্যাপক আতশবাজি ও আলো ঝলমলে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। শেষ পর্যন্ত ১৮তম আসরের পর্দা নামলো শেষদিনে ট্রায়াথলন মিশ্র রিলে ইভেন্টের মাধ্যমে। এবারও ১৩২ স্বর্ণপদকসহ ২৮৯ পদক নিয়ে শীর্ষস্থানে থেকে শেষ করেছে চীন। জাপান হতে পেরেছে ৭৫ স্বর্ণপদকসহ ২০৫ পদক নিয়ে দ্বিতীয় আর স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়া চতুর্থ স্থান দখলে রেখে শেষ করেছে ৩১ স্বর্ণসহ ৯৮ পদক নিয়ে। ইন্দোনেশিয়ার দুটি শহর রাজধানী জাকার্তা ও সুমাত্রার বন্দর নগরী প্যালেমবাংয়ের মোট ১১ ভেন্যুতে গত ১৮ আগস্ট ‘ফিল দ্য এনার্জি ফর এশিয়া’ স্লোগান নিয়ে এবারের এশিয়ান গেমস শুরু হয়েছিল। গত ১৫ দিনে ৪৫ দেশ ৪০টি ক্রীড়ায় ৪৬৫ ইভেন্টে স্বর্ণের জন্য লড়াই করেছে। সবমিলিয়ে ১৫৫২টি পদকের লড়াই ছিল স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জসহ। এর মধ্যে একেবারেই কপর্দকহীন হয়ে এশিয়াড মঞ্চ ছেড়েছে ৭টি দেশ- বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, প্যালেস্টাইন, ইয়েমেন, ওমান ও পূর্ব তিমুর। বাকি ৩৮ দেশ এই পদকগুলো ভাগাভাগি করেছে পরস্পরের মধ্যে। সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল এ্যাথলেটদের প্যারেড। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যদিও দেশের পতাকাতলে তারা কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সমাপনীতে এ্যাথলেটরা ৪০টি ক্রীড়া অনুসারে সম্মিলিতভাবে অংশ নেন। বিভিন্ন সময়ে মঞ্চে উঠে গান পরিবেশন করেছেন ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত শিল্পীরা। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- সুপার জুনিয়র, বিসিএল, ইসাইয়ানা স্বরাসভাতি, আইকন, আরএএন, ডেনাডা, গিগি, দিরা সুগান্দি, উইঙ্কি ইরিয়াওয়ান, জেএফ লো, লিয়া সিমানজুনতাক, সিদ্ধার্থ স্লাথিয়া, সিতি বাদ্রিয়াহ, জেভিন জুলিয়ান, ব্যামস, আলফি রেভ, ইরফান স্যামসনস ও এডে গোবিন্দ। নাচ-গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল ইন্দোনেশিয়ার কৃষ্টি, সংস্কৃতির বিভিন্ন প্রদর্শনী, আতশবাজি এবং ডিজিটাল ডিসপ্লে। আতশবাজি দিয়ে শুরুর পর ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শুরু হয় সমাপনী অনুষ্ঠান। এরপর ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ একাডেমি ব্যান্ড মঞ্চে এসে দেশের নামের মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে তৈরি করে। এরপরই বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্ট অনুসারে এ্যাথলেটরা প্যারেডের জন্য স্টেডিয়ামে জমায়েত হন। এরপরই তিন মাস্কট- ভিনভিন, আতুং ও কাকা শেষবারের মতো আসে মঞ্চে। ইসাইয়ানা স্বরসভাতি এ্যাথলেটদের উৎসর্গ করে গান পরিবেশনের পর ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোজো উইডোডো মঞ্চে এসে দর্শক-সমর্থকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাল্লার ভাষণের পরই অলিম্পিক কাউন্সিল অব এশিয়ার প্রেসিডেন্ট শেখ আহমাদ আল ফাহাদ আল সাবাহ দুই শহর এবং ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে ধন্যবাদ জানিয়ে গেমস সমাপ্তি ঘোষণা করেন। মশাল নেভানো হয় এবং অলিম্পিক কাউন্সিল অব এশিয়ার পতাকা নামানো হয়। এরপরই মশালটি দেয়া হয় পরবর্তী আয়োজক চীনের শহর হ্যাংঝুর প্রতিনিধির হাতে।
×