ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেনেড হামলার পর ঘটনাস্থল দেখতে যাননি বাবর

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৯ আগস্ট ২০১৮

গ্রেনেড হামলার পর ঘটনাস্থল দেখতে যাননি বাবর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একুশে আগস্ট ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাননি তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের অফিস হওয়ার পরও গ্রেনেড হামলার ঘটনাস্থল একবারের জন্যও পরিদর্শনে যাননি তিনি। রাষ্ট্রপক্ষে চীফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান মঙ্গলবার আসামি লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক পেশের প্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। বাবরের পক্ষে সপ্তম দিনের মতো যুক্তিতর্ক পেশ করেছেন তার আইনজীবী নজরুল ইসলাম। তিনি যুক্তিতর্কে বলেন, তার মক্কেল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। আজ আবারও বাবরের পক্ষে আইনজীবী যুক্তিতর্ক পেশ করবেন। রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে একুশে আগস্টের ঘটনায় আনা পৃথক মামলায় একই সঙ্গে বিচার চলছে। এ মামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার ছিল এ মামলার আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক পেশ করার ১১২তম দিন। রাষ্ট্রপক্ষের চীফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান আসামিপক্ষের যুক্তির প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দাবি করেন যে, ‘আসামি বাবর ২১ আগস্ট ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রাষ্ট্রপক্ষ তা সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণ দিয়ে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।’ যুক্তিতর্কের সময় আদালত আসামি বাবরের আইনজীবীকে সাক্ষ্য ও জবানবন্দী থেকে প্রাসঙ্গিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে তাগিদ দিয়েছে। আসামি বাবরের আইনজীবী নজরুল ইসলাম আদালতে বলেন, বুধবার বাবরের পক্ষে যুক্তিতর্ক তিনি শেষ করবেন। তারপর বাবরের পক্ষে ল’পয়েন্টে পরবর্তী ধার্য তারিখে অন্য একজন আইনজীবী যুক্তি পেশ করবেন। রাষ্ট্রপক্ষে অপর আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, ২১ আগস্ট ভয়াবহ বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আনা পৃথক মামলার বিচার এখন একবারেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে চীফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান, বিশেষ পিপি মোঃ আবু আব্দুল্লাহ্ ভুঁইয়া, আকরাম উদ্দিন শ্যামল. এ্যাডভোকেট ফারহানা রেজা, এ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান, আশরাফ হোসেন তিতাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান জানান, ২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ায় তাদের মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ৩ আসামি হলেন- জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল। এখন ৪৯ আসামির বিচার চলছে। এর মধ্যে এখনও তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জন পলাতক। বাবর, সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন আসামি কারাগারে ও ৮ জন জামিনে রয়েছেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেয়। আসামিপক্ষ সাক্ষীদের জেরা করেছে। গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। বিচারের মুখোমুখি থাকা ৪৯ আসামির মধ্যে জামিনে রয়েছেন- বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মোঃ আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম। মামলার আসামি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সেনা কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন।
×