ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক ব্যক্তির কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না ॥ সুলতানা কামাল

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২৬ আগস্ট ২০১৮

  এক ব্যক্তির কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না ॥ সুলতানা কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না এক ব্যক্তির কারণে। তিনি বলেন, এমন একজন কেউ আছে, যে এখান থেকে নানাভাবে সুবিধা নেয়। এই ব্যক্তির জন্যই এই খাতে নানা দুর্নীতি কমানো ও সংস্কার করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং ব্লু প্লানেট ইনিশিয়েটিভের (বিটিআই) নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এছাড়াও এতে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এমএম আকাশ, বদরুল ইমাম বক্তব্য রাখেন। সুলতানা কামাল বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়। কিন্তু রাস্তার সচেতনতা বাড়াতে তেমন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। সেটার পেছনে নিশ্চয় কোন স্বার্থ আছে। তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। প্রাকৃতিক জ্বালানি দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অবশ্যই যেতে হবে। প্রয়োজন ’মাইন্ড সেট আপের’। বিশ্বের অনেক দেশ এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা খুব ধীরে ধীরে এগোচ্ছি। সুলতানা কামাল বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ঝুঁকি এবং দূষণ দু’ই কম। অথচ আমরা এই ক্ষেত্রে তেমন কিছুই করতে পারছি না। অনিয়ম, দুর্নীতি আর রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা এই খাতকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দিকগুলোর সম্ভাবনা খুঁজতে হবে। জনগণকে প্রাধান্য দিতে হবে। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ৪০ বছর আগে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ শুরু করলেও সন্তোষজনক জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। এই খাতে বিপ্লব প্রয়োজন। একজন বুদ্ধিমান লোক যদি কোন কথা ১০ মিনিটে বুঝতে পারেন তবে সেই কথাটি একটি জাতিকে বোঝাতে ৫০ বছর সময় লাগে। কেননা একটি জাতির মধ্যে নানা জাতের, নানা মতের মানুষ থাকে। তিনি বলেন, আমরা সমস্যায় জর্জরিত। কর্মহীন আর আদর্শহীন লক্ষ্য করা যায়। এখানে ভাল কাজ করা সহজ বিষয় নয়। খুব ভাল দিক নির্দেশক যদি পাওয়া যায় তবে এ থেকে উত্তরণ সম্ভব। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম বলেন, কয়লা, তেল, গ্যাস একদিন ফুরিয়ে যাবে। কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানি হারাবে না। অথচ আমাদের দেশের বাস্তবতা ভিন্ন, এখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে না। ২০২১ সাল নাগাদ জাতীয় গ্রিডে মোট ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত যোগ করবে সরকার। সেখানে ১০ ভাগ সোলার থেকে উৎপন্ন হবে। সরকারের এমন পরিকল্পনা থাকলেও সে অনুযায়ী কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে যে হারে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপন্ন হচ্ছে তাতে ২ ভাগও সম্ভব নয়। বর্তমানে ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত সৌর প্যানেল থেকে উৎপন্ন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, টেকনাফে কিছু দিনের মধ্যে আরও ২৮ মেগাওয়াটের একটি প্লান্ট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এই হলো বাস্তব অবস্থা। অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে না গিয়ে কারও কারও স্বার্থ রক্ষার জন্য গ্যাস ও কয়লায় জোর দিচ্ছে। অথচ আমরা গ্যাস দিয়ে বিদ্যুত উৎপাদনের পক্ষে নই। এছাড়া কয়লার ব্যবহারও যতটা সম্ভব কমাতে হবে। আর রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রতো কোনভাবেই করা সমীচীন হবে না।
×