ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্লিনিকে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু ॥ পালিয়েছে ডাক্তারসহ কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৯ আগস্ট ২০১৮

 ক্লিনিকে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু ॥  পালিয়েছে ডাক্তারসহ কর্তৃপক্ষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১৮ আগস্ট ॥ টাঙ্গাইলে ফাতেমা মডার্ন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বরত সকল চিকিৎসক, সেবিকা, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। শুক্রবার রাতে অপারেশনের সময় ওই নারীর মৃত্যু হয়। জানা গেছে, টাঙ্গাইল পৌর শহরের সবুজবাগ বেড়াবুচনা এলাকার জনি সিদ্দিকীর স্ত্রী স্বর্না আক্তার পেটে ব্যথা নিয়ে শহরের মেইন রোডে অবস্থিত ফাতেমা মডার্ন হাসপাতালে গাইনী ডাক্তার সুফিয়া বেগমের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গৃহবধূকে বলেন, আপনার জরায়ুর বাইরে টিউবে দেড় মাসের সন্তান আছে। অপারেশন করে ফেলতে হবে। তা না হলে আপনার খুবই অসুবিধা হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শুক্রবার বিকেল ৫টায় স্বর্না সেখানে ভর্তি হন। পরে রাতে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। স্বর্না আক্তারের মামাতো বোন কুলসুম বেগম বলেন, স্বর্না সরকারী এম.এ আলী কলেজের অর্নাস তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার পর ভেতর থেকে আর বের না করলে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে দেখি বাইরে বের করে একটি রুমে নিয়ে যাচ্ছে। স্বর্নার দুই ঠোঁট বন্ধ। আমি নাকে হাত দিলে নিশ্বাস বন্ধ পাই। আমি কান্না শুরু করলে হাসপাতালের সবাই আমাদের ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনদের কান্নায় পুরো হাসপাতাল ভারি হয়ে ওঠে। এ সময় স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে ভিড় করেন। হাসপাতালের যুথি পারভীন নামের এক সেবিকা জানান, শুনেছি টিউবে বাচ্চা ধরেছে। এ কারণে অপারেশন করেছে ডাক্তার সুফিয়া বেগম। কিন্তু রোগীর এ্যানেসথেসিয়া (অবস) কে করেছে তিনি তা বলতে পারেন নি। অপারেশনের আগে ‘ও’ গ্রুপ ম্যাচিং রক্তের প্রয়োজন হয়। তার কোন ব্যবস্থা ছিল না। নিহত স্বর্না আক্তারের পিতা শাহানুর মিয়া বলেন, ডাক্তার সুফিয়া আক্তারের ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ডাক্তারের উপযুক্ত বিচার চান। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাক্তার সৈয়দ ইবনে সাইদ বলেন, এ ধরনের অপারেশন করতে গেলে আগেই প্রস্তুতি নিতে হয়। যেমন প্রচুর রক্তপাত হতে পারে। ৮/১০ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হতে পারে। এ ধরনের রোগী সাধারণত রক্তক্ষরণের কারণেই মৃত্যু ঘটে। তবে এক্ষেত্রে কি হয়েছিল তা তদন্ত করলেই জানা যাবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি শিবলী সাদিক বলেন, এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×