ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের একটি বিদ্যালয়ে এক শিক্ষকেই পাঠদান

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ২৯ জুলাই ২০১৮

টাঙ্গাইলের একটি বিদ্যালয়ে এক শিক্ষকেই পাঠদান

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৮ জুলাই ॥ বাসাইল উপজেলার রাশড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক দিয়েই চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়ের শিশু থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ৬টি ক্লাস একজন শিক্ষককেই সামলাতে হচ্ছে। একটি ক্লাসে শিক্ষক গেলে অন্য ক্লাসগুলো ফাঁকা থাকে। এ কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বিঘিœত হচ্ছে। ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে একজন শিক্ষকেই পাঠদান দিতে দেখা যায়। জানা যায়, বিগত ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। পাঁচজন শিক্ষকের পদ থাকলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২ শিক্ষক দিয়েই জোড়াতালির মাধ্যমে চলছে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। প্রথম অধিবেশনে শিশু থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ৩টি ক্লাস নেয়া হয়। দুজন শিক্ষক দুটি ক্লাসে গেলে একটি ক্লাস ফাঁকা থাকে। একইভাবে দ্বিতীয় অধিবেশনে তৃতীয় থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত তিনটি ক্লাস চলে। প্রতি সময় একটি করে ক্লাস শিক্ষকবিহীন থাকে। গত শনিবার থেকে এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমান প্রশিক্ষণে রয়েছেন। আর কারণে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিনকে দিয়েই। এ দুজন শিক্ষকের মধ্যে নাজিম উদ্দিন গত ২০১৭ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে কর্মরত। ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঊর্মি আক্তার, ইভা আক্তার, বৃষ্টি আক্তারসহ শিক্ষার্থীরা জানায়, দ্বিতীয় অধিবেশনে তৃতীয় থেকে ৫ম শ্রেণীর তিনটি ক্লাস দুজন শিক্ষককেই নিতে হয়। অনেক সময় স্যার আমাদের পড়া দিয়ে আবার অন্য ক্লাসে চলে যায়। এজন্য স্যার আমাদের পড়া ভালভাবে আদায় করার আগেই ক্লাসের সময় চলে যায়। সামনে আমাদের সমাপনী পরীক্ষা, প্রস্তুতিও নেই তেমনটা। স্যার কম থাকায় অনেকে অন্য বিদ্যালয়ে চলেও গেছে। শিক্ষক ঘাটতি থাকায় তাদের পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে বলেও তারা জানায়। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাজিম উদ্দিন বলেন, গত ২০১৪ সাল থেকে দুজন শিক্ষককেই শিশু থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাসগুলো নিতে হচ্ছে। ক্লাস চলাকালে একটি করে ক্লাস ফাঁকা থাকে। এজন্য একটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পড়া দিয়ে আরেকটি ক্লাসে একজন শিক্ষককে যেতে হচ্ছে। অনেক সময় অফিসিয়াল কাজে শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। সেই সময় একজন শিক্ষককেই সকল ক্লাস একাই সামলাতে হয়। বিদ্যালয়ে প্রধানসহ আরও ৪ শিক্ষকের পদ রয়েছে। বারবার আবেদনের পরও শূন্য পদগুলো পূরণ করা হচ্ছে না। শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সঙ্কট থাকলেও শিক্ষা অফিস কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। শিক্ষক সঙ্কটের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের উপজেলা সদরে নিয়েও পড়ালেখা করাচ্ছেন। এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকলিমা চৌধুরী বলেন, শিক্ষক সঙ্কটের বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই শিক্ষক পেয়ে যাব।
×