ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যান্টনমেন্ট আইনসহ দুটি বিল পাস

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ৫ জুলাই ২০১৮

ক্যান্টনমেন্ট  আইনসহ দুটি বিল পাস

সংসদ রিপোর্টার ॥ জাতীয় সংসদে ‘ক্যান্টনমেন্ট আইন-২০১৮’ নামে একটি বিলসহ মোট দুটি বিল পাস হয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সংসদীয় কমিটির সুপারিশকৃত আকারে বিলটি দুটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিল দুটির ওপর বিরোধী দলের দেয়া জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। সংসদে পাস হওয়া অপর বিলটি হচ্ছে আবহাওয়া বিল, ২০১৮। গত বছরের ১৪ নবেম্বর ১৯২৪ সালের তৈরি ক্যান্টনমেন্ট আইনটি যুগোপযোগী করতে সেনানিবাস আইন নামে একটি বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে তা যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটি বেশ কয়েকটি বৈঠক করে বিলটিতে ব্যাপক সংযোজন ও বিয়োজন করে। বিশেষ করে বিলের নাম পরিবর্তন করে সেনানিবাস বিলের পরিবর্তে রাখা হয় ক্যান্টনমেন্ট আইন-২০১৮। কমিটির সুপারিশসহ বিলটি পাস হয়েছে। বিলে সংসদীয় কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রত্যেক ক্যান্টনমেন্টের জন্য একটি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড গঠন করতে পারবে। প্রত্যেক ক্যান্টনমেন্টে বোর্ডের জন্য একজন এক্সিকিউটিভ অফিসার থাকবেন। সরকার আবশ্যক মনে করলে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন নৌ ঘাঁটি বা বিমান ঘাঁটির জন্য বোর্ড গঠন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলি, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাপেক্ষে উক্তরুপ বোর্ডের জন্যও প্রযোজ্য হবে। বিলের ১৯ দফার পরিমার্জন করে বলা হয়েছে, কোন ক্যান্টনমেন্ট বা অধিকাংশ অংশ কোন সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার নির্ধারিত এলাকার মধ্যে অবস্থিত হলে বা কোন ক্যান্টনমেন্ট যে সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার নিকটতম ওই ক্যান্টনমেন্টের বোর্ড উক্ত সিটি কর্পোরেশনের অনুরুপ যথাক্রমে একটি সিটি কর্পোরেশন বা একটি পৌরসভা হিসেবে গণ্য হবে। সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার অধীন এলাকায় নাগরিকগণকে যেরুপ পৌর সুবিধা দেয়া হয় বোর্ড যতদূর সম্ভব সেরুপ সুবিধাদি ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দাদের দেবে। পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার প্রসঙ্গে বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের বিধানাবলি লঙ্ঘন করে কোন অপরাধ সংঘটিত করার কারণে ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত পুলিশ বাহিনীর কোন সদস্য বিনা পরোয়ানায় কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবে না। বিলে আরও বলা হয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে অসামরিক পুলিশ কর্তৃক কোন ব্যক্তিকে কোন অভিযোগে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্টেশন কমান্ডারকে অবহিত করতে হবে। বিলের ২১২ ধারায় বলা হয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট সীমানার বাহিরে সীমানার সন্নিহিত ১০০ মিটার এলাকাকে সংলগ্ন এলাকা হিসেবে গণ্য করা হইবে এবং উক্ত সংলগ্ন এলাকায় ৪০ ফুটের অধিক উচ্চতার কোন ভবন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে নির্মাণ করা যাবে না। এতে আরও বলা হয়েছে, ক্যান্টনমেন্টের নিরাপত্তা বা অন্যবিধ প্রয়োজনে বোর্ড বা সামরিক কর্তৃপক্ষ সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ বা টহল দিতে পারবে। এছাড়া সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই ধারায় বর্ণিত সংলগ্ন এলাকার সীমা আবশ্যক ক্ষেত্রে বর্ধিত বা হ্রাস করতে পারবে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট এ্যাক্ট ১৯২৪ দ্বারা ক্যান্টনমেন্ট সমূহের প্রশাসন পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশে প্রচলিত ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজী ভাষা প্রণীত আইনসমূহ বাংলায় ভাষান্তর সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং সময়ের ব্যাপ্ত পরিসরে পরিবর্তিত প্রেক্ষিত ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিদ্যমান ক্যান্টনমেন্ট এ্যাক্ট হালনাগাদ করে এই আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। বিদ্যুত ও জ্বালানি সরবরাহে নতুন বিল ॥ এদিকে বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিদ্যুত ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের মেয়াদ বাড়াতে বুধবার জাতীয় সংসদে বিদ্যুত ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন, ২০১৮ নামে নতুন একটি বিল উত্থাপন করেছেন। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগামী ৩ দিনের মধ্যে সংসদে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বিলটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়েছে।
×