ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ইস্যুতে পুরো বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৭ জুন ২০১৮

রোহিঙ্গা ইস্যুতে পুরো বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, কেবল কয়েকটি দেশ ছাড়া বিশ্বের সকল রাষ্ট্র এবং জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে বাংলাদেশে পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে যে কোন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী। তবে রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই রাখাইন রাজ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে এবং দ্রুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তরে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী জানান, অল্প সময়ে এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আগমন বাংলাদেশের জন্য ব্যাপক আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তিনি বলেন, একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে এবং মানবিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে হতে বলপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাময়িকভাবে আশ্রয় প্রদান করেছে। ব্যাপক অত্যাচারের শিকার এ জনগোষ্ঠীর খাদ্য, বাসস্থান ও স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক মানবিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরী ছিল। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা মোতাবেক সরকার রোহিঙ্গাদের সকল প্রকার মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, মানবিক সহায়তার পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে রোহিঙ্গা সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি মিয়ানমার সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে বাংলাদেশ সরকার বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক উদ্যোগও গ্রহণ করেছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক চাপের ফলে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মাত্র চার মাসের মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হয়। চুক্তির শর্তানুযায়ী মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে মাঠ পর্যায়ে একাধিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা হল সার্ক, যা ১৯৮৫ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় সার্ক সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। সার্কের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে অন্য সদস্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা। সুতরাং সার্কের আওতায় এর সদস্য দেশগুলোর শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচিত বা অনির্বাচিত কোন সরকারের বিষয়ে কোনরূপ মতামত প্রদান বা কোন পক্ষ অবলম্বন করার কোন সুযোগ নেই।
×