ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৬ জুন ২০১৮

ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশেন নির্বাচনের প্রধান বাধা পুলিশ প্রশাসন এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশাসনকে ব্যবহার করে সরকার ভোট ডাকাতির সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ কারণে দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের এ নির্বাচনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা তাদের পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন এমন কোন পরিবেশ দৃশ্যমান নয় সেখানে। ভোটের আগের দিন সোমবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে ভোট নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কা বাড়ছে। প্রতিটি লোকালয়ে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পাইকারি হারে গ্রেফতার বাসায় বাসায় তল্লাশি, বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতাদের গ্রেফতার, নতুন করে মিথ্যা মামলায় হয়রানি, বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা ডিবি পুলিশের হানাদারী আগ্রাসন চলছে সমভাবে। তিনি এ ও উল্লেখ করেন যদি ভোট সুষ্ঠু হয় অবাধ হয়, ভোটররা যদি বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ভোট দিতে আসেন তাহলে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে পারবে না। নির্বাচনের আগেই বিএনপির নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিতসহ ১৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া আগের রাতে বিএনপির ‘শত শত’ নেতা-কর্মী ও সমর্থকের বাড়িতে বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘হানা’ দিয়েছে। নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি। বলেন, তবে সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসবেন। ভোট যদি কিছুটা সুষ্ঠু ও অবাধ হয়, তাহলে ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না। ভোট যদি সুষ্ঠু হয় ধানের শীষ জিতবে, আর ভোট যদি নির্বাচন কমিশনের ভাষায় চমৎকার হয়- তাহলে ভোট ডাকাতি হবে উল্লেখ করেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে খুলনার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না’ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ বক্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘খুলনায় নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক কারচুপি ও ভোট সন্ত্রাসের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার বক্তব্যে সেটিই প্রমাণিত হলো। শুধু খুলনা মার্কা নয়, গাজীপুরে ভোট ডাকাতির সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়তে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ইসি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সর্বত্র সরকারের ম্যাসেজ প্রতিপালিত হচ্ছে অক্ষরে অক্ষরে। পাইকারি হারে গ্র্রেফতার, বাসায় বাসায় তল্লাশি, বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতাদের আটক, নতুন করে মিথ্যা মামলায় হয়রানি, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা ডিবি পুলিশের আগ্রাসন, সরকারী দলের মেয়র প্রার্থী, মন্ত্রী ও নেতাদের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গসহ সর্বোপরি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পুলিশের গাড়িতে করে প্রচারাভিযান ইত্যাদি ঘটনায় সরকারের ম্যাসেজটা কী, তা গাজীপুরের ভোটারদের বুঝতে বাকি নেই। রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় থাকতে পছন্দ করে না। তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতা থেকে সরে যেতেও পছন্দ করে না। এজন্য রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে দখলে রাখা প্রয়োজন মনে করে। সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে দলীয় চেতনার লোক নিয়োগ দিয়ে কর্তৃত্ব সম্প্রসারণের কাজটি সম্পন্ন করেছে আওয়ামী সরকার।’ বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাবন্দী খালেদা জিয়ার বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘দ্বিধাহীন কণ্ঠে বলতে চাই, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। নাহলে সরকারের অন্যায়ের কড়ায়-গ-ায় হিসাব জনগণ আদায় করে নেবে। বেগম জিয়াকে জামিন না দিতেও সরকার নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ করছে। আইনগতভাবে বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাবার অধিকারী হলেও তাকে জামিন না দেয়াটা সরকারের চোখ রাঙানিরই বহিঃপ্রকাশ। সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×