ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

মার্জিন ঋণের সুদ শতভাগ মওকুফ করার সিদ্ধান্ত আইসিবির

প্রকাশিত: ০৭:১১, ২০ মে ২০১৮

মার্জিন ঋণের সুদ শতভাগ মওকুফ করার সিদ্ধান্ত আইসিবির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ইনভেস্টর স্কিমের আওতায় মার্জিন ঋণধারী ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পুনর্বাসনের জন্য সাত বছর তিন মাসের পুঞ্জীভূত সুদ শতভাগ মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিছু শর্তসাপেক্ষে এ সুদ মওকুফ সুবিধা কার্যকর হবে। মূল প্রতিষ্ঠান আইসিবির পাশাপাশি দুই সাবসিডিয়ারি আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড ও আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের গ্রাহক বিনিয়োগকারীদের জন্যও একই সুবিধা প্রযোজ্য হবে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আইসিবির পর্ষদ সভায় বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটি। সুদ মওকুফের বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হক বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য এর আগেও আইসিবি ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ মওকুফ করেছে। তবে এবার আমরা শতভাগ সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হলে সার্বিকভাবে এর ইতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়বে বলে জানান তিনি। আইসিবি সূত্রে জানা গেছে, এবার মোট ৫ হাজার ১৬২টি বিনিয়োগ হিসাব শতভাগ সুদ মওকুফের আওতায় আসছে। মওকুফযোগ্য অর্থের পরিমাণ ১৮২ কোটি টাকা। বেশকিছু শর্তসাপেক্ষে এ সুদ মওকুফ সুবিধা কার্যকর হবে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট সাত বছর তিন মাসের শতভাগ সুদ মওকুফ করা হবে। তবে মওকুফকৃত অর্থের পরিমাণ কোনভাবেই আলোচ্য সময়ের জন্য প্রযোজ্য সুদ কিংবা ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিনিয়োগ হিসেবে থাকা সম্পদ ঘাটতির তুলনায় বেশি হতে পারবে না। মওকুফকৃত অর্থের ৫ শতাংশ অর্থ নগদ কিংবা তহবিল স্থানান্তরের মাধ্যমে পরিশোধ করা হলে বিনিয়োগকারীরা সুদ মওকুফ সুবিধা ও সংশ্লিষ্ট হিসেবে সিকিউরিটিজ কেনার সুযোগ পাবেন। মওকুফকৃত সুদের ওপর ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে সুদ মওকুফ সুবিধা কার্যকর হওয়ার তারিখ পর্যন্ত সুদ আরোপ করা বন্ধ থাকবে। ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব বিনিয়োগকারী এর আগে সুদ মওকুফ সুবিধা পেয়েছেন, তারা বর্তমানে সুদ মওকুফের জন্য বিবেচিত হলে আগের মওকুফ করা অর্থ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট অর্থ মওকুফ করতে পারবেন। এ বছরের ২৮ জুন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা শতভাগ সুদ মওকুফের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। আইসিবি ছাড়াও দুই সাবসিডিয়ারি আইসিবি ক্যাপিটাল ও আইসিবি সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরাও শতভাগ সুদ মওকুফের সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে আইসিবি ক্যাপিটালের ৬ হাজার ৬৬১টি বিনিয়োগ হিসাব শতভাগ সুদ মওকুফ সুবিধার আওতায় আসছে। এজন্য প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তাছাড়া আইসিবি সিকিউরিটিজের সুদ মওকুফযোগ্য বিনিয়োগ হিসাব বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৬ সালে ৭ হাজার ১০০টি বিনিয়োগ হিসেবের জন্য ৮০ শতাংশ সুদ মওকুফ করেছিল আইসিবি। সে সময় মওকুফযোগ্য অর্থের পরিমাণ ১৪৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হলেও মাত্র দুই হাজার বিনিয়োগকারী সুদ মওকুফের সুবিধা গ্রহণ করায় প্রকৃত ব্যয় হয় ২৮ কোটি টাকার কিছু বেশি। মওকুফকৃত অর্থের ২০ শতাংশ জমার বিনিময়ে এ সুযোগ দেয়া হয়েছিল। তাছাড়া দুই সাবসিডিয়ারি আইসিবি ক্যাপিটাল ও আইসিবি সিকিউরিটিজও সে সময় বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফ সুবিধা দিয়েছিল।
×