ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রুটিপূর্ণ মার্কেটিংয়ের কারণে ন্যায্যমূল্য পায় না কৃষক

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২০ মে ২০১৮

ত্রুটিপূর্ণ মার্কেটিংয়ের কারণে ন্যায্যমূল্য পায় না কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডিজিটাল কৃষিতেও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন হচ্ছে। উৎপাদন বাড়লেও ত্রুটিপূর্ণ মার্কেটিংয়ের কারণে অনেক সময় কৃষক ন্যায্যমূল্য পায় না। ফলে কৃষক বার বার মার খায়। তবে বর্তমানে কৃষির যে অগ্রযাত্রা তা অব্যাহত রাখতে এবং ভবিষ্যতে কৃষিতে আরও এগিয়ে যেতে তরুণদের এই সেক্টরে আগ্রহ তৈরি করার কথা বলেছেন বক্তারা। একই সঙ্গে মার্কেটিং পলিসির পরিবর্তন আনার কথাও বলেছেন বক্তারা। শনিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) কমপ্লেক্সে ‘ফুড এ্যান্ড এ্যাগ্রিকালচার ইকো সিস্টেম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। কেআইবির সভাপতি কৃষিবিদ এ এম এম সালেহর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন বিশ^ ব্যাংকের সিনিয়র কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. ইফতেখার মোস্তফা। খাদ্য, কৃষি ও ইকো সিস্টেম নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেখানোর পর কৃষির প্রসারে উন্মুক্ত আলোচনায় নানা মত দেন বক্তারা। প্রধান বক্তা ড. ইফতেখার মোস্তফা বলেন, ইকো সিস্টেমে আকৃষ্ট করতে হবে। আর কৃষি নিয়ে গবেষণার ফলাফল দ্রুত করতে হবে। কৃষক সংগঠনের বিনিয়োগের বিষয়েও কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র কৃষকদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এছাড়াও তথ্য প্রবাহ অবাধ যেন হয় সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। গবেষণা নিয়ে বলেন, অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় গবেষণা নিজের জন্য বেশি হচ্ছে। তবে এখানে ১০ শতাংশ নিজের জন্য এবং ৫০-৬০ শতাংশ যেন কৃষকের কাজে লাগে সেদিকে খেয়াল রেখে গবেষণা করতে হবে। ড. ইফতেখার মোস্তফা মনে করেন, কৃষি ও কৃষকের জন্য কৃষিবিদদের যে অবদান তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তরুণদের আকৃষ্ট করতে হবে। আমাদের চেষ্টা রাখতে হবে তরুণদের নিয়ে। কেননা, মিশন-ভিশন বাস্তবায়নে তরুণরা ভূমিকা রাখবে। প্রধান বক্তা বলেন, যে কাজে রিটার্ন ভাল সেসব কাজে হাত দিতে হবে, সব কাজে হাত না দেয়াই ভাল। ইতিবাচক কাজ করতে হলে ইতিবাচক ভিশন থাকতে হবে বলেও জানান তিনি। বিএআইসির সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. ভাগ্য রাণী বণিক বলেন, আমাদের গবেষণা চলমান। আশা করছি ভবিষ্যতে এসব দ্রুত শেষ হবে। কেআইবি ঢাকা মেট্রোপলিটনের সাধারণ সম্পাদক তাজদিকুর রহমান সনেট বলেন, আমাদের দেশের পরিবর্তিত জলবায়ুর কারণে অনেক সময় বিভিন্ন উৎপাদন ব্যাহত হলে পরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে কেউ কেউ। পরিবর্তিত জলবায়ুর ধারণা দিতে হবে। একই সঙ্গে বাজার ব্যবস্থাপনা মার্কেটিং পলিসির কোন সংশোধন বা পরিবর্তন করা যায় কিনা তা ভাবতে হবে। কেজিএফের ডিরেক্টর ওয়াইজ করোনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক সময় পণ্য কয়েকগুণ বেশি হচ্ছে। তবে ৮-১০ কি.মির মধ্যে দামের পার্থক্য বেশ বেশি। এক্ষেত্রে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পায় না। তাই মার্কেটিংয়ের ওপর অনেক কাজ করার আছে এখনও। সভাপতির বক্তব্যে কৃষিবিদ এ এম এম সালেহ বলেন, আমাদের দেশের কৃষিজমি ক্রমেই কমছে। কৃষিজমি কি করে রক্ষা করা যায় তার উদ্যোগ জরুরী। মার্কেটিং সিস্টেম দুর্বল তার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টিও দেখতে হবে। একই পণ্য বরিশাল বা উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় আসতে আসতে দাম বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে সহজলভ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা খাদ্য নিরাপত্তার কথা বলছি অথচ খুব কম দেশই আছে যেখানে খাদ্যে ভেজাল দেয়া হয়। সম্প্রতি কিছু মেশানোর কারণে যেভাবে আম নষ্ট করা হলো। উৎপাদিত হলো ঠিকই তবে কোন কাজে এলো না। এক্ষেত্রে কৃষকদের বুঝতে হবে বলে জানান তিনি। এ সময় বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন কৃষিবিদ, কৃষিসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×