ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বার কাউন্সিল নির্বাচন আজ, ১৪ পদে প্রার্থী ৫৯

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৪ মে ২০১৮

 বার কাউন্সিল নির্বাচন আজ, ১৪ পদে প্রার্থী ৫৯

বিকাশ দত্ত ॥ আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণ ও তদারককারী সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন আজ। ৭৮টি কেন্দ্রে মোট ৪৩ হাজার ৭ শ’ ১৩ জন ভোটার তিন বছরের জন্য ১৪ জন যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিবেন। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভবন ছাড়াও দেশের জেলা সদর এবং উপজেলা সদরের দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণ ও বাজিতপুরের কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ মনোনীত সাদা প্যানেল ও বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। যদিও এই দুই প্যানেলের বাইরে আইনজীবী এক্য ফ্রন্ট নামে একটি প্যানেল রয়েছে। সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ জয়ের ধারা ধরে রাখতে ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল তাদের বিজয় ফিরে পেতে দেশের বিভিন্ন বারে যাচ্ছেন। দুই প্যানেলের নেতৃবৃন্দই আশাবাদী। তারা নির্বাচনে পুরো প্যানেলে জয়লাভ করবে না। বার কাউন্সিলের ১৪টি সদস্য পদের বিপরীতে এবার ৫৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সারাদেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে সাতজন এবং দেশের সাতটি অঞ্চলের স্থানীয় আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে আরও সাতজন নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ মনোনীত সাদা প্যানেলের প্রার্থী প্রসিকিউটর মোঃ মোখলেসুর রহমান বাদল জনকণ্ঠকে বলেন, ‘এবার আমরা বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী দিয়েছি। আশা করছি, সাধারণ আইনজীবীরা তাদের ভোট দেবেন। এছাড়া সাংগঠনিকভাবে এবার আমরা আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। আশা করছি, এবারের নির্বাচনে আমরা সবার সমর্থন পাব। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী এ্যাডভোকেট মোঃ ফজলুর রহমান বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অবশ্যই আমরা জয়লাভ করব। সাধারণ আইনজীবীগণ আমাদের সঙ্গে আছে। এবারের নির্বাচনে আমরাই জয়লাভ করব। এদিকে শনিবার দুই প্যানেলের প্রার্থীগণ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আওয়ামীপন্থী আইনজীবীগণ অভিযোগ করে বলেছেন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয়ের আশঙ্কা থেকেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এর আগে শনিবার সকালে বিএনপিপন্থী আইনজীবী প্যানেলের প্রার্থী এ জে মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করে বলেন, গতবার রেজাল্ট শিট ঠিকমতো দেয়া হয়নি। এ কারণে বার কাউন্সিলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বেসরকারী ঘোষিত ফলাফল পরে পরিবর্তিত হয়। এটা বার কাউন্সিলের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। ঝালকাঠি জেলায় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদে বিকেলে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীগণ সংবাদ সম্মেলন করেন। সাদা প্যানেলের প্রার্থী আব্দুল বাসেত মজুমদার বলেন, সারা দেশের আইনজীবীরা তাদের (বিএনপির নীল প্যানেল) সমর্থন করছে না। এ কারণে পরাজয়ের ভয়ে অমূলক কথা বলে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন তারা। তিনি বলেন, আমি মনে করি সচেতন আইনজীবীরা এতে কান দেবে না। বার কাউন্সিলের বর্তমান এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, এবারের নির্বাচনে আমরা কিছু নিয়ম করেছি। ছবিসহ ভোটার তালিকা করা হয়েছে। ভোটারদের ভোটের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। যার কারণে জাল ভোটের কোন সুযোগ নেই। এবারের নির্বাচনে সরকার সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে প্যানেল নেতা হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বার কাউন্সিলের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারকে। এ প্যানেল থেকে সাধারণ আসনে অন্য যাদের প্রার্থী করা হয়েছে তারা হলেনÑ এ্যাডভোকটে ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, জেড আই খান পান্না, পরিমল চন্দ্র গুহ ও শ. ম রেজাউল করিম। সাতটি আঞ্চলিক সদস্য পদে যাদের প্রার্থী করা হয়েছে তারা হলেন- ‘এ’ গ্রুপ থেকে কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, ‘বি’ গ্রুপ থেকে মো. কবির উদ্দিন ভুঁইয়া, ‘সি’ গ্রুপ থেকে ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, ‘ডি’ গ্রুপ থেকে এ এফ মোঃ রুহুল আনাম চৌধুরী, ‘ই’ গ্রুপ থেকে পারভেজ আলম খান, ‘এফ’ গ্রুপ থেকে মোঃ ইয়াহিয়া এবং ‘জি’ গ্রুপ থেকে মোঃ রেজাউল করিম। এদের মধ্যে এ্যাডভোকটে আবদুল বাসেত মজুমদার, জেড আই খান পান্না ও শ ম রেজাউল করীম এবং কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, পারভেজ আলম খান, মোঃ ইয়াহিয়া এবং মোঃ রেজাউল করিম বর্তমান কমিটিতে রয়েছেন। বিএনপি সমর্থক আইনজীবী প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী। সাধারণ আসনে এ প্যানেল থেকে অন্য যারা প্রার্থী হয়েছেন- এ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, তৈমুর আলম খন্দকার, আলহাজ বোরহানউদ্দিন, হেলালউদ্দিন মোল্লা, মোঃ আব্বাস উদ্দিন ও আসিফা আশরাফী পাপিয়া। অঞ্চলভিত্তিক আসন থেকে ‘এ’ গ্রুপ থেকে মোঃ মহসীন মিয়া, ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাধন কুমার গোস্বামী , ‘সি’ গ্রুপ থেকে মোঃ দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী ‘ডি’ গ্রুপ থেকে এটি এম ফয়েজ উদ্দিন, ‘ই’ গ্রুপ থেকে মোঃ শাহ ছারিরুর রহমান, ‘এফ’ গ্রুপ থেকে মোঃ ইসহাক এবং ‘জি’ গ্রুপ থেকে শেখ মোঃ মোখলেসুর রহমান। দুই প্যানেলের বাইরেও প্রার্থী হয়েছেন। এদের মধ্যে সাধারণ আসনে রয়েছেন, মোঃ শামীম সরদার, মোঃ মোতাহার হোসেন, মোঃ দেলোয়ার হোসেন মল্লিক, এস এম শফিকুল ইসলাম, শেখ মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ ইসরাফিল, এবিএম ওয়ালিউর রহমান খান, এস এম আবু বকর, মোঃ শাহজাদা, মোঃ আবুল বাশার, ফরহাদ উদ্দিন ভুঁইয়া, আব্দুল মজিদ মল্লিক, মোঃ গোলাম মোস্তফা, কামালউদ্দিন, মোহাম্মদ আব্দুল আওউয়াল, মোঃ ইউনুস আলী আকন্দ ও আমাতুন নুর বেগম। গ্রুপ আসনে এ থেকে মোঃ ইস্রারাফিল, বি থেকে এ কে এম রায়হান উদ্দিন, সি থেকে আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর, ফেরদৌস আহম্মেদ, ডি থেকে মোঃ জহিরুল ইসলাম, তারিকুর রহমান, ই থেকে আনিস উদ্দিন আহম্মেদ, কে বি এস আহম্মেদ কবির, এফ থেকে মোঃ শরিফুল ইসলাম, মোঃ ময়নুল আহাসান, মোঃ মনিুরুজ্জামান, জি থেকে মোঃ রফিকুল ইসলাম।
×