ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কথোপকথন ॥ নজরুলের গানকে ছড়িয়ে দেয়া উচিত -বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১২ মে ২০১৮

কথোপকথন ॥ নজরুলের গানকে ছড়িয়ে দেয়া উচিত -বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি

সঙ্গীতশিল্পী বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি। নজরুল সঙ্গীত, ভক্তিগীতি, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ও আধুনিক গানের বিচিত্র ধারায় শ্রোতাদের মন জয় করে চলেছেন দীর্ঘদিন। সঙ্গীতের অমিয়ধারায় নিজেকে শিক্ত করার পাশাপাশি, সঙ্গীতলব্ধ জ্ঞান ছড়িয়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ছায়ানটে নজরুল সঙ্গীত বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। তার কণ্ঠে ‘বনে বনে লাগলো দোল’ শিরোনামে নজরুল সঙ্গীতের এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন হচ্ছে বেঙ্গল বই প্রঙ্গণে আজ সন্ধ্যা ৭টায়। প্রকাশিত এ্যালবাম ও সঙ্গীত সম্পর্কে কথা হয় তার সঙ্গে। ‘বনে বনে লাগলো দোল’ এ্যালবাম সম্পর্কে বলুন বিজন : বেঙ্গল ফাউন্ডেশন নিবেদিত এ এ্যালবামটিতে নজরুলের ১০টি গান রয়েছে। উল্লেখযোগ্য গান হচ্ছে- আমার আপনার চেয়ে আপন, কুহু কুহু কুহু কোয়েলিয়া, তুমি যতই দহনা, হে প্রিয় আমারে দেব না ভুলিতে, চেয়ো না সুনয়না, আমার বিফল পুষ্পাঞ্জলি ইত্যাদি। এ এ্যালবাম নিয়ে আপনার আশাবাদ কেমন? বিজন : আমি খুবই মনযোগের সঙ্গে এবং আমার সর্বোচ্চ দিয়ে গানগুলো করেছি। আশা করছি সঙ্গীতপ্রিয় মানুষের মন জয় করবে এ গান। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আপনার পরিবেশনাও কী থাকছে? বিজন : বেঙ্গল ফাউন্ডেশন একসঙ্গে দুটি নজরুল সঙ্গীতের এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচনের আয়োজন করেছে। একটি আমার, অন্যটি শিল্পী অনিন্দিতা চৌধুরীর ‘নয়নের নীরে’ শিরোনামের এ্যালবাম। মোড়ক উন্মোচন করবেন দেশের প্রখ্যাত নজরুল সঙ্গীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল ও সাদিয়া আফরিন মল্লিক। অনুষ্ঠানে আমরা দুজনই গান পরিবেশন করব। নজরুলের গানকে সবার কাছে পৌঁছে দিতে করণীয় কী? বিজন : নজরুল অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি এ কথা সর্বজনবিধিত। তাঁর অসংখ্য সৃষ্টি মানুষের কল্যাণেই। বিশেষ করে তাঁর গান এক অসামান্য সৃষ্টি। এ গান সবার কাছে ছড়িয়ে দেয়া শিল্পী হিসেবে সবার কর্তব্য। আমরা সবাই এটা অবশ্যই চাই। কিন্তু এর জন্য পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। আমাদের দেশের টিভি চ্যানেলগুলোরও এ ব্যাপারে অনেক দায়বদ্ধতা রয়েছে। তারা যদি বেশি বেশি করে নজরুলের গানের অনুষ্ঠান টিভিতে প্রচার করে, তাহলে তাঁর গানের প্রতি মানুষের আগ্রহও অনেক বেড়ে যাবে। দেশে কি নজরুল চর্চা তাঁর জন্ম ও মৃত্যু দিবস কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে? বিজন : আমার কাছে নজরুল সব সময়ই প্রাসঙ্গিক। জীবন চলার পথে নজরুলের গান এক আলোক বর্তিকা। শুধুমাত্র তাঁর জন্ম ও মৃত্যুর ফ্রেমে নজরুলকে সীমাবদ্ধ রাখলে ভুল হবে। নজরুলের গান নিয়ে বিভ্রান্তি সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? বিজন : নজরুল সঙ্গীত সম্পর্কে সকল মতপার্থক্য ভুলে, শিল্পীদের এক হতে হবে। ঘরে ঘরে নজরুল সঙ্গীতের সংগঠন গড়ে উঠলেও কোন ক্ষতি নেই। ব্যক্তিস্বার্থ ভুলে সত্যিকার অর্থে নজরুলের গানকে ভালবেসে সবার কাছে ছড়িয়ে দেয়া উচিত। বাণী ও সুর ঠিক রেখে নজরুল সঙ্গীত চর্চা ও পরিবেশনা সকল শিল্পীর উচিত বলে মনে করি। কেমন গাইছে এ প্রজন্মের শিল্পীরা? বিজন : ভাল ভাল প্রতিভা বেরিয়ে আসছে। অনেকেই ভাল গান করছে। তবে সবাই যে একেবারে স্বচ্ছ শিল্পী হয়ে বেরিয়ে আসছে এটাও বলা যাবে না। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুদ্ধ সঙ্গীতচর্চার মাধ্যমে এই অঙ্গনকে রাঙিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। আপনার পেশাগত বিষয় সম্পর্কে বলুন। বিজন : সঙ্গীতই আমার পেশা এবং নেশা। আমি বেশ কিছুদিন যাবত ছায়ানটে নজরুল সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত আছি। এছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগে মিউজিকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত আছি। আপনার মিউজিকে এ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে বলুন। বিজন : আমি ২০১২ সালে আরটিভি ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড স্টার এ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। এতে প্রমিজিং ট্যালেন্টে আমি প্রথম হয়েছিলাম। এটা আমার সঙ্গীত জীবনের প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্জন। আমি মনে করি শিক্ষার শেষ নেই। তাই এখনও উচ্চাঙ্গ ও নজরুল সঙ্গীতের তালিম ও চর্চা চালিয়ে যাচ্ছি। -গৌতম পান্ডে
×