ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৩ মে ২০১৮

এ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার

ভক্তকুলের বহুদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে ‘এ্যাভেঞ্জার্স ইনফিনিটি ওয়ার।’ প্রত্যাশার পারদ এমনিতেই চড়ছিল আর থিয়েটারের মার্ভেলের সুপার হিরোদের পদর্পণেই শুরু হয়ে যায় করতালি, আর ‘সিটি’-র উচ্ছ্বাস। রূপালি পর্দায় মার্ভেলের গোটা দুনিয়াকে চোখ-মন-মাথা দিয়ে শুষে নেওয়ার সুযোগকে উদযাপন করেছে দর্শককুল। আমেরিকা, কানাডাসহ তামাম দুনিয়ায় ঝড় তুলে সর্বকালের সব রেকর্ড তছনছ করে দিয়েছে ‘অ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার’। মুক্তির প্রথম তিন দিনে ও বিশ্বব্যাপী সর্বকালের সবচেয়ে বেশি আয়ের দুটি রেকর্ড এখন এই ছবির দখলে। এ্যাভেঞ্জার্স সদস্যরা আসবে আর বক্স অফিসে হুলস্থূল বাঁধবে না তা কী করে হয়! আগাম টিকিট বিক্রির রেকর্ডই এ ছবি নিয়ে সবার প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। মুক্তির পর তো আমেরিকাসহ বিশ্বজুড়ে সর্বকালের সব রেকর্ড লণ্ডভণ্ড করে এগিয়ে চলছে ‘এ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার’। মার্ভেলের হাতে গড়া চরিত্রদের এই দুনিয়াতে লড়াইয়ের একটাই লক্ষ্য, থানোসের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচিয়ে নেওয়া। কার্যত খারাপের ওপর ভালোর জয়! দেখানো হয়েছে, ৬টি ইনফিনিটি স্টোনকে ছিনিয়ে নিতে পৃথিবীর ওপর হামলা চালানোর কথা থানোসের। আর চরম শক্তির অধিকারীর খলনায়ক থানোসকে রুখতে লড়তে হবে কয়াপ্টেন আমেরিকা, আয়রনম্যান, থর ও হাল্ককে। সঙ্গে থাকছেন ডক্টর স্ট্রেঞ্জ, ব্ল্যাক উইডো, স্পাইডারম্যানের মতো সুপার হিরোরা। পরিচালনা পরিচলনা রুসো পরিচালকদ্বয়ের মাধ্যমে সুপার হিরোদের এই প্রদর্শনী মার্ভেল কমিসকসের চরিত্রদের বেশ অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। আমেরিকার ৪ হাজার ৪৭৪টি প্রেক্ষাগৃহে গত ২৭ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। এগুলো থেকে শুক্র, শনি ও রবিবার এসেছে ২৫ কোটি ডলার, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ২ হাজার ১১৭ কোটি ৭৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা! উত্তর আমেরিকায় ২০১৫ সালে ‘স্টার ওয়ারস : দ্য ফোর্স এ্যাওয়েকেন্স’ ছবির গড়া ২৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের রেকর্ড তাই নেমে গেছে দুই নম্বরে। দুটি ছবিরই পরিবেশনা সংস্থা ওয়াল্ট ডিজনি মোশন স্টুডিওস পিকচার্স। বক্স অফিস মোজো ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, চীন ছাড়াই বিশ্বব্যাপী ৬৩ কোটি ডলার আয় করে ফেলেছে ‘এ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার’। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ৫ হাজার ৩৩৬ কোটি ৭৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এটাই যে কোনও ছবির বেলায় প্রথম তিন দিনে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়। গত বছর ‘দ্য ফেট অব দ্য ফিউরিয়াস’ ৫৪ কোটি ২০ লাখ ডলার ঘরে তুলে আগের রেকর্ড গড়েছিল। ডিজনির মার্কিন পরিবেশনার প্রধান ডেভ হলিস বলেছেন, ‘চলচ্চিত্র বাণিজ্য ও মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের জন্য অসাধারণ একটা সপ্তাহ কাটছে। ‘এ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার’কে বলা হচ্ছে গত এক দশকে গড়া মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স ও এর চরিত্রগুলোর চূড়ান্ত পরিণতি। সবশ্রেণীর দর্শকেরই প্রিয় তারা। সব সুপার হিরো একসঙ্গে থাকায় অবশ্যই দেখতে হবে এমন একটি ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি।’ উত্তর আমেরিকায় মুক্তির প্রথম তিন দিনেই ২০ কোটি ডলার আয়ের ঘরে নাম লেখাতে পেরেছে মাত্র ছয়টি ছবি। এর মধ্যে পাঁচটিরই পরিবেশক ডিজনি। মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের পাশাপাশি স্টার ওয়ারস ফ্র্যাঞ্চাইজিও তাদের। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ মুক্তির প্রথম তিন দিনে ২০ কোটি ২০ লাখ ডলার আয় করে। বাকি দুটি হলো ‘দ্য এ্যাভেঞ্জার্স’ ও ‘স্টার ওয়ারস : দ্য লাস্ট জেডাই’। এই তালিকায় ডিজনির বাইরের ছবি কেবল ইউনিভার্সাল পিকচার্সের ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’। লক্ষণীয় বিষয় হলো, উত্তর আমেরিকায় সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ১০টির মধ্যে ৯টিরই পরিবেশক ডিজনি, এর মধ্যে ছয়টিই মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের অংশ। ৪০ কোটি ডলার বাজেটের ছবিটিতে অভিনয় করেছেন সব তারকা খ্যাত অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা। তারা হলেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র (আয়রন ম্যান), ক্রিস হেমসওর্থ (থর), ক্রিস ইভান্স (ক্যাপ্টেন আমেরিকা), স্কারলেট জোহানসন (ব্ল্যাক উইডো), চ্যাডউইক বোসম্যান (ব্ল্যাক প্যান্থার), ক্রিস প্রাট (স্টার লর্ড), বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ (ডক্টর স্ট্রেঞ্জ), মার্ক রাফেলো (হাল্ক), টম হল্যান্ড (স্পাইডার-ম্যান), টম হিডেলস্টন (লকি), সেবাস্তিয়ান স্তান (হোয়াইট উলফ), স্যামুয়েল এল জাকসন (নিক ফিউরি), জোয়ি স্যালডানা (গামোরা), এলিজাবেথ ওলসেন (স্কারলেট উইচ), পল বেটানি (ভিশন), ডেভ বাতিস্তা (ড্রেক্স দ্য ডেস্ট্রয়ার), এ্যান্থনি ম্যাকি (ফ্যালকন), ডন শিডল (ওয়ার মেশিন), গিনেথ প্যালট্রো, বেনিসিও দেল তোরো, কারেন গিলান, পম ক্লেমেন্সিয়েফ, বেনেডিক্ট ওঙ, পিটার ডিঙ্কলেজ, ইড্রিস এ্যালবা। এছাড়া কম্পিউটারে সাজানো থানোসের ভূমিকায় জশ ব্রোলিন, রকেট চরিত্রে ব্র্যাডলি কুপার ও গ্রুটের ভূমিকায় কণ্ঠ দিয়েছেন ভিন ডিজেল।
×