ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আগেই তফসিল মেনে নেয়া হবে না ॥ ফখরুল

নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি সমাধানের দাবি বিএনপির

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৩ মে ২০১৮

নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি সমাধানের দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচন সরকার প্রশ্নে আলাপ-আলোচনার মাধ্যামে এর সমাধান করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচন সরকারের বিষয়টি সমাধানের আগে তফসিল হলে মেনে নেব না। বুধবার দুপুরে শ্রমিক দলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। ফখরুল বলেন, বিরোধী দলের সঙ্গে কোন আলোচনা না করা, কোন ডায়ালগ ওপেন না করা, দেশের মানুষের যে ওপিনিয়ন সেটি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে এই সরকার তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করবার জন্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পোক্ত করতে চায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বরাবরই মূল রাজনৈতিক বিরোধী দল বিএনপিকে বাদ দিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে। সাধারণ মানুষ যে ব্যবস্থা মেনে নিয়েছিল, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তারা ক্ষমতায় আসার পরেই বাতিল করে দিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করে গোটা নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল অসহায়বোধ করছে। শুধু আমরা বলছি না, বিদেশের বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোও বলছে, এই সরকার একটা স্বৈরাচারী সরকার। গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গাজীপুরের এসপি হারুনকে সরানোর জন্য আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো আমাদের জোটের ৪৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এমনকি যিনি মেয়র পদে দাঁড়িয়েছিলেন তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব কারণে এ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এটি মনে করার কোন কারণ আমি দেখছি না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সরকারের ইচ্ছাপূরণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিহিত করে ফখরুল বলেন, সরকার যে নির্দেশ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন তাই বাস্তবায়ন করছে। যাতে আবারও একতরফা ভোট করে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কোন চিন্তা-ভাবনা নেই। জনগণের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের যে নিয়ম রয়েছে সেটিও তারা পালন করছে না। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের সৃষ্টি। সরকার নিজেদের ইচ্ছা পূরণে তাদের পছন্দমত লোক বসিয়েছে কমিশনে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মেরুদ-হীন কমিশন আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের সুষ্ঠু নির্বাচন করার কোন যোগ্যতাই নেই। উট পাখি যেমন ঝড় আসলে বালুর মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে মনে করে তাদের ঝড় আঘাত করবে না বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অবস্থা তেমন। তারা মনে করে নিরপেক্ষ নির্বাচন না করলে জনজোয়ার তাদের আঘাত করবে না। মির্জা ফখরুল অভিযোগ, সরকার সব সময় চেষ্টা করছে দেশের প্রধান বিরোধীদলকে দূরে রেখে, খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে একতরফা নির্বাচন করতে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের আর জনগণের কাছে যাওয়ার জায়গা নেই। তারা নিশ্চিত বিরোধীদল নির্বাচনে গেলে তাদের ভরাডুবি হবে। সেজন্য একতরফা নির্বাচনের জন্যই বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম প্রমুখ। বিএনপির নেতারা জিয়া-কোকোর কবরে ॥ পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে শেরেবাংলানগরে জিয়াউর রহমানের কবরে এবং বনানী কবরস্থানে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের কবর জিয়ারত করেছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে এতে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ওলামা দলের সভাপতি আবদুল মালেক প্রমুখ।
×