ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবারের মতো আটে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৩ মে ২০১৮

টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবারের মতো আটে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এর আগে কখনই যা হয়নি। এবার আইসিসির ঘোষিত টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে তা হয়েছে। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের আটে উঠেছে বাংলাদেশ। আগে বাংলাদেশ ১০ টেস্ট দলের মধ্যে ৯ নম্বরে ছিল। একধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও ওপরে আছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগে ছিল আট নম্বরে। বাংলাদেশ সেই স্থান দখল করে নিয়েছে। আর তাতে করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একধাপ অবনমন হয়েছে। এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আছে র‌্যাঙ্কিংয়ের নয় নম্বরে। এই প্রথমবারের মতো একসময়ের টেস্টে প্রতাপ দেখানো দল ওয়েস্ট ইন্ডিজও নয় নম্বরে নেমেছে। মঙ্গলবার আইসিসি নতুন র‌্যাঙ্কিং ঘোষণা করেছে। ২০১৪-১৫ মৌসুমে দলগুলোর পারফর্মেন্স এই র‌্যাঙ্কিং প্রণয়ন করার ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয়নি। ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ মৌসুমের পারফর্মেন্সের ৫০ শতাংশ বিবেচনায় আনা হয়েছে। তাতে করে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই তিন বছরে ১৮ টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। জিতে তিনটিতে। হার হয় ১০টি ম্যাচে। ড্র করে ৫টি ম্যাচে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই সময়ে ২৮ টেস্ট খেলে। জিতে মাত্র ৫টিতে। হারে ১৮টি ম্যাচে। দলটির সংগ্রহ রেটিং পয়েন্ট তাই ৬৭। বাংলাদেশের ৭৫। তাতেই বাজিমাত করেছে বাংলাদেশ। এই র‌্যাঙ্কিংয়ের আগে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ছিল ৭১। বাংলাদেশের চেয়ে ১ রেটিং পয়েন্ট বেশি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তাদের চেয়ে ১ রেটিং পয়েন্ট বেশি নিয়ে আটে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবারের ঘোষিত র‌্যাঙ্কিংয়ে বোঝাই যাচ্ছে বাংলাদেশের ৪ রেটিং পয়েন্ট যোগ হয়েছে। ৫ রেটিং পয়েন্ট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে আছে ভারত, ১২৫ রেটিং পয়েন্ট। ১৩ রেটিং পয়েন্ট (১১২ রেটিং পয়েন্ট) ব্যবধানে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তিনে অস্ট্রেলিয়া। চারে নেমে গেছে নিউজিল্যান্ড (১০২ রেটিং পয়েন্ট)। র‌্যাঙ্কিংয়ের পাঁচে ও ছয়ে থাকা দুটি দল যথাক্রমে ইংল্যান্ড (৯৮ রেটিং পয়েন্ট) ও শ্রীলঙ্কা (৯৪ রেটিং পয়েন্ট)। র‌্যাঙ্কিংয়ের সাতে থাকা পাকিস্তানের রেটিং পয়েন্ট ৮৬। আটে বাংলাদেশ। নয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দশে জিম্বাবুইয়ে (রেটিং পয়েন্ট ২)। এদিকে ওয়ানডেতে সাত নম্বরেই আছে বাংলাদেশ। তবে ওয়ানডেতে ভারতের অবনমন হয়েছে। শীর্ষস্থান হারিয়েছে ভারত। ইংল্যান্ড শীর্ষ আসনে বসে গেছে। ২০১৫ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে পড়ে ইংল্যান্ড। এরপর থেকেই ওয়ানডে ক্রিকেটে খেলার ধরন পাল্টে ফেলে ইংল্যান্ড। তাতে ফলটা ভালই মিলেছে। নতুন ঘোষিত আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতকে হটিয়ে দিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের রেটিং পয়েন্ট ১২৫। তাদের থেকে ৩ রেটিং পয়েন্ট (১২২ রেটিং পয়েন্ট) পিছিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ভারত। শেষ তিন বছরে ৬৩ ওয়ানডে খেলে ৪১ জয় তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। ভারত এই সময়ে ৫৯ ম্যাচে ৩৯ জয় পেয়েছে। র‌্যাঙ্কিংয়ের তিনে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের ১১৩ রেটিং পয়েন্ট। নিউজিল্যান্ড (১১২ রেটিং পয়েন্ট) চতুর্থ, অস্ট্রেলিয়া (১০৪ রেটিং পয়েন্ট) পঞ্চম ও পাকিস্তান (১০২ রেটিং পয়েন্ট) ষষ্ঠ স্থানে আছে। ৯৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ সপ্তম স্থান অটুট রেখেছে। শ্রীলঙ্কা (৭৭ রেটিং পয়েন্ট) অষ্টম, ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৬৯ রেটিং পয়েন্ট) নবম, আফগানিস্তান (৬৩ রেটিং পয়েন্ট) দশম, জিম্বাবুইয়ে (৫৫ রেটিং পয়েন্ট) একাদশ ও আয়ারল্যান্ড (৩৮ রেটিং পয়েন্ট) দ্বাদশ স্থানে আছে। র‌্যাঙ্কিংয়ে ওয়ানডেতে সপ্তম স্থান বজায় রাখাও সাফল্য। তবে এ র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাফল্য টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবারের মতো আটে ওঠা। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বর স্থান দখল করেছে বাংলাদেশ। এই টেস্টে উন্নতির পেছনে কঠোর পরিশ্রমকেই সামনে তুলে ধরেছেন মুশফিকুর রহীম। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নিশ্চয়ই একটা গ্রাফ থাকে ওপরের দিকে যাওয়ার। আগে দেখেছেন আমরা ওয়ানডেতে খুব ভালভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। টি২০তে আশানুরূপ প্রগ্রেস না হলেও শেষ টি২০ সিরিজটা ভাল গেছে। টেস্টে যে আমরা উন্নতি করছি, শেষ চার-পাঁচ বছর যে ভাল খেলছি এটারই একটা (র‌্যাঙ্কিং) শো করে। এক সিরিজ ভাল খেললে তো আর র‌্যাঙ্কিং উন্নতি হয় না। সেদিক থেকে বলব কঠোর পরিশ্রম করলে উন্নতি করাটা সহজ হয়। কিন্তু এখন অবস্থান ধরে রাখা আরও কঠিন এবং এর থেকে ওপরে যাওয়া আরও কঠিন হবে সামনে। তবে আমাদের দলের যে প্লেয়াররা আছেন তাদের সামর্থ্য আছে এগিয়ে যাওয়ার।’ ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর কারণেই সম্ভাবনাটা ভালভাবে কাজে লেগেছে বলেও জানান মুশফিক, ‘আমাদের পরিকল্পনাই এটা ছিল। কারণ হোম কন্ডিশনে ভাল করার সুযোগটা বেশি, আর যে কোন দলের জন্যই এখানে খেলা কঠিন হয়। আমরা পরিকল্পনা নিয়েছিলাম হোম কন্ডিশনে যদি আমরা অলআউট ক্রিকেট খেলতে পারি। রেজাল্ট আমাদের পক্ষে এলে অনেক অর্জন আসবে। পরিকল্পনার কথা ভাবলে এই দুই সিরিজ খুবই ভাল ছিল। আর একটা বিশ্বাসও দরকার ছিল নিজেদের। সেটা আমাদের মনে হয় সামনে কাজে লাগবে।’
×