ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন দাবি করেছে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ৯ এপ্রিল ২০১৮

খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন দাবি করেছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খুলনা এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে তারা এই দুই সিটিতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিরোধিতাও করেছেন। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের দলীয় বাহিনীর মতো কাজ করছে। ভোটাররা তাদের ওপর আস্থা পাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন অত্যাবশ্যক। রবিবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি তোলেন। সিটি নির্বাচনে বিএনপি সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি তুললেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা একই দিন এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে চাই না। তাই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোন সম্ভাবনা নেই। এদিকে বিএনপির এই দাবির প্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীপের পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে ইসি চাইলেও সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারবে না। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কবির বলেন, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করবে। কিন্তু সেনাবাহিনী থাকবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাই ইসি চাইলে সেনাবাহিনী তারা মোতায়েন করতে পারবে না। এই নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই। সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের দলীয় বাহিনীর মতো কাজ করছে। ভোটাররা তাদের ওপর আস্থা পাচ্ছে না। দুই সিটির নির্বাচনী এলাকায় লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনও তৈরি হয়নি। সরকারী দলের নেতারা সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। অপরদিকে বিএনপি নেতারা তাদের বাড়ি ঘরে ঘুমাতেও পারছে না। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়েছে উল্লেখ করেন। এ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন অত্যাবশ্যক। শুধু তাই নয়, ইভিএম ব্যবহারে জনগণের আগ্রহ না থাকলেও নির্বাচন কমিশন অনেক সেন্টারের ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে। এগুলো সবই সরকারের ইচ্ছারই প্রতিফলন। তিনি বলেন, দুই সিটি নির্বাচনী এলাকায় ক্ষমতাসীন দল ও সন্ত্রাসীদের হাতে বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা মিছিল করছে, মিটিং করছে ও সমাবেশ করছে বীরদর্পে। অন্যদিকে বিএনপিকে সভা-সমাবেশ দূরের কথা নেতা-কর্মীরা কেউই বাড়িতে রাতে ঘুমাতে পারছে না। তাদের জীবন কাটছে হয় জেলখানায় না হয় আদালতের বারান্দায়। নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার বন্ধ করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির দাবি জানান। এ সময় তিনি সরকার অন্যায় আচরণ করলে নিজ নীতিতে অটল থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। বলেন, সিইসির প্রধান দায়িত্ব যে কোন নির্বাচনে সব দলকে নিয়ে আসার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে সরকার বাধা হয়ে দাঁড়ালেও সংবিধানের অর্পিত ক্ষমতায় সব বাধাকে অতিক্রম করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারেন তিনি। তিনি বলেন, প্রহসন করতে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ-তে নেয়া। ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ পাননি। পুলিশী হিংসাত্মক আচরণ ও নির্বিচারে গ্রেফতারের আতঙ্কজনক পরিবেশেও আপোসহীন নেত্রী কেমন আছেন সেটুকু দেখার জন্য উদ্গ্রীব ছিলেন দেশের মানুষ। হাসপাতালে গাড়ি থেকে নামার পর জনতা দেখল সাহসী দেশনেত্রীকে। মানুষ উপলব্ধি করল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আপোসহীন নেত্রীর সাহস। কারাগারের স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও এতটুকু দমে যাননি খালেদা জিয়া। শনিবার হাস্যোজ্জ্বল অভিব্যক্তি সে বার্তাই জানান দিল। নারায়ণগঞ্জ কারাগারে বন্দী দলের চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে অভিযোগ করে বলেন, একটি ছোট অন্ধকার কক্ষে তাকে রাখা হয়েছে। বন্দী মানুষ হিসেবে যতটুকু অধিকার পাওয়া দরকার সেটিও দেয়া হচ্ছে না কারাগারে। জামিন প্রক্রিয়া প্রলম্বিত করছে সরকার। আমরা শিমুল বিশ্বাসের প্রতি সরকারের এহেন আচরণের নিন্দা জানাচ্ছি। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার শুরু ॥ এদিকে আসন্ন খুলনা এবং গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার শুরু করেছে বিএনপি। রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়। শুরুতেই খুলনা সিটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বোর্ডের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নেয়া হয় গাজীপুরের সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার।
×