ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ইনানী বিচে অবহেলিত তথ্য কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ৫ এপ্রিল ২০১৮

ইনানী বিচে অবহেলিত  তথ্য কেন্দ্র

মাকসুদ আহমদ, কক্সবাজার থেকে ফিরে ॥ বিশ্বে কক্সবাজার সৈকতের অবস্থান দীর্ঘতম তালিকায়। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত বিশ্বের কোথাও থাকার রেকর্ড নেই। কিন্তু এই সৈকতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে পর্যটকদের অভিযোগের অন্ত নেই। পর্যটন তথ্য কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতরাও গা-ছাড়া অবস্থানে থাকায় পর্যটকরা তথ্য নিতে গিয়ে শূন্য চেয়ার খুঁজে পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে ইনানী বিচের পর্যটন তথ্য কেন্দ্রের অবস্থা অনেকটা চিড়িয়াখানার মতোই। এমনকি গত ২৬ মার্চ উপলক্ষে জাতীয় পতাকার আদলে তথ্য কেন্দ্রটিকে কাপড়ে ঘেরা দেয়া হলেও তা এখন ধুলায় মিশে একাকার। দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইলটি (০১৭৩৩৩৭৩১২৭) শনিবার ব্যবহার করছিলেন বিচ কর্মীদের সুপারভাইজার মাহবুব আলম এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। কারণ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব চলাকালে শনিবার কক্সবাজারের বাইরে ছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে তথ্য কেন্দ্রে কারা তথ্য ও পরামর্শ দিবেন। প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, ৩০ মার্চ শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটায় চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ইনানী বীচে পৌঁছেন সংবাদ কর্মীদের একটি দল। বিভিন্ন তথ্য জানতে তারা ইনানী বিচের পর্যটন তথ্য কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। অস্থায়ী অবকাঠামো হলেও তথ্য কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা কর্মসময়ে পালাক্রমে বদল হওয়া একজনকেও পাওয়া যায়নি। দেখা গেছে দায়িত্বরত কেউ ছিল না। চারদিকে কাঠের টেংড়ার বেড়া দিয়ে মোটামুটি ৬০/৭০ বর্গফুটের একটি কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। সাঁটানো হয়েছে প্রবেশ মুখেই জেলা প্রশাসনের ‘পর্যটন তথ্য কেন্দ্র’ ইনানী বিচ, কক্সবাজার। জেলা প্রশাসন ও ইনানী সি-বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে সাঁটানো এই ব্যানারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয়ের মোবাইল নাম্বার (০১৭৩৩৩৭৩১২৭) লেখা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ২৪ ঘণ্টার এই তথ্য কেন্দ্রে কেউ সেবা দেন না। ৮ ঘণ্টার পালাক্রমে তিন জন বিচ কর্মী নিয়োজিত থাকলেও শুক্রবার সকালে সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কেউই ছিলেন না পর্যটকদের তথ্য সহায়তায়। প্রায় ২ মাস আগে চালু হওয়া এই তথ্য কেন্দ্রটি অনেকটা চিড়িয়াখানার খাঁচার মতোই। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা এই কক্ষটি তৈরি করা হয়েছে ইনানী বিচের বালিয়াড়ির ওপর। দরজা-জানালাবিহীন এই কক্ষটি সরকারের রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধায়কদের দায়িত্বহীনতার বিষয়টি প্রকাশ করছে। শুধু তাই নয় গত ২৬ মার্চ দেশের জাতীয় পতাকার আদলে এই কক্ষটি আবর্তিত করা হলেও সেই কাপড়টি এখন বালিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। স্থানীয়রাও মাড়াচ্ছে। ৩০ মার্চ শুক্রবার সকালে এমন দুরবস্থা দেখা গেছে কক্সবাজারের ইনানী বিচের এই পর্যটন তথ্য কেন্দ্রে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে, দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সুবিধার্থে কক্সবাজার শহরে ৩টি ও উখিয়ার ইনানীতে একটি পর্যটক তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলো হলো শহরের কলাতলী বিচ, সুগন্ধা বিচ ও লাবনী পয়েন্টের বিচে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন সুপারভাইজারসহ ৩ জন করে বিচ কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে প্রতি ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ২৪ ঘণ্টা বিচ কর্মীরা এসব কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করে। সপ্তাহের প্রতিদিন এই কেন্দ্র খোলা থাকে পর্যটকদের জন্য। এ ব্যাপারে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে থাকা পর্যটন কেন্দ্রেগুলোর দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, তথ্য কেন্দ্রগুলো থেকে পর্যটকদের পর্যটন তথ্য সুবিধা দেয়া হয়। এর মধ্যে লাবনী পয়েন্টের তথ্যকেন্দ্রটি স্থায়ী বাকিগুলো এখনও অস্থায়ী অবকাঠামোয় গড়া। এর মধ্যে ইনানী বিচের তথ্য কেন্দ্রটি দূরে হওয়ায় তিনি মাঝে মধ্যে সেখানে যান। জাতীয় পতাকা অবহেলিত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে কোন জাতীয় পতাকা বা এর আদলে গড়া কোন কিছু থাকার কথা নয়।এ ব্যাপারে বিচ কর্মীদের সুপারভাইজর মাহবুব আলম শনিবার বলেন, স্যার মোবাইলটি চার্জে দিয়ে বাইরে গেছেন। শুক্রবার কেন কেউ ছিল না তা তিনি জানেন না।
×