ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্চ আদালতে আরও বেশি নারী বিচারপতি নিয়োগে সচেষ্ট থাকব ॥ প্রধান বিচারপতি

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১১ মার্চ ২০১৮

উচ্চ আদালতে আরও বেশি নারী বিচারপতি  নিয়োগে সচেষ্ট থাকব ॥ প্রধান বিচারপতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, অধিকাংশ নারী বিচারক তাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। উচ্চ আদালতে আরও বেশি নারী বিচারপতি নিয়োগে আমরা সচেষ্ট থাকব। দেশের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে সুপ্রীমকোর্ট সব সময় নারী-পুরুষের সমতা এবং জনজীবনে নারীর অংশগ্রহণের নীতিকে সমর্থন করে। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। তাদের অবহেলিত রাখলে দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়। নারীর সাংবিধানিক এবং আইনগত অধিকার সুরক্ষায় সুপ্রীমকোর্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। সুপ্রীমকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া নারীরা যাতে ফতোয়ার বলি না হয়, সে বিষয়ে সুপ্রীমকোর্টের যুগান্তকারী রায় রয়েছে। শনিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউশনে প্রধান বিচারপতিকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ মহিলা জাজ এ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী। প্রধান বিচারপতি জেলা দায়রা জজ এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও আরও নারী বিচারক নিয়োগের বিষয়টি ‘সক্রিয়ভাবে বিবেচনা’র আশ্বাস দিয়েছেন। বর্তমানে উচ্চ আদালতে পাঁচজন নারী বিচারক রয়েছেন। নিম্ন আদালতে ১৬৭৩ জন বিচারকের মধ্যে ৪৩৩ জন নারী, যা মোট সংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, স্বামী-স্ত্রী দু’জনই বিচারক হলে একই কর্মস্থলে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। সঙ্গত কারণে সেটা সম্ভব না হলে পার্শ্ববর্তী জেলায় পদায়ন করা হবে। এ সময় জেলায় আবাসন বরাদ্দের ক্ষেত্রে নারী বিচারকদের অগ্রাধিকার দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে সুপ্রীমকোর্ট সব সময় নারী-পুরুষের সমতা এবং নারীর অংশগ্রহণের নীতিকে সমর্থন করে। নারীর সাংবিধানিক এবং আইনগত অধিকার সুরক্ষায় সুপ্রীমকোর্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। সুপ্রীমকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া নারীরা যাতে ফতোয়ার বলি না হয়, সে বিষয়ে সুপ্রীমকোর্টের যুগান্তকারী রায় রয়েছে। জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে যে নারী বিচারকরা রয়েছেন তারা অত্যন্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিচারকাজ পরিচালনা করে যাচ্ছেন।’ শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে আসাই এক সময় নারীদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ আজ বাংলাদেশের নারীরা উত্তরণ ঘটিয়েছে। আজকের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, নারীর জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা। গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি ন্যায়ভিত্তিক, সমতাভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অব্যাহতভাবে তার দায়িত্ব পরিপালন করে যাবে এটাই প্রত্যশা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কুমিল্লা জেলা জজ জেসমিন আরা বেগম উচ্চ আদালতে নারী বিচারপতি নিয়োগে ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের দাবি তুলে ধরেন। বাংলাদেশ মহিলা জাজ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তানজিনা ইসমাইলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির উপদেষ্টা আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি জিনাত আরা। অন্যান্যের মধ্যে প্রধান বিচারপতির স্ত্রী সামিনা খালেক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নুরুন্নাহার ওসমানী, জ্যেষ্ঠ সহকারী জেলা জজ মেহনাজ সিদ্দিকী, নরসিংদীর যুগ্ম জেলা জজ বেগম লুবনা জাহান ও যুগ্ম আইন সচিব বেগম উম্মে কুলসুম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
×