ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যবসায়ীদের প্রতি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ

ঘুষ দেবেন না-প্রয়োজনে দুদককে জানান

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১ মার্চ ২০১৮

ঘুষ দেবেন না-প্রয়োজনে দুদককে জানান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনৈতিক হস্তক্ষেপ বা দুর্নীতি ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট করে। তাই ব্যবসায়ীদের প্রতি কাউকে ঘুষ না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। একইসঙ্গে প্রয়োজন হলেও ঘুষ দেয়ার আগে বিষয়টি দুদককে জানালে ঘুষ গ্রহীতাকে আইনের আওতায় আনা হবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈধ কাজ সঠিক সময়েই সম্পন্ন করার ব্যবস্থাও নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। বুধবার বেলা ১১টায় দুদক কার্যালয়ে বিভিন্ন চেম্বারের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) উদ্যোগে ‘প্রভাইডিং করাপশন ফ্রি পাবলিক সার্ভিস ফর ইনভেস্টমেন্ট এন্ড বিজনেস ফ্রেন্ডলি ইনভায়রনমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম, এফিসিসিআইয়ের পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ, ডিসিসিআইয়ের পরিচালক সেলিম আখতার খান, এফসিসিআইয়ের মহাসচিব ফারুক আহমেদ, মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কোন ধরনের তদবির ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ কাক্সিক্ষত নয়। গত বছরই ঘুষ প্রহণের অভিযোগে ২৫ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করে দুদক। ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, কোন কাজে ঘুষ দেবেন না, ঘুষ দেয়ার আগে বিষয়টি দুদককে জানালে ঘুষ গ্রহীতাকে আইনের আওতায় আনা হবে। একইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈধ কাজ সঠিক সময়েই সম্পন্ন করার ব্যবস্থাও নেয়া হবে। দুর্নীতি ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মুক্তবাজার ব্যবস্থাপনা। এই বাজার ব্যবস্থাপনায় যে কোন ধরনের অনৈতিক হস্তক্ষেপ বা দুর্নীতি ব্যবসার পরিবেশ বিনষ্ট করে এবং দেশীয় বিনিয়োগের পথকে বাধাগ্রস্ত করে। দেশীয় বিনিয়োগ না হলে বৈদেশিক বিনিয়োগও আসবে না। ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুদকের কোন কোন কর্মকর্তা ব্যবসায়ীদের হয়রানি করেন, এমন অভিযোগ কখনও কখনও শোনা যায়। আমি এ বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, এমন কোন ঘটনা আপনাদের নজরে এলে তা দুদকে জানান। আমাদের দ্বার ব্যবসায়ীদের জন্য সর্বদা উন্মুক্ত। তবে ব্যবসার একটি নৈতিক মানদ- থাকা উচিত। ভ্যাট ফাঁকি, ট্যাক্স ফাঁকি, ওভার ইনভয়েসিং অথবা আন্ডার-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অনৈতিক উপায়ে অর্থ উপার্জন দেশের সংবিধানও সমর্থন করে না। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংক ঋণ বিতরণ কিংবা আদায় প্রক্রিয়ায় দুদক হস্তক্ষেপ করে না। তবে ব্যাংক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কেউ যদি জাল কাগজপত্র বা দলিলাদি ব্যবহার করেন, তাহলে বিষয়টি দুদকের এখতিয়ারে এসে যায়। সবাইকে মনে রাখতে হবে, সরকারী-বেসরকারী সব ব্যাংকের অর্থই পাবলিক মানি। এটার যে কোন প্রকার অপচয় বা ক্ষতিসাধনই দুর্নীতি। পদ্ধতিগত উন্নয়ন ছাড়া সরকারী পরিষেবার মান উন্নয়ন সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত সেবা নেয়ার নামে ঘুষ বা স্পিড মানি সহ্য করা হবে না। সরকারী সব সেবা নির্ধারিত টাইম-ফ্রেমে দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে সেবা দিতে না পারলে দায়ী কর্মকর্তাকেই এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, এমন ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। সরকারী কর্মকর্তারা যদি সচিবালয় নির্দেশিকা মানেন, তাহলেই ঘুষ বা স্পিড মানির প্রবণতা কমে আসবে। মতবিনিময় সভায় বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় সব ধরনের বিধি-বিধান, আইন-কানুন হবে বৈষম্যহীন ও সম-সুযোগের ক্ষেত্র। তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসার ক্ষেত্রে দুর্নীতি থাকলে পণ্য এবং সেবার মূল্য বেড়ে যায় এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় অসমতার সৃষ্টি হয়।
×