ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কঠোর অবস্থানে সরকার

শর্ত পূরণ না করায় ১২ বেসরকারী ভার্সিটিতে ভর্তি বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শর্ত পূরণ না করায় ১২ বেসরকারী ভার্সিটিতে ভর্তি বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দফায় দফায় সময় দেয়ার পরেও স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠাসহ ন্যূনতম শর্ত পূরণ না করায় এবার অভিযুক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। কয়েক দফা সময় দেয়ার পরেও যেসব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শর্ত পূরণ করেনি এমন ১২টি প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩২ বিশ্ববিদ্যালয়কে হিসাব না দেয়াসহ নানা ইস্যুতে শোকজ করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মকর্তারা বলেছেন, ইতোমধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠক নিয়ে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন বলেছেন, দেশের পুরনো ৫১টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু বাকি ৩২টির মধ্যে ১২টি ন্যূনতম কোনও উদ্যোগ নেয়নি। ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সূত্রে জানা গেছে, ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অধিকাংশ স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার কোন ধরনের উদ্যোগই নেয়নি। বাকিরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনেছে কিন্তু নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেই বা শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি। এছাড়াও আরও বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এসব কারণে তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন জানান, এই সিদ্ধান্তের জন্য ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের কোনও ক্ষতি বা সমস্যায় পড়তে হবে না। তারা শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখতে পারবে। ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়েই তারা লেখাপড়া করতে পারবে। জানা গেছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া, বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন না দেয়া, বা আইনের বিভিন্ন দিক লঙ্ঘন করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছেও ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি থেকে পাঠানো পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত রয়েছে দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আয়-ব্যয়ের নিয়মিত নিরীক্ষা করায় না, প্রতিবেদন না দেয়ার অপরাধে আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত। ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়কেও কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হবে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যলয়ের হালনাগাদ অবস্থা আমাদের কাছে আছে। আমরা তা পর্যালোচনা করছি। কোন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু সবাইকে আইনের অধীনে আসতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিতের পর কেউ ব্যবসা করলে করতে পারেন। কিন্তু বেপরোয়াভাবে কাউকে চলার সুযোগ দেয়া হবে না। গত বছর জানুয়ারিতে আলটিমেটাম দেয়া ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র সাতটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে গেছে। বাকিগুলোর কোনটি জমি কিনেছে, কোনটি আংশিক কার্যক্রম শুরু করেছে। ন্যূনতম শর্ত পূরণ করেনি এরকম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অনেক বছর ধরে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
×