ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বসন্ত সন্ধ্যায় শ্রোতার মুগ্ধতায় গানে গানে মিতালী

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বসন্ত সন্ধ্যায় শ্রোতার মুগ্ধতায় গানে গানে মিতালী

মনোয়ার হোসেন ॥ বসন্ত সন্ধ্যায় বেজে ওঠে অদ্ভুত সুন্দর কণ্ঠস্বরটি। বাইরের সব কোলাহল ছাপিয়ে মিলনায়তনটি পরিণত হয় সুরের রাজ্যে। শ্রবণের আনন্দে জেগে ওঠে শ্রোতার প্রাণ। অন্তরে ছড়ায় প্রশান্তির পরশ। সুরে মোহাবিষ্টতায় হৃদয়ে বয়ে যায় চঞ্চলতা। আর এভাবেই গানে গানে শ্রোতার হৃদয় রাঙালেন মিতালী মুখার্জী। ওপার বাংলার এই তুমুল শ্রোতানন্দিত কণ্ঠশিল্পী মাতালেন এপার বাংলার শ্রোতাদের। জন্মসূত্রে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে জন্মানো গায়িকার সঙ্গীতসন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হলো রবিবার। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় বসে এ আয়োজন। মন উচাটন করা সুরের টানে শ্রোতায় পরিপূর্ণ ছিল মিলনায়তন। গানে গানে মিতালী শীর্ষক সঙ্গীত আসরের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। অনেকের মতোই মিতালী মুখার্জীর গানের টানে আয়োজনে হাজির হয়েছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সেই সঙ্গে সঙ্গীতানুষ্ঠানটি উপভোগ করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। পরিবেশনা শুরুর আগে এই দুই অতিথি মিলে স্বাগত জানান মিতালী মুখার্জীকে। বাংলা সঙ্গীতের অনন্য এই শিল্পীকে ফুলেল শুভেচ্ছার পাশাপাশি পরিয়ে দেন উত্তরীয়। সংক্ষিপ্ত কথনে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলাদেশের সন্তান হয়ে সঙ্গীতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছেন মিতালী মুখার্জীÑএটা আমাদের গৌরব। গানে গানে বসন্তের রাতটি রাঙ্গানোর আগে কড়জোরে শ্রোতার প্রতি ভালবাসার জানান শিল্পী। পরিবেশনার আগে কথার মাধ্যমে শ্রোতার সঙ্গে ঘটান আপন সংযোগ। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, আমার সঙ্গীত জীবনে হাজার অনুষ্ঠান করেছি। তবে আজকের অনুষ্ঠানের কথাটি বিশেষভাবে মনে থাকবে। এই প্রথম শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে গান গাওয়ার সুযোগ পেলাম। ময়মনসিংহের সেই ছোট্ট মেয়েটি আজ পরিণত হয়ে গান শোনাতে এসেছে আপনাদের। এছাড়া আমি যতবারই বাংলাদেশে আসি আপ্লুত হয়ে পড়ি। পৃথিবীর অনেক দেশে গান করেছি কিন্তু কোথাও এত ভালবাসা পাইনি। ভাগ্যক্রমে সব শিল্পীরই কিছু গান অমর হয়ে যায়। আমারও হয়ত তেমন কিছু গান আছে শ্রোতারা শুনতে পছন্দ করে। পরিবেশনার প্রথমেই শিল্পী কণ্ঠে তুলে নেন বাঙ্গালীর মননের পথিক রবীন্দ্রনাথের গীতসুধা। বলেন, গানে গানে কবিগুরু জীবনের কথাই বলেছেন। আপনাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই জীবনের সেই অনুভবটুকু। এরপর শ্রোতার ইন্দ্রিয়ে শ্রবণের বিভোরতা ছড়িয়ে গেয়ে শোনানÑ পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়/ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়/আয় আর একটিবার আয় রে সখা প্রাণের মাঝে আয় ...। সুললিত কণ্ঠে গাওয়া শিল্পীর দ্বিতীয় গানের শিরোনাম ছিল ‘হারানো দিনের মতো হারিয়ে গেছো তুমি ফেরারী সুখের মতো’। মাধুর্যময় কণ্ঠের আনন্দময়তায় ভেসে যাওয়া শ্রোতার করতালিকে সঙ্গী করে গেয়ে শোনান ‘ওগো সাগর এই ছোট্ট চিঠি নিয়ে ভেসে যাও’। এরপর পরিবেশন করেন শ্রোতার হৃদয়ে কড়া নাড়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কাপ্রাপ্ত সেই গান ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’। এছাড়া একে একে গেয়েছেন ‘তোমার চন্দনা মরে গেছে’, ‘কেন আশা বেঁধে রাখি’সহ শ্রোতা আলোড়িত করা জনপ্রিয় গানগুলো। রবীন্দ্র সরোবরে একুশের অনুষ্ঠানমালা ॥ একুশের গান কবিতায় আলোড়িত হলো ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর। পথনাটক ও নৃত্য পরিবেশনায় ভাষাশহীদদের প্রতি নিবেদিত হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। শহীদ মিনারে চলমান একুশের অনুষ্ঠানমালাটি স্থানান্তরিত হলো রবীন্দ্র সরোবরে। একুশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানেই চলবে বাকি দিনের আয়োজন। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত দুই সপ্তাহব্যাপী এ অনুষ্ঠানের ১১তম দিন ছিল সোমবার। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় সূচনা হওয়া অনুষ্ঠানটি শেষ হয় রাত সাড়ে আটটায়। একাদশতম দিনের আয়োজনে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে আনন্দন, পঞ্চভাস্বর ও সমস্বরের শিল্পীরা। একক কণ্ঠে গান শোনান অলোক দাশ গুপ্ত, আরিফ রহমান, আবিদা রহমান সেতু ও আঁখি বৈদ্য। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে স্বরবৃত্তের বাচিক শিল্পীরা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন তামান্না তিথি, মাহমুদুল হাকিম তারভীর ও রাবেয়া পান্না। শিশু সংগঠন পরিবেশনায় অংশ নেয় তক্ষশীলা। অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার ॥ ১৪১৮ থেকে ১৪২৩ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত মোট ৬ বছরের অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হলো রবিবার। শিশু একাডেমির সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের নাম ঘোষণা করা হয়। কবিতা, ছড়াগান, প্রবন্ধ, গল্প-উপন্যাস, অনুবাদ, ভ্রমণকাহিনীসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ রবিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও পরিচালক শিশুসাহিত্যিক আনজীর লিটন এবং অগ্রণী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক আবুল বাসার সেরনিয়াবাত। ১৪১৮ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন রাশেদ রউফ ও খালেদ হোসাইন (কবিতা-ছড়া-গান); মোহিত কামাল (গল্প-উপন্যাস-রূপকথা); কাজী কেয়া (বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধ); তপন চক্রবর্তী (স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি) এবং নাসিম আহমেদ (বই অলংরণ)। ১৪১৯ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন হাসনাত আমজাদ (কবিতা-ছড়া-গান); দন্ত্যস রওশন (গল্প-উপন্যাস-রূপকথা); শেখ আনোয়ার (স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি); হানিফ খান (নাটক) এবং মনিরুজ্জামান পলাশ (বই অলকরণ)। ১৪২০ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন আখতার হুসেন (কবিতা-ছড়া-গান); দীপু মাহমুদ (গল্প-উপন্যাস-রূপকথা); সোহেল আমিন বাবু (বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধ); ফারুক হোসেন (অনুবাদ-ভ্রমণকাহিনী); আ শ ম বাবর আলী (নাটক) এবং বিপ্লব চক্রবর্তী (বই অলকরণ)। ১৪২১ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন রোমেন রায়হান (কবিতা-ছড়া-গান); ইমতিয়ার শামীম (গল্প-উপন্যাস-রূপকথা); তপন বাগচী (বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধ); মনসুর আজিজ (স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি) এবং মোমিন উদ্দীন খালেদ (বই অলকরণ)। ১৪২২ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন পলাশ মাহবুব (কবিতা-ছড়া-গান); ইমদাদুল হক মিলন (গল্প-উপন্যাস-রূপকথা); রীতা ভৌমিক (বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধ); ড. আলী আসগর (স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি); মাহফুজুর রহমান ও হাসান খুরশীদ রুমী (অনুবাদ-ভ্রমণকাহিনী); আশিক মুস্তাফা (নাটক) এবং সব্যসাচী মিস্ত্রী (বই অলকরণ)। ১৪২৩ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন মারুফুল ইসলাম ও আহমাদ উল্লাহ (কবিতা-ছড়া-গান); মোশতাক আহমেদ (গল্প-উপন্যাস-রূপকথা); শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী (বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জীবনী প্রবন্ধ); ডাঃ মিজানুর রহমান কল্লোল ও মশিউর রহমান (স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি); জামিল বিন সিদ্দিক (অনুবাদ-ভ্রমণকাহিনী); আবুল মোমেন (নাটক) এবং উত্তম সেন (বই অলকরণ)।
×