ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

২২ ফেব্রুয়ারি বৈধ হওয়ার শেষ দিন

কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস অবৈধদের পাসপোর্ট দেবে

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাস অবৈধদের পাসপোর্ট দেবে

ফিরোজ মান্না ॥ অবৈধ অভিবাসীর হাতে ৭ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট তুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে কুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। ৫ ফেব্রুয়ারি কুয়েতে অবৈধ অভিবাসীর জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার চার দিনের মাথায় দূতাবাস এ ঘোষণা দিল। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি কর্মীদের বৈধ হওয়ার শেষ দিন। এই সময়ের মধ্যে যাদের বৈধ আকামা নেই, সময়মতো যারা আকামা নবায়ন করতে পারেনি, যারা কখনও আকামা লাগাতে সক্ষম হননি তারাও এ সুবিধা নিতে পারবেন। এছাড়া সেসব অবৈধ অভিবাসী নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পুরাতন পাসপোর্ট কপি বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি অথবা জন্ম সনদের ফটোকপি বা নিজ এলাকার চেয়ারম্যান কর্তৃক নাগরিক সনদ দাখিল করতে হবে। সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈধ হওয়ার সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এই সময়ের পরে কেউ বৈধ হতে না পারলে দেশে ফিরতে হবে। সাধারণ ক্ষমার ঘোষণায় দেশটিতে অবৈধভাবে বসবাসরত হাজার হাজার বাংলাদেশী বৈধ হওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা দেয়া শুরু করেছেন। ঘোষণার আওতায় ২৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশী কর্মী বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। কুয়েতের সাধারণ ক্ষমার বিষয়ে বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা বলেন, প্রতিটি শ্রম বাজারেই এ রকম একটি বিষয় থাকে। প্রতিবছরই অল্প কয়েকদিন সময় বেঁধে দেয়া হয় অবৈধদের বৈধ হওয়ার জন্য। কুয়েতও তাই করেছে। বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক। কুয়েতে বাংলাদেশী কর্মীরা ভাল বেতনে কাজ করেন। অবৈধ বৈধ হলে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়বে। কুয়েতে কর্মরত কয়েক কর্মী টেলিফোনে জানান, দেশটিতে বাংলাদেশী প্রায় ৩ লাখ লোক বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। এখান থেকে প্রতিবছরই কিছু লোক অবৈধ হয়ে পড়েন। তারা আবার কুয়েত সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলে বৈধ হওয়ার সুযোগ পান। ২০১৭ সালে দেশটির সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা না করায় বহু লোককে দেশে ফিরতে হয়েছে। তবে এর আগের বছর দেশটির সরকার কর্মীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলে ৩০ হাজারের বেশি কর্মী বৈধ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। এক বছর বাদ দিয়ে এবার আবার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুযোগ থাকবে অবৈধ বসবাসকারীর জন্য। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশীরাও এই সুযোগ নিতে পারবেন। দেশটিতে অবৈধভাবে থাকা ২৫ হাজারের বেশি কর্মী বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। কয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস কুয়েত সরকারের সাধারণ ক্ষমার বিষয়টি কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য ফেসবুক পেজসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। দূতাবাস প্রচারপত্র ও মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে কর্মীদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ কাজে লাগানোর আহবান জানাবে। ইতোমধ্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে কর্মীদের কাছে এসএমএস পাঠানো শুরু হয়েছে। ফেসবুক খোলার বিষয়ে দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেয়ার জন্য চিঠি লেখা হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই ফেসবুক পেজ খোলা হবে। কুয়েত সরকার সর্বশেষ ২০১৬ সালে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল। মাঝখানে এক বছর কেটে যাওয়ার পর চলতি বছর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করল। ২০১৬ সালে সাধারণ ক্ষমায় ৩০ হাজারের বেশি কর্মী বৈধ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। এবার দেশটিতে ২৫ হাজারের বেশি অবৈধ কর্মী রয়েছে। যারাই এ সুযোগ হাত ছাড়া করবে তাদেরই দেশে ফিরে আসতে হবে।
×