ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা কাপ ফুটবল;###;প্রতিপক্ষ আরামবাগ, চট্টগ্রাম আবাহনী রহমতগঞ্জ ১-০

ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনী

রুমেল খান ॥ স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের দ্বিতীয় দল হিসেবে ফাইনালে ওঠেছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী। এর ফলে শিরোপা অক্ষুণœ রাখার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বন্দরনগরীর এই দলটি। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ঘটনাবহুল ম্যাচে পুরনো ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখে চট্টগ্রাম আবাহনী। পেনাল্টি থেকে প্রথমার্ধের ৪৭ মিনিটে (সংযুক্তি সময়, ৪৫+২ মিনিটে) গোলটি করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ফরোয়ার্ড সাখাওয়াত হোসেন রনি। এর ফলে ১২ দলের অংশগ্রহণে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠলো গ্রুপ ‘ডি’র দুই দল চট্টগ্রাম আবাহনী ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। উল্লেখ্য, গ্রুপপর্বে এই দুই দল কোন জয় ছাড়াই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি একই মাঠে বিকেল চারটায় ফাইনালে মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম আবাহনী ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। এবারের আসরে ‘ডি’ গ্রুপে হয়তো ভর করেছিল বৃহস্পতি। কারণ একই গ্রুপের দুই দল এবার খেলছে ফাইনাল। গ্রুপপর্বের দেখায় আরামবাগ আর চট্টগ্রাম আবাহনী ১-১ গোলে ড্র করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। চট্টগ্রাম আবাহনী এই আসরের বর্তমান শিরোপাধারী হলেও আরামবাগ এই আসরে এবারই প্রথমবার ফাইনালে খেলছে। মঙ্গলবারের ম্যাচে কর্নার পায় রহমতগঞ্জ ৫টি এবং আবাহনী ৮টি করে। আক্রমণ সংখ্যায় এগিয়ে ছিল আবাহনীই (১০৭-১০১)। বিপজ্জনক আক্রমণেও তাই (১০৫-৭৪)। অন টার্গেটে শট নেয়ার বেলাতেও তাই (১২-৫)। ১১ মিনিটে প্রথম সুযোগ এসেছিল রহমতগঞ্জের। কিন্তু মোঃ হেলাল বারের ওপর দিয়ে বল মেরে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ৩০ মিনিটে বক্সের প্রায় বিশ গজ দূর থেকে মামুনুল ইসলামের ফ্রি কিক বক্সে হেডে ক্লিয়ার করেন রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডাররা। ৩৪ মিনিটে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে একবার জালে বল পাঠিয়েও গোলবঞ্চিত হয় চট্টগ্রাম আবাহনী। মামুনুলের ফ্রি কিক থেকে হেডে গোলটি করেছিলেন সাখাওয়াত হোসেন রনি। ৩৯ মিনিটে সুশান্ত ত্রিপুরার ক্রস প্রথমে গোলরক্ষক ফেরাতে গিয়ে ফ্লাইট মিস করলে ডিফেন্ডার মোজাম্মেল হোসেন নীরা লাফিয়ে উঠে ক্লিয়ার করতে গেলে বল তার হাতে লাগে। যদিও রহমতগঞ্জের দাবি ছিল এটি হ্যান্ডবল হয়নি। রেফারি হ্যান্ডবল এবং পেনাল্টির নির্দেশ দিলে রেফারির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ডাগআউট ছেড়ে মাঠের ভেতর ঢুকে পড়েন রহমতগঞ্জের কোচ কামাল বাবু। রেফারির সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি (ম্যাচ শেষে অবশ্য তিনি দাবি করেন- নিজ দলের উত্তেজিত খেলোয়াড়দের শান্ত করতেই মাঠে ওভাবে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি)। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ দলের মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামও কামাল বাবুর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়লে ম্যাচে দেখা দেয় উত্তেজনা। মামুনুলকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। প্রায় ৫ মিনিটের মতো ম্যাচ বন্ধ থাকার পর শেষ পর্যন্ত পেনাল্টির সিদ্ধান্ত মেনে নেয় রহমতগঞ্জ। রনির স্পট কিকে এগিয়ে যায় আবাহনী (১-০)। প্রথমার্ধে ১০ মিনিট অতিরিক্ত সময় যোগ করা হয়। ৬৮ মিনিটে আবাহনীর বক্সে ঢুকে পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন রহমতগঞ্জের একজন ফুটবলার, কিন্তু বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। পরের মিনিটে সাদ্দাম হোসেন এ্যানির কর্নার বক্সে ক্লিয়ার করে আবাহনীর রক্ষণভাগ। ৭৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় রহমতগঞ্জ। বদলি মিডফিল্ডার মোঃ ইলিয়াসের স্পট কিক দক্ষতার সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়ে দলকে রক্ষা করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক ও দলীয় অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম রানা। ৭৭ মিনিটে সোহেল রানাকে অবৈধভাবে বাধা দিয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লালকার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডার সাদ্দাম হোসেন এ্যানি। দশ জনের দলে পরিণত হয় রহমতগঞ্জ। তবে শেষ পর্যন্ত আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী। তাই ১-০ গোলের জয়ে ফাইনালের টিকেট পায় বন্দরনগরীর দলটি। চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরে প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের ফাইনালে রহমতগঞ্জকে নিতে পারলেন না কামাল বাবু, যেমনটি ফরাশগঞ্জকে নিয়ে গিয়েছিলেন ২০১১ আসরে।
×