ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আদালতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে র‌্যাবের মহড়া

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আদালতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে র‌্যাবের মহড়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আদালতের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ যেকোন ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজধানীর বকশীবাজারে অস্থায়ী আদালত প্রাঙ্গণে র‌্যাব বিশেষ মহড়া দিয়েছে। মানুষের মধ্যে খালেদা জিয়ার রায় উপলক্ষে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এজন্য রাজধানীসহ সারাদেশেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সারাদেশে চলছে বিশেষ অভিযান। অভিযানে তিন শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টায় বকশীবাজার কারা অধিদফতরের মাঠে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব সদস্য উপস্থিত হন। সঙ্গে ছিল নানা সরঞ্জাম। পুরো মাঠে তল্লাশি চালানো হয়। গাড়ি দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে পুরো এলাকা কর্ডন করে রাখা হয়। আদালতে স্থাপিত পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা তখন যথারীতি দায়িত্ব পালন করছিলেন। পুলিশ ও র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি এই আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় হওয়ার দিনক্ষণ ধার্য রয়েছে। সেদিনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে র‌্যাব-১০ এর শীর্ষ কর্মকর্তারা সশরীরে উপস্থিত হয়ে মহড়া দিয়েছেন। আদালত প্রাঙ্গণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন র‌্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যেই আদালতের চারদিক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। নিয়মিত পুরো এলাকা নজরদারি করা হচ্ছে। আদালতে প্রবেশের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জনকণ্ঠকে বলেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সারাদেশের মানুষের মধ্যেই বাড়তি আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। মানুষ অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। এজন্য সারাদেশেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যাতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দূর হয়। টহল বাড়ানো হয়েছে। আদালত প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মহড়া দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, শুধু আদালতসহ আশপাশের এলাকা নয়, সারাদেশেই নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত জেলাগুলোতে বাড়তি ফোর্স পাঠানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যেকোন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবেলায় জঙ্গী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। গত ৩০ জানুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা শেষে ফেরার পথে হাইকোর্টের সামনে পুলিশের ওপর হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। লাঠিসোটা, ইটপাটকেল দিয়ে নির্মমভাবে পুলিশকে আহত করা হয়। পুলিশের প্রিজনভ্যান ও পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। প্রিজনভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা সোহাগ মজুমদার (৩৮) ও ওবায়দুল হক মিলনকে (৪০)। হামলাকারীরা প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় ধরে হাইকোর্টসহ আশপাশের এলাকায় একটানা তা-ব চালিয়ে রীতিমত রণক্ষেত্র সৃষ্টি করে। এমন ঘটনায় শাহবাগ ও রমনা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। এরপর থেকেই হামলার সঙ্গে সরাসরি ও নেপথ্যে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বলেছেন, চলমান অভিযানে গ্রেফতারের সঙ্গে রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই। হাইকোর্টে যারা হামলার সঙ্গে জড়িত, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের কোন সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
×