স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ সেচের জন্য পাতালের পানির চাপ কমিয়ে ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহারে বগুড়ায় খাল খনন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটি হবে সম্পূরক সেচ। এইসব খালের সঙ্গে রিইনফোর্সসেন্ট সিমেন্ট কংক্রিটের (আরসিসি) আড়াআড়ি বাঁধ (ক্রস ড্যাম) নির্মাণ করে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হবে। শুধু শুকনো মৌসুম নয় ভরবছর কৃষক খালের সম্পূরক সেচ দিয়ে সকল ধরনের আবাদ করতে পারবে। মাছ চাষও করতে পারবে। বগুড়া অঞ্চলে প্রতিটি উপজেলায় ভূউপরিস্থ পানির প্রাপ্যতায় পর্যায়ক্রমে একশ’ কিলোমিটারেরও বেশি খাল খনন করা হবে।
সোনাতলা উপজেলায় ৪৭ বছর আগে মরে যাওয়া গজারিয়া খালের গভীরতায় খনন শুরু হয়েছে গেল জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে। বর্তমানের দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৮ কিলোমিটার। ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে এক কোটি টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে খাল খনন কাজ বাস্তবায়ন করছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। উল্লেখ্য, আগে শুধু রাজশাহী ও নওগাঁ জেলাকে বরেন্দ্র অঞ্চল বলা হতো। এরপর রাজশাহী বিভাগের সকল জেলা বরেন্দ্র অঞ্চলের আওতায় আসে। গেল বছর থেকে রংপুর বিভাগকেও বরেন্দ্র অঞ্চলের আওতায় নেয়া হয়েছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যেভাবে খাল খনন করে ক্রস ড্যাম নির্মাণ করে একইভাবে বগুড়া অঞ্চলেও খালের সঙ্গে একাধিক পয়েন্টে ক্রস ড্যাম নির্মাণ করা হবে। ক্রস ড্যামগুলো হবে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার বড় আধার। বৃষ্টির পানি ভরবছর যাতে থাকে সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। লোকজন বৃষ্টির পানি নিজেদের ট্যাঙ্কে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে সুপেয় পানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বগুড়া জোনের সহকারী পরিচালক মুক্তাদিউর রহমান জানান, খাল খননের মূল উদ্দেশ্য পাতালের পানির ওপর চাপ কমিয়ে ভূউপরিস্থ পানির (সারফেস ওয়াটার) সফল ব্যবহার। মূলত এটি সম্পূরক সেচ। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর নিজ উদ্যোগে কৃষি মন্ত্রণালয় ভূগর্ভস্থ পানির গভীরতা ঠিক রাখতে দেশজুড়ে খাল খননের উদ্যোগ নেয়। তারপর সম্পূরক সেচের পরিকল্পনা নিয়ে খাল খনন কার্যক্রম শুরু হয়। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পূর্বের বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁ ও রাজশাহীর মডেলকে সামনে রেখে বগুড়া অঞ্চলের মাটির উপযোগী করে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। সম্পূরক সেচের সুবিধা যাতে মাঠ পর্যায়ের সকল কৃষক পায় সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কৃষক শুকনো মৌসুমে শ্যালো ইঞ্জিন চালিয়ে সেচ দিতে পারে। যেখানে খাল খনন করা হবে তার আশেপাশের এলাকার কৃষক তাদের সুবিধামতো পদ্ধতিতে এই পানি জমিতে নিয়ে যেতে পারে। এর মাধ্যমে ভরবছর তারা তাদের জমিতে ফসল ফলাতে পারে। ক্রস ড্যাম অংশ ছাড়া এই খালে মাছ চাষ করা যাবে। বিএমডিএর অনুমতি নিয়ে সম্পূরক সেচের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে শর্ত সাপেক্ষে মাছ চাষ করা যাবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: