স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্লিনিক ও আশপাশের ভবনের ভিডিও ফুটেজ, অফিসের নানা অনিয়ম ও মোবাইল কললিস্ট দেখে মধ্যবাড্ডায় হায়দার ডেন্টাল ক্লিনিকের রিসিপশনিস্ট লিজা আক্তারের (২১) খুনের রহস্যদ্ঘাটনের জন্য মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে পুলিশ ক্লিনিকের মালিক নজরুল ও কেয়ারটেকারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এদিকে ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই খুনের ক্লু ও জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি।
শনিবার সন্ধ্যায় বাড্ডা থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোঃ নজরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, ক্লিনিকের অফিস সংক্রান্ত নানা অনিয়ম, স্থানীয় বখাটের উৎপাতসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় রেখেই ক্লিনিকের রিসিপশনিস্ট লিজা খুনের রহস্য উদ্ঘাটনে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে সিআইডি, র্যাব, ডিবি ও থানা পুলিশের এসির নেতৃত্বে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। তবে এই কর্মকর্তা জানান, ক্লিনিক ও এর আশপাশ ভবনের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যম ব্যবহার করছে সিআইডি ক্রাইম সিন। লিজার মোবাইল কললিস্ট তাদের হাতে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অচিরেই লিজার খুনের রহস্য বেরিয়ে আসবে। পুলিশ পরিদর্শক নজরুল জানান, তবে এখনও পর্যন্ত এই খুনের কোন ক্লু খুঁজে পাননি। বাড্ডা থানার পরিদর্শক তদন্ত নজরুল ইসলাম আরও জানান, পারিবারিক জীবনে লিজা অনেক সুখী ছিলেন বলে জানতে পেরেছি। পারিবারিক বিষয়টি এখনও তদন্তে আনা হয়নি। পরবর্তীতে এই বিষয়টি তদন্তে আনা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মধ্যবাড্ডায় হায়দার ডিজিটাল ডেন্টাল ক্লিনিকের অফিস কক্ষে রিসিপশনিস্ট লিজা আক্তার নৃশংসভাবে খুন হন। শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে লিজার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান। মর্গের সামনে নিহত লিজার শ্বশুর মজিবুর রহমান জানান, দুই বছর আগে ছেলে আরাফাত রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় লিজার। তিনি জানান, তিন মাস আগে ওই ক্লিনিকে চাকরি নেয় লিজা। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার ডিউটিতে আসে। ওইদিন দুপুরে ক্লিনিকের মালিক মোবাইলে ফোন করে জানায়, লিজা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সেখানে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় লিজার মরদেহ পড়ে আছে। নিহতের স্বামী আরাফাত হোসেন জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়। দুপুরে ক্লিনিকে লিজা একাই ছিলেন। পরে ক্লিনিক থেকে তাকে মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, হত্যার সময় লিজাকে পেছন দিক থেকে আঘাত করা হয়েছে। তার পিঠে ১১টি ক্ষতচিহ্ন, দুই হাতের কব্জি, পেটে দুটি ও ডান কানের নিচে দুটি জখমের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে হত্যার সময় লিজা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। হত্যাকারী তাকে পেছন থেকেই ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: