ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কাস্টমস দিবসের সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান

ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮

ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ২০২০-২১ সালের ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। একই সঙ্গে সে সকল প্রতিষ্ঠানে বকেয়া রাজস্ব আদায়ের ওপর জোর দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে এনবিআর সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, প্রতি বছর সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা করছে। জিডিপির আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নয়ন পরিকল্পনা আর জিপিডির আকারের সঙ্গে ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেসব দেশে ট্যাক্স জিডিপি রেসিও ভাল তাদের বিদেশী নির্ভরতা কম থাকে। আমাদের টার্গেট রয়েছে বর্তমান যে ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত ১১ শতাংশ রয়েছে তা থেকে ২০২০-২১ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর মানে এই না আমরা মানুষকে চাপ দিয়ে, কষ্ট দিয়ে রাজস্ব আহরণ করে ট্যাক্স জিপিডি বাড়াব। আমাদের একটা লক্ষ্য থাকবে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল এ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট না হলে দেশ এগিয়ে যেত না, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো না। দেশে অর্থের প্রবাহ, অর্থনীতির আকার বাড়ছে বলে রাজস্ব আদায় হচ্ছে। বকেয়া রাজস্ব আদায় নিয়ে বলেন, যাদের কাছ থেকে বকেয়া পাওয়া রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করতে হবে। জোর-জুলম করে আমরা রাজস্ব আয় করতে চাই না। ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক উপায়ে পাওনা আদায়ে চেষ্টা করতে হবে। আমি কারও মুখ দেখে কোনও কাজ করব না। সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে রাজস্ব পাওয়া নিয়েও কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা এই সকল বকেয়া রাজস্ব আদায় করে সরকারের রাজস্ব বাড়াব। কর ও শুল্কে রেয়াত সুবিধা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, শুধু খুব প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই রেয়াত সুবিধা থাকবে। আস্তে আস্তে এই রেয়াত সুবিধা থেকে বের হতে হবে। কারণ, আমরা তো এখন শিশু নই। ব্যবসায়ীরাও শিশু নন। সব ক্ষেত্রেই আমাদের পরিপক্কতা এসেছে। কাজেই সবাইকে রেয়াত দেয়ার প্রথা বন্ধ করতে হবে। আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দেশনা আছে, মাফ করার সংস্কৃতি আমাদের কমিয়ে ফেলতে হবে। কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা ট্রেড ফ্যাসিলেটেড করব। ট্রেড ফ্যাসিলেটেশনের ফলে যদি ব্যবসায়ীরা ভাল করে তাহলে রাজস্ব বেড়ে যাবে। আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস আজ। সারাবিশে^র মতো দেশেও জাঁকজমকভাবে পালন করা হবে দিবসটি। ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরাপদ বাণিজ্য পরিবেশ’ প্রতিপাদ্যে নিয়ে দিবসটি পালনের জন্য সারাদেশে পৃথকভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের নানা দিক তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। আজ শুক্রবার সকালে রাজস্ব বোর্ডের সামনে থেকে র‌্যালি বের হবে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার দেয়া হবে এ ছাড়াও সন্ধ্যায় একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে যেখানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানসহ ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়। জনগণকে কাস্টমস বিষয়ে সচেতন করাই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য বলেও জানান চেয়ারম্যান। কাস্টমস দিবস নিয়ে চেয়ারম্যান আরও বলেন, দ্রুত ও কম খরচে পণ্য খালাস এবং কার্যকর নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের মাধ্যমে নিরাপদ বাণিজ্য নিশ্চিতের মাধ্যমে দেশের চলমান উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা বর্তমান কাস্টমসের মূল লক্ষ্য। এ জন্য কাস্টমস প্রশাসনে অটোমেশনসহ নানামুখী আধুনিকায়ননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের সব কটি বড় কাস্টমস বন্দরে কন্টেনার স্ক্যানার ও আর্চওয়ে ডিটেক্টর স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান। মানিলন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে কোথাও কোন তথ্য পেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে অথরিটি গঠন করা হয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিায়াল উইনিট নামের সঙ্গে রাজস্ব বোর্ড সমন্বয় করবে বলেও জানানো হয়। এ সময় এনবিআর ও কাস্টমসের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×