স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পীর ক্যানভাসে নানা অভিব্যক্তিতে উদ্ভাসিত হয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রং-তুলির আঁচড়ে কখনও তিনি জাতির পথের দিশারী, কখনও স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া তেজস্বী নেতা। সেই তিনিই আবার চিত্রকলায় প্রকাশিত হয়েছেন হাস্যোজ্জ্বল তারুণ্যের প্রতীক কিংবা ¯েœহময় পিতা হিসেবে। শেখ আসমানের আঁকা এমন সব ছবিতে সাজানো চিত্রকর্ম প্রদর্শনীটির শিরোনাম ‘পুরুষোত্তম’। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের উপজীব্য করে সৃষ্ট প্রদর্শনীটি চলছে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারিতে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ১০ জানুয়ারি সূচনা হওয়া এ প্রদর্শনীর আয়োজক ইয়থ বাংলা কালচারাল ফোরাম।
মূলত বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছবি উঠে এসেছে কাগজে কাঠখোদাই মাধ্যমের চিত্রকর্মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শীর্ষক সিরিজ চিত্রকর্মে রয়েছে বেশকিছু ছবি। তার পাশাপাশি রয়েছে ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের চিত্রকর্ম নিয়ে আরেকটি সিরিজ চিত্রকর্ম, শিল্পী যার নাম দিয়েছেন বাংলার তর্জনী। রয়েছে আশীর্বাদ নামের আরেকটি সিরিজ। এর পাশাপাশি ঠাঁই পেয়েছে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্মৃতিমাখা বেশ কিছু চিত্রকর্ম।
শিল্পী শেখ আসমান জানান, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পঁয়তাল্লিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে তার এই প্রয়াস। বাংলাদেশে চিত্রচর্চায় কাঠখোদাই মাধ্যমটি খুব বেশি প্রচলিত নয়। এছাড়া এই মাধ্যমে এত বড় ক্যানভাসে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও পরিবারিক জীবনের উপস্থাপনা এটাই প্রথম। ছবিগুলো সাধারণ দর্শনার্থী ও বোদ্ধামহলের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হলেই শিল্পীর অর্ধদশকের নিরবচ্ছিন্ন শ্রম সার্থকতা পাবে বলে মনে করেন তিনি।
এ প্রদর্শনী চলবে আগামী ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের নাট্যভাষ্য ‘স্বর্ণজননী’ ॥ মুক্তিযুদ্ধের সময় অগ্নিকা-ে দগ্ধ নারীদের জীবনকাহিনী নিয়ে নির্মিত নাটক ‘স্বর্ণজননী’। উৎস নাট্যদল প্রযোজিত নাটকটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয়। মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের এ নাট্যভাষ্য রচনা করেছেন মান্নান হীরা। নির্দেশনা দিয়েছেন ইমরান হোসেন ইমু।
যুদ্ধকালীন সময়ে নির্যাতিত ও অগ্নিদগ্ধ নারীদের জবানবন্দী কাল্পনিকভাবে নাটকটিতে তুলে ধরা হয়েছে। দেশটাকে স্বাধীন করেও আমরা কি পেলাম আর মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনা নারীরা কি তাদের নিজ ভিটায় পা রাখতে পেরেছে বা ’৭১-এ তারা যে স্বপ্নে বিভোর ছিল তাদের সেই স্বপ্ন কি আদৌ পূরণ হয়েছে এমন বিষয়গুলো নাটকটি উপস্থাপিত হয়েছে। কুশীলবদের অভিনয় ও সংলাপে বারবারই ফিরে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগাঁথা ও তাদের হৃদয়ে লালিত স্বপ্নের কথা। যে উদ্দেশ্যে বাংলার দুই লাখ নারী তার শ্রেষ্ঠ ঐশ্বর্য বিসর্জন দিয়েছে। যুবক সন্তাদের হারিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে তাদের সেই উদ্দেশ্য কি সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে এমন ঘটনাই বারবার ফিরে এসেছে নাটকটির গল্পে।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাকিবুল ইসলাম, ইমরান হোসেন ইমু, অর্ক আহমেদ রিপন, তুরজানা ইসলাম আশা, বাপ্পা রায়, লিটন, মাইন উদ্দিন রাজা, তাসলিমা আক্তার লিজা, বিল্লাল হোসেন রিমন প্রমুখ।
যুগলবন্দী পরিবেশনায় হারানো দিনের গান ॥ শিল্পকলা একাডেমিতে বৃহস্পতিবার বসেছিল হারানো দিনের গানের আসর। যুগলবন্দী পরিবেশনাটি অনুষ্ঠিত হলো একাডেমির সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে। গান শোনালেন সাদিয়া মোশাররফ ও তন্ময় মতিন। ‘সুরের মূর্ছনায় সাদিয়া ও তন্ময়’ শীর্ষক এ সঙ্গীতসন্ধ্যার আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
আয়োজনের শুরুতেই শিল্পীদ্বয় দ্বৈতকণ্ঠে পরিবেশন করেন নজরুলের বিখ্যাত গান ‘আমার নয়নে নয়ন রাখি’। সুরের এ অমিয় পরিবেশনা শেষে ছিল একক কণ্ঠে গান। তন্ময় মতিন পর পর দুটো গান পরিবেশন করেন। এরপর আবার দ্বৈত পরিবেশনা। তারপর একক কণ্ঠে গান তুলে নেন সাদিয়া মোশাররফ। শিল্পীরা দ্বৈত কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘ময়ূরকণ্ঠী রাতের নীলে’, ‘ইয়ে রাত ভিগি ভিগি’, ‘আমার এ গানে স্বপ্ন যদি আনে’, ‘আজা সনম মাধুর চান্দনীকে হাম তুম মিলেতো’, ‘রানজিশ হি সাহি’ ও ‘আপনি ধুনে মে রেহতা হু’ গানগুলো।
সাদিয়া মোশাররফ একক কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘বেঁধেছি বীণা গান শোনাবো’, ‘কি লিখি তোমায়’, ‘আমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না’, ‘গান হয়ে এলে’, ‘মনেরও রঙে রাঙাবো’, ‘এ দিল মুঝে বাতা দে’, ‘ফির সাওয়ান রাত কি পাবান’ ও ‘শুকুতে শাম মিটাও’। তন্ময় মতিন একক কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘যদি কিছু আামরে সুধাও’, ‘বারে বারে কে যেন ডাকে’, ‘নয়নও সরসী’, ‘জিন্দেগীভার নেহি ভুলেগি’, ‘কেন তুমি ফিরে এলে’, ‘কে তুমি তন্দ্রাহরণী’ ও ‘নাওয়াজিশ কারাম’।