ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাঠ পর্যায়ের ব্যবস্থা চুক্তির আশা

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল নেপিডোয়

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল নেপিডোয়

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক আজ সোমবার নেপিডোয় অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকে যোগ দিতে রবিবার মিয়ানমার পৌঁছেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। বৈঠকে ফিজিক্যাল এ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি (মাঠ পর্যায়ে বাস্তব ব্যবস্থা) সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে যোগ দিতে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রবিবার মিয়ানমার পৌঁছেছে। বাংলাদেশ থেকে ১৪ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুবকর ছিদ্দীক, কক্সবাজারের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (শরণার্থী) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনিরুল ইসলাম আখন্দ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক মনজুরুল করিম খান চৌধুরী প্রমুখ রয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ দুই দেশের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে সব ধরনের উদ্যোগ নেবে। গত ২৩ নবেম্বর নেপিডোয় উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকে এই ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। এখন উভয় দেশ ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট সই করবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে ঢাকায় এক বৈঠকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। এই যৌথ গ্রুপ রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন শুরু করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নেবে। দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে ১৫ জন করে সদস্য নিয়ে মোট ৩০ সদস্যের এ গ্রুপ গঠন করা হয়। রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা। সেনাবাহিনী অভিযান এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে শরণার্থীদের ফেরত নিতে সম্মত হয় মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার পথ তৈরি করতে গত ২৩ নবেম্বর নেপিডোয় দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ অক্টোবর সেনা অভিযানের মুখে ৮৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আর চলতি বছর ২৫ আগস্টের পর নতুন করে বাংলাদেশে আসে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে জাতিগত দমনপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী জীবন কাটাচ্ছে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। বাংলাদেশের আহ্বানে ১৯৯২ সালে দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তির আওতায় মিয়ানমার কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিলেও পরে আর সেই প্রক্রিয়া এগোয়নি।
×