ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

লিলিপুটদের গ্রাম

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

লিলিপুটদের গ্রাম

জনাথন সুইফটের লেখা ‘গালিভার্স ট্রাভেল’ এর গল্পগুলোর কথা মনে আছে ? এক দেশের সব মানুষেরা ছিল অনেক ছোট আকারের। গালিভারের হাতের তালুতে একসঙ্গে তুলে নেয়া যেত এমন কয়েক জনকে। গালিভার্স ট্রাভেলের সেই কাহিনী রূপকথা হলেও বাস্তবেও কিন্তু এমন ক্ষুদে মানুষেরা ছিলেন। ক্ষুদে মানুষদের ছিল পুরো একটি গ্রাম। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাখুনিক নামের এক গ্রাম আছে যেখানে প্রায় এক শ’ বছর আগে দেখা যেত বামন বা ক্ষুদে মানবদের। আফগান সীমান্ত থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরের এ গ্রাম প্রায় দেড় হাজার বছর পুরনো। সেসময় এই গ্রামে যেসব মানুষেরা ছিলেন তাদের গড় উচ্চতা ছিল বর্তমান সময়ের মানুষদের গড় উচ্চতা থেকে অন্তত ৫০ সেন্টিমিটার কম। ২০০৫ সালে এ গ্রাম থেকে একটি মমি পাওয়া যায় যার উচ্চতা ছিল মাত্র ২৫ সেন্টিমিটার। এরপর থেকেই এ অঞ্চলে বামনদের বসবাস ছিল বলে এক রকম নিশ্চিত হন বিশেষজ্ঞরা। শুধু মাখুনিকই না বরং আশপাশে আরও অন্তত ১২টি গ্রামে এমন বামনরা এক সময় বাস করত বলে ধারণা করেন তারা। অপুষ্টি এবং কৃষিকাজের জন্য এ অঞ্চল উপযুক্ত না হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষদের উচ্চতা ছিল কম। শুধু মানুষই না বরং পশুদেরও এ অঞ্চলে বেড়ে ওঠা অনেক কঠিন। শালগম, বার্লি, জুজুবি নামের এক ধরনের খেজুরের মতো ফল আর সামান্য কিছু শস্য ছাড়া আর কিছু চাষাবাদ করা যায় না এ অঞ্চলে। সাধারণ ধরনের কিছু সবজির খাবার দিয়েই চলতে হত মাখুনিক গ্রামের বাসিন্দাদের। এমনকি সেসময় চা পান করাকেও ভালভাবে দেখা হত না। ৬১ বছর বয়সী এ গ্রামের বাসিন্দা আহমাদ রাহনামা বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম তখন এ গ্রামের কেউ চা পান করত না। যদি কেউ করেও ফেলত তাহলে তাকে নিয়ে বাকিরা হাসাহাসি করত। আর ভাবত সে মনে হয় মাদকাসক্ত’। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে মাখুনিক গ্রামে প্রথম পাকা সড়ক নির্মিত হয়। এরপরেই মূলত এ গ্রামে চাল-মাংসের মতো বাইরের অঞ্চলের খাবার প্রবেশ করতে শুরু করে। বিবিসি অবলম্বনে।
×