ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

শীতের প্রভাবে দর্শকখরা বাণিজ্যমেলায়

প্রকাশিত: ০৬:২১, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

শীতের প্রভাবে দর্শকখরা বাণিজ্যমেলায়

ওয়াজেদ হীরা ॥ পৌষের শীতে থর থর করে কাপছে গোটা দেশ। শীতের তীব্রতায় ভেঙ্গে গেছে গত ৫০ বছরের ইতিহাসও। জনজীবন বিপর্যস্ত। আর এই শীতের প্রভাব পরেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়ও। গত দুইদিন যাবত অনেকটাই কমে এসেছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। মেলার বিনোদন দূরে থাক, খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকেই বেড় হচ্ছে না। আর তাতেই অনেকটা ফাঁকা বাণিজ্যমেলার মাঠ। ভুগছে দর্শক খরায়। গত কয়েকদিন ধরেই দেশব্যাপী শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শীতের ধাক্কা খাচ্ছে রাজধানীবাসীও। গত ৫০ বছর পর দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হয়েছে সোমবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৫। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরেই থাকতে পছন্দ করছে। বাণিজ্যমেলায় ঘুরে দেখা যায়, নিরাপত্তা কর্মী, মেলার দায়িত্বরত ব্যক্তি ও বিভিন্ন স্টল প্যাভিলিয়নের বিক্রয়প্রতিনিধিরা এসেছেন ঠিকই মেলায়। তবে ক্রেতা দর্শনার্থীদের আনাগোনা একেবারেই কম। বিকেল তিনটা পর্যন্ত দর্শনার্থী বলতে সামান্যই বলতে হবে। বিক্রয়প্রতিনিধিরা আয়েশ করে নিজ নিজ স্টলে আড্ডা দিচ্ছেন। সুরভী শারমিন নামের বিক্রয় প্রতিনিধি জানালেন, দায়িত্বের কারণেই মেলায় আসা নয়ত শীতের কম্বল জড়িয়ে শুয়ে থাকতাম। মেলার ভেতর ও বাহিরে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলার বাহিনীরাও আছেন দায়িত্বে কারণেই। শীতের পোষাক গায়ে জড়িয়ে নিরাপত্তায় ব্যস্ত তারা। বিভিন্ন টিকেট বুথে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিকেট বিক্রয় সামান্নই। কোন সংখ্যা না বললেও একাধিক বুথের কর্মীরা জানান সর্বশেষ দুইদিনে টিকেট বিক্রি একেবারেই কমে গেছে। এদিকে, শীতের এই তীব্রতা উপেক্ষা করে যারা মেলায় এসেছেন তারা ঘুরাঘুরি করেই সময় পার করেছেন। গরম কাপড় গায়ে জড়িয়েই মেলায় এসেছেন দর্শনার্থীরা। পর্যাপ্ত শীতের কাপড় জড়িয়ে মেলায় আসা তারিকুল হাসান বলেন, শীতের তীব্রতা জেনেও আসলাম। বাতাসের কারণে এখন আরও বেশি মনে হচ্ছে। তবে ফাঁকা মেলা পেয়ে কিছুটা সন্তুষ্ট তিনি। দুপরের হালকা রোদে কিছু দর্শনার্থী ও বিক্রিয়প্রতিনিধিদের দেখা যায় রোদে বসে থাকতে। একটু উষ্ণতা পেতে রোদের আলোয় দাঁড়িয়ে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মেলাতো একটা বিনোদন। শীতের মধ্যে বাহিরে বের হওয়ার মধ্যে কোন বিনোদন নেই। আর মাসব্যাপী হওয়ার কারণে অনেকের মধ্যে আগ্রহ একটু কম। আরিয়ান দম্পতির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একটু স্বস্তির জন্য খোলামেলা চলাফেরার জন্য ছুটির দিন ব্যতীত মেলায় আসেন। তবে শীতের এই তীব্রতায় বেশ কষ্ট পাচ্ছেন সেটাও জানালেন অবলিলায়। গোটা মেলায় শীতের জির্ণতার একটা ছাপ স্পষ্ট। বিক্রয়কর্মীরা হাকডাক করলেও ক্রেতাদের তেমন সাড়া নেই। যারা মেলায় এসেছেন গরম কাপড়ের পকেট থেকে হাত বের করে মেলায় প্রয়োজনীয় জিনিসটি দেখতেও অনিচ্ছুক। এদিন বিভিন্ন বিক্রয়কর্মীরাও তেমন একটা ঘোরাফেরা না করে নিজ নিজ প্যাভিলিয়নগুলোতেই সময় পাড় করতে দেখা গেছে। এদিকে, সকাল দশটা থেকে মেলা শুরুর কথা থাকলেও শীতের কারণে কিছু স্টল দশটার বেশ পরে খোলা হয়। দর্শনার্থী কম থাকার কারণে স্টলগুলোরও আগ্রহ কম মনে হয়েছে। একাধিক প্যাভিলিয়নে কথা বলে জানা যায়, মেলা শুরুর পর শুক্র ও শনিবার কিছুটা প্রাণ ফিরে পেয়েছিল মেলা। তবে শীতের কারণে আবার অনেকটাই নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে। তবে বিক্রয়কর্মীরা আশাবাদী আগামী ছুটির দিনের আগেই মেলায় প্রাণ আবার ফিরবে। ইপিবির কর্মকর্তারা আশাবাদী আগামীর দিনগুলো নিয়ে। তারা জানিয়েছেন, মেলার প্রথম দিকে আর শীতেরও একটা বিষয় আছে। সে কারণে কিছুটা দর্শক কমে গেলেও মাসব্যাপী এই মেলায় সামনের দিনে দর্শক অবশ্যই বাড়বে বলে মত তাদের।
×