ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশদের ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই

আজ শেষ দিনে সিডনি টেস্টের ফয়সালা

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

আজ শেষ দিনে সিডনি টেস্টের ফয়সালা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মেলবোর্নে ‘বক্সিং ডে’ টেস্ট ড্র করার পর সফরকারী অধিনায়ক জো রুট বলেছিলেন, ট্রফি খোয়ালেও জয় দিয়ে শেষ করতে আত্মবিশ্বাসী তার দল। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে বিপরীত পরিস্থিতির মুখোমুখি ইংল্যান্ড। এ্যাশেজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের শেষ দিনে আজ জয় নয়, উল্টো অতিথিদের সামনে ম্যাচ বাঁচানোর (ড্র) সংগ্রাম। ৩৪৬/১০Ñ এর জবাবে ৭ উইকেটে ৬৪৯ রান করে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ইংলিশদের সংগ্রহ ৯৩ রান। ইনিংস হার এড়াতেই চাই আরও ২১০। ম্যাচ বাঁচানোর আশায় প্রদীপ হয়ে জ্বলছেন ৪২ রানে অপরাজিত রুট। ব্যক্তিগত ১৭ রান নিয়ে অধিনায়কের সঙ্গে আছেন জনি বেয়ারস্টো। দু-জনই ব্যাটসম্যান, অপেক্ষমাণদের মধ্যে একমাত্র অলরাউন্ডার মঈন আলি। সুতরাং বাস্তবতার বিচারে এই ম্যাচ বাঁচানো ইংল্যান্ডের জন্য সত্যি দুরূহ। আগেই ৩-০ তে সিরিজ নিশ্চিত করা অস্ট্রেলিয়ার সামনে বরং ব্যবধান ৪-০ করার হাতছানি। সেই পথেই এগোচ্ছে দুরন্ত-দুর্বার স্টিভেন স্মিথ বাহিনী। রবিবার চতুর্থ দিনেও ছিল অস্ট্রেলিয়ার আধিপত্য। শুরুটা হয়েছিল মার্শ ভাইদের সেঞ্চুরি দিয়ে। শন ও মিচেল- দুই ভাই একই ইনিংসে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অনন্য কীর্তি গড়েছেন। সিডনির ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় সিদ্ধ হয়েছেন ইংলিশ বোলাররা। ১৯৩ ওভার ব্যাটিংয়ের পর ইনিংস ঘোষণা করে তাদের ‘মুক্তি’ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তখনও ম্যাচ বাঁচাতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে হবে ৯ ঘণ্টা। কিন্তু ৩০ মিনিটের মধ্যেই তারা হারিয়েছে দুই ওপেনারকে। হতাশার সফরে নিজের শেষ ইনিংসে ভাল কিছু করার সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি মার্ক স্টোনম্যান ও জেমস ভিন্স। মিচেল স্টার্কের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ৯ বল মোকাবেলায় ডাক (০) মেরেছেন স্টোনম্যান। আরেক পেসার প্যাট কামিন্সের বলে সিøপে স্মিথকে ক্যাচ দেয়ার আগে ভিন্স করতে পেরেছেন ১৮। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ১৫/২! দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে অভিজ্ঞ এ্যালিস্টার কুককে (১০) বোল্ড করেন স্পিনার নাথান লেয়ন। পরে তিনি ফিরিয়েছেন ডেভিড মালানকেও। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়া মালান করেছেন ৫। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। ৬৮ রানেই ইংল্যান্ডের ৪ উইকেট নেই। বেয়ারস্টোকে নিয়ে দিনের বাকি ১২ ওভার কাটিয়ে দেন রুট। এর আগে দিনের দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝি সময়ে স্মিথ অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ঘোষণা করেন ৭ উইকেটে ৬৪৯ রানে। লিড তখন ৩০৩ রানের। বলের হিসাবে গত ২০ বছরে এটিই অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘতম টেস্ট ইনিংস (১১৫৮ বল)। ওপরের দিকের ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে শুধুমাত্র ক্যামেরন ব্যানক্রফট (০) ফিফটি পার করতে পারেননি। দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়ার পথে বাকি সবাই অবদান রেখেছেন। তৃতীয় দিন শেষে শন মার্শ অপরাজিত ছিলেন ৯৮ রানে। কাল দিনের পঞ্চম বলেই মঈন আলীকে চার হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। আর ৬৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা মিচেল মার্শ তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন প্রথম ঘণ্টার পরপরই। ২০০১ সালে স্টিভ ও মার্ক ওয়াহর পর টেস্টের একই ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ান ভাইদের সেঞ্চুরির প্রথম কীর্তি এটিই। মিচেল সেঞ্চুরির পরের বলেই ফিরেছেন ১০১ রান করে। দুই ভাই গড়েন ১৬৯ রানের বড় জুটি। এরপর টিম পাইনের সঙ্গে ৫২ রানের আরেকটি জুটি গড়েন শন। রান আউট হওয়ার আগে ১৫৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন মার্শ ভাইদের বড় জন। স্টার্ক করেছেন ১১ রান। ইনিংস ঘোষণার আগে পাইন ৩৮ ও কামিন্স ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ইংল্যান্ডের অভিষিক্ত লেগ স্পিনার ম্যাসন ক্রেইন ৪৮ ওভারে ১৯৩ রান দিয়ে নিয়েছেন একটি মাত্র উইকেট। টেস্ট অভিষেকে কোন ইংলিশ বোলারের সর্বোচ্চ রান দেয়ার রেকর্ড এটি। ১৯৮৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই ডেভন ম্যালকমের ১৬৬ রান ছিল আগের রেকর্ড। সব মিলিয়ে ক্রেইন আছেন তালিকায় পাঁচ নম্বরে। ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার সুরাজ রানদিভের দেয়া ২২২ রান সর্বোচ্চ। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৩৪৬/১০ (১১২.৩ ওভার; কুক ৩৯, স্টোনম্যান ২৪, ভিঞ্চ ২৫, রুট ৮৩, মালান ৬২, বেয়ারস্টো ৫, মঈন ৩০, কুরান ৩৯, ব্রড ৩১, ক্রেইন ৪, এ্যান্ডারসন ০*; স্টার্ক ২/৮০, হ্যাজলউড ২/৬৫, কামিন্স ৪/৮০, লেয়ন ১/৮৬) ও দ্বিতীয় ইনিংস ৯৩/৪ ব্যাটিং (৪৬ ওভার; কুক ১০, স্টোনম্যান ০, ভিঞ্চ ১৮, রুট ৪২*, মালান ৫, বেয়ারস্টো ১৭*; স্টার্ক ১/১৭, লেয়ন ২/৩১, কামিন্স ১/১২) অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস : ৬৪৯/৭ ডিক্লে. (১৯৩ ওভার; ওয়ার্নার ৫৬, খাজা ১৭১, স্মিথ ৮৩, শন মার্শ ১৫৬, মিচেল মার্শ ১০১, টিম পেইন ৩৮*, স্টার্ক ১১, কামিন্স ২৪*; এ্যান্ডারসন ১/৫৬, ব্রড ১/১২১, মঈন ২/১৭০, কুরান ১/৮২, ক্রেন ১/১৯৩) ** চতুর্থ দিন শেষে
×