ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীতে সহায়তার অভিযোগ

ইরানের ৫ কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

ইরানের ৫ কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীতে প্রযুক্তি সহায়তা দেয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পাঁচটি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এসব কোম্পানির স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করা যাবে এবং আমেরিকান নাগরিকদের তাদের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন পরিহার করতে হবে। খবর- বিবিসি। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভ মনুচিন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে বলেন, ইরানের আর্থিক সঙ্কটের দরুণ যেখানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে কর্তৃপক্ষের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা প্রতিরোধে আমরা কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণে দ্বিধাবোধ করব না। মার্কিন অর্থমন্ত্রী তার বিবৃতিতে বলেন, ইরানী জনগণের অর্থনৈতিক কল্যাণের চেয়ে সেদেশের কর্তৃপক্ষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ব্যয়বহুল কর্মকা-েকে অগ্রাধিকার দেয়। সে জন্য এ ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর প্রধান নিয়ামক বা উপাদানকে নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষে এই নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে। যে পাঁচটি কোম্পানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, সেগুলো ইরানের বিখ্যাত শিল্প প্রতিষ্ঠান শহীদ বাকেরী ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রুপের অধিনস্থ প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে, শহীদ ইসলামী রিসার্চ সেন্টার, শহীদ খারাজি ইন্ডাস্ট্রিজ, শহীদ মোগাদ্দাম ইন্ডাস্ট্রিজ, শহীদ সানিখানি ইন্ডাস্ট্রিজ ও শহীদ শুস্তারি ইন্ডাস্ট্রিজ। দীর্ঘদিন যাবত ট্রাম্প প্রশাসন বলে আসছে যে, ইরানের ব্যালিস্টিক কর্মসূচী ২০১৫ সালে ইরান ও বিশ্বের পরাশক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে সম্পাদিত পরমাণু চুক্তির শর্তাবলীর পরিপন্থী। উল্লেখিত, পরমাণু চুক্তি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবে বলা হয়, ইরান ভবিষ্যতে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এমন কোন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মকা-ে জড়িত হতে পারবে না। কিন্তু ইরান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচী সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে পরিচালিত হচ্ছে এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে কোন ধরনের যুদ্ধাস্ত্র সংযোজনের পরিকল্পনা তাদের নেই। কিন্তু বর্তমানে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বেশ দ্রুততার সঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। ইরানী জনগণ আর্থিক অনটন ও রাজনৈতিক নিষ্পেষণের প্রতিবাদে উত্তাল বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোরতার দরুণ ছয় দিনের বিক্ষোভে ২১ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে এটিকে বেশ বড় ধরনের বিক্ষোভ বলা যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানী বিক্ষোভকারীদের প্রতি তার সমর্থন জানিয়ে টুইট বার্তা পাঠিয়েছেন। এতে তিনি তাদের পাশে যথা সময়ে আরও বড় সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আসার আশ্বাস দেন। বিক্ষোভকারীদের প্রতি ট্রাম্পের এই সমর্থনকে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘অযাচিত মার্কিন হস্তক্ষেপ’ বলে ইরান জাতিসংঘে অভিযোগ করেছে। এই অভিযোগপত্রে ইরান বলে, ইরানী জনগণকে ধ্বংসাত্মক কাজে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে মার্কিন নেতৃত্ব অসংখ্য অবান্তর টুইটবার্তা পাঠিয়েছে। যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। জাতিসংঘের কাছে একটি চিঠিতে ইরান দেশটির সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্যে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগ করেছে।
×