ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শৈত্যপ্রবাহ এ মাসেই, নদী অববাহিকায় থাকবে কুয়াশা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৩ জানুয়ারি ২০১৮

শৈত্যপ্রবাহ এ মাসেই, নদী অববাহিকায় থাকবে কুয়াশা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জানুয়ারিতে দেশজুড়ে তীব্র শীত অনুভূত হবে । এ মাসের অধিকাংশ সময়জুড়ে শৈত্যপ্রবাহের আধিপত্য থাকবে। বয়ে যাবে দু থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ। তার মধ্যে থাকবে এক থেকে দুটি মাঝারি অথবা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা উঠা-নামা করলেও কুয়াশা ও ঠা-া বাতাসের কারণে অনুভূত হবে তীব্র শীত। আগামী পাঁচদিন রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। মঙ্গলবারও দেশে অনুভূত হয় তীব্র শীত। কুয়াশার কারণে জল ও স্থল পথে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয় । আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ১ থেকে ২টি মাঝারি ও তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ এবং অন্যত্র ২ থেকে ৩টি মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। দেশের নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি/ ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা/ মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। আর ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। ওই মাসের প্রথমার্ধে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ১টি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ওই মাসের প্রথমার্ধে দেশের নদ-নদীর অববাহিকা ও অন্যত্র সকালের দিকে হালকা/ মাঝারি ধরনের কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা আছে । দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ঘন কুয়াশা ও ঠা-া বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ঘন কুয়াশায় ওপরে উঠতে পারছে না জলীয়বাষ্প। শিশির ভেজা মাটি শুকিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকছে না। মাঝে মধ্যে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও উত্তাপ থাকে না। দিনের অধিকাংশ সময় কুয়াশার চাদরে মোড়ানো থাকে আকাশ। চলতি মাসে শীতের তীব্রতা বাড়বে। ওই মাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। সূত্রটি আরও জানায়, মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিলেটে ২৭.৫ এবং সর্বনি¤œ রাজশাহীতে ১১.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। আর ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় যথাক্রমে ২৬.৮ ও ১৭.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে এ বছর এখন পর্যন্ত দেশে কোন শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি। দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নামছে না। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পৌষ মাসের প্রায় ১৭ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে জেঁকে বসেছিল শীত। কনকনে শীত অনুভূত হয়। এবার জানুয়ারির শুরুতেও ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় রেখেছে শীত! পৌষেও কনকনে শীতে কাঁপতে হচ্ছে না দেশবাসীকে। মাঝারি ধরনের শীত পড়লেও স্বাভাবিকের কাছেই ঘোরাফেরা করেছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ বছর শীত মৌসুমের গোড়াতেই বারবার হোঁচট খেয়েছে উত্তরী হাওয়া। ভরা ডিসেম্বরেও শীত-শীত ভাবটা উধাও হওয়ার অবস্থা হয়েছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে শীতের মাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও গত বছরের মতো মানুষের হাড় কাঁপাতে পারেনি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শীত এবার অনেক খামখেয়ালি আচরণ করছে। তার জন্য দায়ী করা হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা এল নিনো পরিস্থিতিকে। কারণ, প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলেছে। ফলে বদলে গেছে ফিরতি পথের মৌসুমি বায়ুর চরিত্র। শীতেও সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে এবং তা উত্তরী হাওয়ার সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছে। আবহাওয়াবিদরা আরও বলছেন, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে আসা উত্তরী হাওয়ার ওপর ভারত ও বাংলাদেশে শীতের মাত্রা হ্রাস ও বৃদ্ধির বিষয়টি নির্ভর করে।
×