বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা জননেতা আবদুর রাজ্জাকের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জাতীয় নেতা আবদুর রাজ্জাক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আগামী নির্বাচনে বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতাসীন করার মাধ্যমে সেই ধরনের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার মধ্য দিয়েই তার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। তাহলেই প্রয়াত এই নেতার প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধা জানানো হবে।
শনিবার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে আবদুর রাজ্জাক স্মৃতি সংসদ ও আবদুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন। দিনটি উপলক্ষে এদিন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন প্রয়াত এই নেতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।
এদিকে, দিনের মূল আয়োজন টিএসসি মিলনায়তনের আলোচনা সভার আমন্ত্রণপত্রে জাতীয় পর্যায়ের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আলোচক হিসেবে নাম ছাপা হলেও অধিকাংশ আলোচকই উপস্থিত হননি। এই অবস্থায় বিকেল ৩টায় সভা শুরুর কথা থাকলেও শুরু হয় বিকেল সাড়ে ৪টায়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আবদুর রাজ্জাক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই ধরনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব হবে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুকুল বোস বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান স্বঘোষিত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের অপচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তাই তার মরণোত্তর বিচারের দাবি করছি।
জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচন কেবল নির্বাচন নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামের অংশ। যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষা ছিল আবদুর রাজ্জাকের। আর এই সংগ্রাম সফল করতে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে আবারও ক্ষমতায় এনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আবদুর রাজ্জাক স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, মৃত্যুশয্যায় মানুষ সাধারণত পরিবারের কথা নিয়েই চিন্তা করেন। কিন্তু আবদুর রাজ্জাকের আক্ষেপ ছিল, তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে পারবেন কি-না, তা নিয়ে। এ থেকেই বোঝা যায় তিনি কী চেয়েছিলেন।
আলোচনায় আরও অংশ নেন আবদুর রাজ্জাক স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক বাহালুল মজনুন চুন্নু, আবদুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান খান, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।
আবদুর রাজ্জাকের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ॥ প্রয়াত জননেতা আবদুর রাজ্জাকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে তার কবরে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শনিবার সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে প্রয়াত আবদুর রাজ্জাকের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে এ প্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রয়াত এ নেতার কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এ সময়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফল জাতীয় নির্বাচনে কোন প্রভাব ফেলবে না। আসছে জাতীয় নির্বাচনে জয়ের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনে আমরাই বিজয়ী হব। সেই লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
আলোচনা সভায় বক্তারা
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ছিল আবদুর রাজ্জাকের
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: