ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

পাওয়া গেল ‘ক্রিকেটের নতুন আওয়াজ’

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

পাওয়া গেল ‘ক্রিকেটের নতুন আওয়াজ’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া থেকেও অনেকেই নাম রেজিস্ট্রেশন করেছেন। যদিও বাংলাদেশে আসতে পারেননি তারা। তবে জানতে চেয়েছিলেন ধারাভাষ্যের ভিডিও পাঠিয়ে দিলে চলবে কি না। কানাডা থেকে একজন নাম এন্ট্রি করেন। কর্তৃপক্ষ কৌতূহলী হয়ে তাকে ফোন করে জানতে চান, কেন নাম এন্ট্রি করলেন? জবাবে কানাডা ওই প্রবাসী বলেন, ‘ক্রিকেট তো, তাই নাম দিয়েছি। বাংলাদেশে এসে অডিশন দিতে আগ্রহী কি না? ‘না, আমার তো পাসপোর্টই নেই!’ এমন সব মজার ঘটনার কথা জানা গেল সোমবার, রাজধানীর বনানীর একটি রেস্টুরেন্টে। গত ৮ নবেম্বর শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার অন্বেষণ প্রতিযোগিতার প্রথম আসর ‘ফ্রেশ প্রেজেন্টেস স্বাধীন কমেন্টেটর হান্ট ২০১৭ পাওয়ার্ড বাই জিটিভি।’ ১০-২০ নবেম্বর ছিল প্রতিযোগীদের (১৮ বছরের উর্ধে) নাম নিবন্ধনের সময়। কিন্তু তাদের সংখ্যাধিক্য দেখে কর্তৃপক্ষ সময় বাড়িয়ে দেন ২২ নবেম্বর পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের (৩৫ জন) নিয়ে তিন দিনব্যাপী গ্রুমিং সেশন চলে (২-৪ ডিসেম্বর)। এরা বিপিএল ক্রিকেটে গত ৬ এবং ৮ ডিসেম্বর নিয়মিত ধারাভাষ্যকারদের সঙ্গে পরীক্ষামূলকভাবে ধারাভাষ্য দেন রেডিও স্বাধীনে। তাদের ধারাভাষ্য শুনে দর্শক ও শ্রোতারা ভোট দিলে সেখান থেকে সেরা ১০ জনকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য বেছে নেয়া হয়। তারই গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সোমবার। এতে বিচারক, দর্শক ও শ্রোতাদের রায়ে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হন আহমেদ বিন পারভেজ। প্রথম রানারআপ হন রিদওয়ান করিম রিমন এবং দ্বিতীয় রানারআপ হন সাজ্জাদ রাহাত। এছাড়া দুজন ক্রীড়া উপস্থাপকও বেছে নেয়া হয়। তারা হলেন বিশু এবং মিশু। চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত। বহু বছর ধরে বেতার ও টিভিতে দিয়ে যাচ্ছেন ধারাভাষ্য। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই প্রশ্ন উঠেছে, তার পরে কে? এই ভাবনাটাই গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল এই জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকারকে। তার সেই কল্পনা অবশেষে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। ধারাভাষ্যকাররা হবেন উন্নতমানের, বিশ্বমানের-এমন চিন্তাধারার ফসল হচ্ছে এই কমেন্টেটর হান্ট। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এক লাখ টাকা পুরস্কার পাওয়া আহমেদ বলেন, ‘ফল ঘোষণার আগে যথেষ্ট নার্ভাস ছিলাম। সবাইকে ধন্যবাদ। এমন প্ল্যাটফর্মে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। প্রতিযোগিতার শুরুতে আমি ৩৫ জনের মধ্যে সবার শেষে ছিলাম। সেখান থেকে ধীরে ধীরে উন্নতি করে শেষ পর্যন্ত সেরা হয়েছি।’ যারা সেরা তিনে জায়গা করে নিতে পারেননি, তাদেরও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পরবর্তীতে তারাও বেতারে ধারাভাষ্য দেয়ার সুযোগ পাবেন। মূলত এটা ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার অন্বেষণ হলেও কেউ যদি অন্য কোন খেলারও (ফুটবল, হকি) ধারাভাষ্যকার হতে চায়, তাহলে তাকেও যোগ্যতার ভিত্তিতে বেছে নেয়া হবে। ধারাভাষ্যকারা বাংলা বা ইংরেজী যেকোন ভাষাতেই কাজ করতে পারবেন। তবে গত ৮ নবেম্বরের প্রেসমিটে আয়োজকরা জানিয়েছিলেন এটা হবে স্পোর্টস কমেন্টেটর হান্ট প্রোগ্রাম। কিন্তু সোমবার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্যপট। প্রজেক্টরে দেখানো হলো প্রোগ্রামের থিং সং। যেখানে অন্য খেলাগুলোকে পাশ কাটিয়ে শুধু ক্রিকেটের জয়গান করা হয়। শুধু তাই নয়, মঞ্চে গিয়ে আমন্ত্রিত অতিথি, স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং বিচারকরাও একই কথার পুনরাবৃত্তি করেন। এতে করে আগের প্রেসমিট তারা যা বলেছিলেন, সেই অবস্থান থেকে পুরোপুরিই সরে আসেন তারা! এই ধারাভাষ্যকার অন্বেষণ প্রতিযোগিতার মূল বিচারক ছিলেন চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত। এছাড়া বিচারক প্যানেল ও সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার শফিকুল হক হীরা, মোহাম্মদ আশরাফুল, জাভের ওমর বেলিম, এহসানুল হক সেজান, হান্নান সরকার, গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, আতাহার আলী খান, নাজমুল আবেদীন ফাহিম, মোর্শেদ আলী খান সুমন, বিশিষ্ট সাংবাদিক মোস্তফা মামুন, জাতীয় দলের নারী ক্রিকেটার সাথিরা আক্তার জেসি এবং ধারাভাষ্যকার কুমার কল্যাণ প্রমুখ।
×