ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে ইটভাঁটি ॥ হুমকির মুখে ফসলি জমি

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

আমতলীতে ইটভাঁটি ॥ হুমকির মুখে ফসলি জমি

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ১০ ডিসেম্বর ॥ আইন ও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে আমতলী-তালতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানক্ষেতে ইটভাঁটি গড়ে উঠেছে। প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে আঁতাত করেই ইটভাঁটির মালিকরা অবৈধভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি। জানা গেছে, কৃষি জমি ও পরিবেশ রক্ষায় ফসলি জমিতে ইটভাঁটি না গড়ার আইন থাকলেও অবৈধ ইটভাঁটি মালিকরা তা মানছে না। আমতলী ও তালতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমিতে পরিবেশ অধিদফতর, কৃষি অফিসের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ছাড়া ২৫টি ঝিকঝ্যাঁক, ড্রাম চিমনি ও পাজায় ইট পোড়ানোর কাজ চলছে। স্বল্প উচ্চতার ড্রাম চিমনি ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনির ইটভাঁটি স্থাপন করা হয়েছে। জ্বালানি হিসাবে অনেক ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহারের জন্য গ্রাম থেকে বিভিন্ন জাতের গাছ কেটে স্তূপ করে রেখেছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক হুমকির আশঙ্কা করেছে পরিবেশবাদীরা। কৃষি জমিতে ইটভাঁটি নির্মাণ করায় ফসল নষ্ট হচ্ছে। দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমি। ইট প্রস্তুত ও ভাঁটি স্থাপন আইন, ২০১৩-এর ৮ ধারা অনুযায়ী কৃষি জমি, আবাসিক এলাকায় ভাঁটি স্থাপন দ-নীয় অপরাধ। এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক থেকে কমপক্ষে আধা কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ইটভাঁটি স্থাপন করাও নিষিদ্ধ। ইটভাঁটির মালিকরা এ সকল আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কৃষি জমি, লোকালয় ও গ্রামীণ সড়কের পাশে ইটভাঁটি নির্মাণ করছে। আমতলী সদর, হলদিয়া, চাওড়া, কুকুয়া, গুলিশাখালী, আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন ও তালতলী উপজেলার ছোটবগী, সোনাকাটা ও কড়ইবাড়ীয়া ইউনিয়নে ২৫টি ঝিকঝ্যাঁক ও ড্রাম চিমনি এবং পাজায় ইট পোড়ানোর নির্মাণ কাজ চলছে। এ মাসে পুরোদমে ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করতে মালিকরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আমতলী-কুয়াকাটা মহাসড়কের সেকান্দারখালী নামক স্থানে এসইউএবি, এমএসবি, কেএবি, জিমিসহ ইটভাঁটি ধান ক্ষেতের মধ্যে ঝিকঝ্যাঁকের চুল্লি নির্মাণ করে মাটি কেটে ইট তৈরির কাজ শুরু করছে। আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের বাদুরা নামক স্থানের ধান ক্ষেতের পাশে ডিবিএম ঝিকঝ্যাঁক ইটভাঁটি ইট পোড়ানো হচ্ছে। চাওড়া তালুকদার বাজার ও চালিতাবুনিয়া সড়কের পাশে ইট পোড়ানোর জন্য কাঠ স্তূপ করে রেখে দিয়েছে। কল্যাণপুর গ্রামের আবদুল বারেক ও কড়াইবুনিয়া গ্রামের রাকিব জানান কৃষি জমিতে ইটভাঁটি নির্মাণ করায় যেমন ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তিনি আরও জানান এর প্রভাবে অনেক গাছপালা মরে যাচ্ছে।
×