ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরবনে মৎস্যজীবীদের অপহরণ আতঙ্ক

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭

সুন্দরবনে মৎস্যজীবীদের অপহরণ আতঙ্ক

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ পূর্ব সুন্দরবনে আবারও জেলে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপাই রেঞ্জের লাঠিমারা এলাকা থেকে বনদস্যু সুমন বাহিনী মঙ্গলবার ভোরে ৫ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে কমপক্ষে ৩৮ জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যু সুমন ও ছোট্ট বাহিনী। এদের মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে গত রবিবার বিকেলে দুই জেলে ফিরে এসেছেন। অপহৃতদের জনপ্রতি মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করছে দস্যুরা। মুক্তিপণ না পেলে তাদেরকে হত্যা করার হুমকি দেয়া হয়েছে। অপহৃত জেলেদের অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও ফিরে আসা জেলে ও মহাজনদের সূত্রে জানা গেছে। শরণখোলার কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, বনদস্যু সুমন ও ছোট্ট বাহিনীর গত ৩০ নবেম্বর ভোরে শরণখোলা রেঞ্জের ছাপড়াখালী ও চাঁদপাই রেঞ্জের হরমল খাল, চড়াপুটিয়া ও কলামুলা এলাকা থেকে ২০ জেলেকে অপহরণ করে। এদের মধ্যে থেকে গত রবিবার বিকেলে উপজেলা উত্তর রাজাপুর গ্রামের সরোয়ার এবং মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা এলাকার একজনসহ (নাম জানা যায়নি) দুই জেলে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসেন। এছাড়া গত ২ ডিসেম্বর সকালে চাঁদপাই রেঞ্জের কলামুলা নামক স্থান থেকে ১৩ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বনদস্যু সুমন বাহিনী। একেক জেলের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করছে দস্যুরা। অপহৃত জেলেদের বাড়ি শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, পাথরঘাটা ও মংলা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বলে মহাজনরা জানান। দস্যুদের কাছে জিম্মি থাকা শরণখোলা উপজেলা উত্তর রাজাপুর গ্রামের মানিক হাওলাদারের বাবা হেমায়েত হাওলাদার ও ছগির খানের বাবা আবদুল হামিদ খান জানিয়েছেন, বনদস্যু সুমন বাহিনীর প্রধান সুমন ৩ ডিসেম্বর দুপুরে তার ০১৭৮১৯২৯৭০০ এই নম্বর থেকে কল করে দুজনের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে। মানিক ও ছগিরের ওপর তারা অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে। তাদের হাত পায়ের নখ তুলে দিয়েছে দস্যুরা। জেলেদের মুখ থেকেও মুঠোফোনে নির্যাতনের বর্ণনা শুনিয়েছে দস্যুরা। এ অবস্থায় দরিদ্র ওই জেলেদের পরিবার চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে। মংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট আব্দুলাহ আল মাহমুদ জানান, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে অবস্থিত তাদের ৬টি স্টেশনের কোস্টগার্ড সদস্যদের খোঁজখবর নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বনে টহল জোরদার করা হয়েছে। দস্যুদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান শনাক্ত করে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে। বরিশাল র‌্যাব-৮ এর মেজর সোহেল জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে সুন্দরবনে জেলে অপহরণের খবর শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
×