ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুতে এশিয়ান আরচারির উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

বঙ্গবন্ধুতে এশিয়ান আরচারির উদ্বোধন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজক এই প্রথমবার হয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ২০তম এই আসরে অংশ নেবে ৩৫ দেশের ১৬১ পুরুষ ও ১২৫ মহিলা আরচার এবং ১২২ অফিসিয়ালসহ মোট ৪০৮ জন (বাংলাদেশের আছেন ১৮ আরচার)। শনিবার আসরের উদ্বোধন করা হয়। তবে উদ্বোধন হলেও খেলা হয়নি। হয়েছে সব আরচারদের অফিসিয়াল অনুশীলন। আজ রবিবারও মূল খেলা হবে না। হবে কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডের খেলা। এখান থেকে র‌্যাঙ্কিং বাছাই করে সোমবার থেকে শুরু হবে মূলপর্বের লড়াই। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছেÑ এত বড় আয়োজনের উদ্বোধনীতে দেখা যায়নি কোন জাঁকজমক, কোন উৎসব। বিশ্বসেরা আরচারদের এই মিলন মেলার শুরুটা হয়েছে বড়ই অনাড়ম্বর, সাটামাটাভাবে! ঘরের মাঠে এত বড় টুর্নামেন্টে আরচারি ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ছিল লক্ষণীয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল খুবই শিথিল। ভেন্যু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে যে কেউই প্রবেশ করতে পেরেছেন বিনা বাধায়। গত মাসের ২৬ তারিখে এই আসরের লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে আনা হয়েছিল যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেলকে। অথচ শনিবার আসরের উদ্বোধন করতে ওই পর্যায়ের কাউকেই হাজির করতে পারেনি বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন! শেষে বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজাকে দিয়েই উদ্বোধন করানো হয়। আরচারদের অনুশীলন শেষে পল্টনে অবস্থিত শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সেখানেও বহিরাগতদের ঢুকতে বাধা দেয়া হয়নি। অর্থাৎ দায়সারা আয়োজনেই দায়িত্ব শেষ করতে চাইছেন সংশ্লিষ্টরা। শনিবার মূল ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আরচারদের সবাই অনুশীলন করেন। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে স্বর্ণজয়ী দক্ষিণ কোরিয়ার দুই আরচার লি সিয়ং-ইয়ন ও নারী আরচার কি বো-বে আছেন এশিয়ান আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপে। আলাপ করার পর প্রায় সব আরচারই জানান, মূল ভেন্যুর প্রধান সমস্যা হচ্ছে বাতাস। এই সমস্যার কথা তিনদিন আগে বাংলাদেশের আরচার রুমান সানাও বলেছিলেন। বাংলাদেশ দলের অন্যতম কোচ জিয়াউল হক বলেন, ‘মেয়েদের অনুশীলনে আমি সন্তুষ্ট। তারা যদি আসল লড়াইয়ে এভাবে খেলে তাহলে ভাল কিছৃু করা সম্ভব।’ ১০ ইভেন্টে ৩০টি পদকের জন্য ২৮৬ আরচার লড়বেন। ইভেন্টগুলো হলো : রিকার্ভ পুরুষ দলগত, রিকার্ভ নারী দলগত, রিকার্ভ পুরুষ একক, রিকার্ভ নারী একক, কম্পাউন্ড পুরুষ দলগত, কম্পাউন্ড নারী দলগত, কম্পাউন্ড পুরুষ একক, কম্পাউন্ড নারী একক, রিকার্ভ মিশ্র দলগত এবং কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত। গতবারের মতো এবারও ফেভারিট দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশের আবহাওয়া-পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কোন সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছে দলগুলো। সর্বশেষ ২০১৫ সালে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত হয় আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ। টুর্নামেন্ট সামনে রেখে গত নয় মাস ধরে টঙ্গী নিজস্ব আরচারি গ্রাউন্ডে অনুশীলন করছে বাংলাদেশের তীরন্দাজরা। এই আসরে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো : আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, চীন, উত্তর কোরিয়া, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, জাপান, কাজাখস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, কুয়েক, কিরগিজস্তান, লাওস, লেবানন, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, তাইপে, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুর্কমেনিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম ও ইয়েমেন। টুর্নামেন্ট সামনে রেখে বৃহস্পতিবার ১৮ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করা হয়েছে। রিকার্ভ একক ও দ্বৈত, কম্পাউন্ড একক, দ্বৈত ছাড়াও রিকার্ভ এবং কম্পাউন্ডের মিশ্র দ্বৈতে বাংলাদেশের পুরুষ ও মহিলা আরচাররা অংশ নেবেন। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের লক্ষ্য সেরা ১০-এ থাকা বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমন কথাই জানান বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল।
×