ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফরম পূরণ

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ৩০ অক্টোবর ২০১৭

ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফরম পূরণ

ফিরোজ মান্না ॥ ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে পাসপোর্টের ফরম পূরণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের মানুষের হাতে এক কোটি ৮৬ লাখ এমআরপি রয়েছে। ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে ফরম পূরণ হয়ে দেশের ৭০টি পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে এ বছরেই ২ কোটি পাসপোর্ট মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। কয়েকটি সংগঠন দাবি করেছে, পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল করার। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা পাসপোর্ট সহজে জনগণের হাতে পৌঁছে দেয়ার সব জন্য কার্যকর নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। দালাল একটা বড় সমস্যা ছিল। এটা অনেকটাই মুক্ত করা গেছে। এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) নিয়ে পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান এ কথা বলেন। জেনারেল মাসুদের কাছে পাসপোর্টের খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ছিল। প্রশ্নগুলোর উত্তর দেন তিনি। পাসপোর্ট নিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) তুলে দেয়া হয়েছে এক কোটি ৮৬ লাখ। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল থেকে দেশে এমআরপি দেয়া শুরু হয়। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ১৯০টি দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে ২০১১ সালের ১ এপ্রিল থেকে সব দেশকে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট ও ভিসার প্রচলন করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই চুক্তির শর্তানুসারে বাংলাদেশে ২০১০ সালের ১ এপ্রিল থেকে এমআরপি পাসপোর্ট চালু হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। পাসপোর্ট অফিসকে দালালমুক্ত করার জন্য বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো হয়েছে। ফলে এখন মানুষ দালালমুক্ত পরিবেশে পাসপোর্ট করতে পারছেন। সারাদেশে ৭০টি এবং বিদেশে ৬৫টি পাসপোর্ট অফিস রয়েছে। এসব অফিস থেকে ১ কোটি ৮৬ লাখ পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে। এখান থেকে সরকার সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে। তবে হ্যাঁ আমাদের পাসপোর্টের মান আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বিশ্বে আমাদের পাসপোর্টের স্থান ৯০তম স্থানে। এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুরের পাসপোর্ট। তিন চার নম্বরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। পাসপোর্টের ডিজি বলেন, দেশ যখন মধ্যম আয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আমাদের পাসপোর্টের ‘ভেলু’ মান অনেক এগিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি। তবে আমাদের চেষ্টা রয়েছে মধ্যম আয়ের দেশের পাসপোর্টের যে ভেলু হওয়া দরকার তাই করার। পর্যটক হিসেবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আগে থেকে ভিসা না নিয়ে ঢুকতে পারে বিশ্বের মাত্র পাঁচটি দেশে। দেশগুলো এশিয়ার মধ্যে। ইউরোপ আমেরিকার কোন দেশে পোর্ট এন্ট্রি ভিসা নেই বাংলাদেশী নাগরিকদের। এশিয়ার পাঁচ দেশের মধ্যে শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ নিকট প্রতিবেশী দেশ। এ দেশগুলো সার্কভুক্ত। এই চার দেশের বাইরে শুধু ইন্দোনেশিয়া পোর্ট এন্ট্রি ভিসা দিচ্ছে। প্রতিবেশী ভারত আবার পোর্ট এন্ট্রি দিচ্ছে না। শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশী পর্যটকদের তাদের দেশের এয়ারপোর্টে আগমনী (অন এ্যারাইভাল) ভিসা দেয় ৩০ দিনের। মালদ্বীপ ৯০ দিনের ও ভুটান ১৫ দিনের ভিসা দেয় বাংলাদেশী পর্যটকদের। তবে দ্বিপক্ষীয় ভিসা চুক্তির আওতায় কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারী বাংলাদেশীরা ৫টি দেশসহ মোট ২১টি দেশে যেতে পারেন। এই দেশগুলো বেশিরভাগই এশিয়ায় অবস্থিত। দেশগুলো হচ্ছে ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, চীন, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, বেলারুশ, কুয়েত, রাশিয়া, জাপান ও চিলি। কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারী বাংলাদেশীদের ভিসা ছাড়া ঢুকতে দেয়া দেশগুলোর মধ্যে ইউরোপের রয়েছে মোট তিনটি দেশ।
×