ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কথোপকথন ॥ বাংলাদেশের নাটককে উন্নত বিশ্বে মর্যাদার আসনে নিতে চাই ॥ এইচ আর অনিক

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

কথোপকথন ॥ বাংলাদেশের নাটককে উন্নত বিশ্বে মর্যাদার আসনে নিতে চাই ॥ এইচ আর অনিক

এইচ আর অনিক। নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক ও নাট্যভিনেতা। দীর্ঘ দিন মঞ্চের অভিজ্ঞতায় ২০০৫ সালে গড়ে তোলেন চন্দ্রকলা থিয়েটার। দলের সাধারণ সম্পাদক অনিক একাধিক নাটক রচনা ও নির্দেশনার পাশাপাশি নিয়মিতভাবে অভিনয় করেন। নাটক নিয়ে একাধিকবার ভারত সফর করে দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কারও পেয়েছেন। অনিকের চন্দ্রকলা নাট্যদলের এক যুগ পূর্তি হচ্ছে আজ। এ উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজন ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। চন্দ্রকলা থিয়েটারের একযুগে পদার্পণ আয়োজনে কি কি থাকছে? এইচ আর অনিক : একযুগে পদার্পণ উপলক্ষে আজ সন্ধ্যাায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে ‘চন্দ্রকলার একযুগ ও তামাশা নাটকের ৫০তম মঞ্চায়ন উৎসব-২০১৭’ শীর্ষক আয়োজন করেছি। এ আয়োজনে এবার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছকে ‘চন্দ্রকলা পদক’ দেয়া হবে। আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ। বিশেষ অতিথি থাকবেন নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী ও নাট্যজন আহমেদ গিয়াস। শেষে ‘তামাশা’ নাটকের ৫০তম মঞ্চায়ন হবে। চন্দ্রকলার যুগপূর্তিতে আপনার অনুভূতি কেমন? এইচ আর অনিক : চন্দ্রকলা এখন এক যুগে, এটি আমার জীবনের অন্যতম আনন্দের। চন্দ্রকলা নিয়ে প্রচুর পরিশ্রম করেছি তাই আনন্দের মাত্রাও বর্ণনাতীত। সেনাপতি হিসেবে এক ঝাঁক চৌকস সৈনিক পেয়েছি যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজকের চন্দ্রকলা। বিশেষ করে আমি দলের জন্য পরিবারের চাইতে বেশি সময় দিয়েছি। দলের একযুগে পদার্পণ উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। চন্দ্রকলাকে নিয়ে আরও অনেক দূর যাওয়া আমার স্বপ্ন । এ পর্যন্ত কতগুলো প্রযোজনা মঞ্চে এসেছে, কি কি? এইচ আর অনিক : এ পর্যন্ত ১১টি নাটক প্রযোজনা করেছি। এগুলো হলো ‘তামাশা’, ‘আজব বাক্স’, ‘ওপেন ইউর আইস’, ‘তন্ত্র মন্ত্র’, ‘মানুষ’, ‘খতিয়ান’, ‘হাসপাতাল’, ‘যদি কিছু মনে না করেন’, ‘ভাঙ্গা সংবাদ’, ‘রিহার্সেল’,‘যদি এমন হতো’ প্রভৃতি। ‘পরম্পরা’ নামে অরেকটি নতুন নাটক খুব শীঘ্রই মঞ্চে আসবে। ফেডারেশনের সদস্য হিসেবে দলের নাট্যচর্চায় কতটা গতি পেয়েছে বলে মনে করেন? এইচ আর অনিক : ফেডারেশনের সদস্য হওয়ায় সুগঠিত নিয়মের মধ্যে দল পরিচালনা করতে হয়েছে। এতে দলের নাট্যচর্চার গতি অনেক বেড়েছে। নাটক নির্মাণে সব সময় সঠিক পরামর্শ দিয়েছে ফেডারেশন। বাংলাদেশের নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ন? এইচ আর অনিক : আমি চন্দ্রকলা থিয়েটার নিয়ে অনেকবার দেশের বাইরে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করেছি। আমি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, আমাদের কৃষ্টি কালচারকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি বাংলাদেশের নাটকের মান অনেক উন্নত। বিশ্বের নামকরা দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নাটক পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতা করছে। যারাই দেশের বাইরে নাটক নিয়ে যাচ্ছে তারা তাদের সেরা নাটকটিই মঞ্চায়ন করছে। আপনিতো টিভি নাটকেও কাজ করছেন? এইচ আর অনিক : মঞ্চের পাশপাশি নিয়মিত টিভি নাটক রচনা, পরিচালনা ও অভিনয়ও করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৭ টি নাটক নির্মাণ করেছি। বেশ কিছু নাটক দেশ টিভিতে প্রচার হয়েছে। আমি বেশ কিছু টিভিসি ও নির্মাণ করেছি। এছাড়া আরও ৩টি নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখা শেষ করেছি খুব শীঘ্রই এগুলোর শূটিং শুরু করব। ব্যক্তিগতভাবে বেশ কিছু পুরস্কারও তো পেয়েছেন? এইচ আর অনিক : দেশ টিভিতে প্রচার হওয়া ‘বিবর’ নাটকের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে ট্র্যাব এ্যাওর্য়াড পেয়েছি। এছাড়া এসডিসিএফ এ্যাওর্য়াড, নাট্যযোদ্ধা সম্মাননা, নাট্যদল সম্মাননা পেয়েছি। দেশের বাইরে ভারতে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে পরপর ৫বার শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ও নির্দেশকের এ্যাওর্য়াড পেয়েছি। অল ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল কর্তৃপক্ষ আমাকে ‘কালচারাল এ্যাম্বাসেডর’ করার পাশাপাশি আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করেছে। যা আমার বিশেষ পাওয়া বলে মনে করি। দল নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? এইচ আর অনিক : নাটকের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরা, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলা, অন্যায়ের প্রতিবাদ, সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাটককে উন্নত বিশ্বে মর্যাদার আসনে নিতে চাই। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। -সাজু আহমেদ
×