ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

মুন্সীগঞ্জে জেলেদের চাল বরাদ্দে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৬ অক্টোবর ২০১৭

মুন্সীগঞ্জে জেলেদের চাল বরাদ্দে অনিশ্চয়তা

স্টাফ রিপোর্র্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ জেলার ৬ উপজেলার ২ হাজার ২৭ জেলের চাল বরাদ্দ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারী বিধি অনুযায়ী ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এই ২২ দিন সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। জেলা মৎস্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী ছয় উপজেলায় ৮ হাজারের অধিক জেলে রয়েছে, এর মধ্যে ২ হাজার ২৭ জেলে ইলিশ ধরে থাকে। এই মৌসুমে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলেরা বেকার হয়ে পড়ে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা বিপাকে পড়ে। এর মধ্যে সরকারী বরাদ্দের এই চাল যদি না পায় তাহলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে দিন যাপন করতে হবে। লৌহজং, টঙ্গীবাড়ি উপজেলা অংশের পদ্মা নদী এবং গজারিয়ার মেঘনা অংশের জেলেদের ইলিশ ধরার অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। তবে ২২দিন এই জেলেদের সরকারীভাবে চাল দেয়ার কথা থাকলেও মুন্সীগঞ্জে চাল বরাদ্দ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর আগের বছরেও সরকারী চাল পায়নি জেলেরা। বাংলাবাজারের জেলে হারুন জানান, মাছ ধরে কোনমতে সংসার চলে, এর মধ্যে ২২ দিনে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে বেঁচে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তার ওপর যদি সরকারী বরাদ্দের চাল না পাই তাইলে কেমনে হবে। বিগত বছরগুলোতেও জেলেদের বরাদ্দ পেতে নানা জটিলতা হয়েছে। জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি জেলা আমানউল্লাহ মিয়া জানান, জীবিকার তাগিদে কয়েক জায়গায় মাছ ধরি। বাংলাবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যাবে নৌকাগুলো অলস সময় পার করছে। জেলেদের জমানো টাকা যা ছিল তাও শেষের দিকে। এর আগের বছরও জেলাতে ইলিশ মৌসুমে অনুদান পাওয়া যায়নি। এবারও পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। সদরের বাংলাবাজার এলাকার জেলে জহিরুল ইসলাম জানান, আমরা জেলে, মাছ শিকার করে প্রতিদিন মুখে অন্ন জোটে এবং পরিবারের চাহিদা পূরণ হয়। কিন্তু ইলিশ মৌসুমে আমাদের মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ২২ দিনের জন্য। সরকার ইলিশ ধরলে নানা শাস্তির বিধান রেখেছে কিন্তু জেলেরা এই ২২দিন কিভাবে অনুদান ছাড়া থাকবে তা নিশ্চিতের ব্যাপারে নানা জটিলতা দেখাচ্ছে বলে জানান। জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা বলেন, এর আগের বছর ১৪টি জেলায় ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পেলেও মুন্সীগঞ্জ বঞ্চিত হয়। এবার মৌসুম শুরুর দুই সপ্তাহ আগেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি লিখেছি। আশা করি অন্য জেলা পেলে মুন্সীগঞ্জ জেলাও পাবে। বরাদ্দ হোক কিংবা না হোক সরকারী নিয়ম অনুযায়ী মা ইলিশ ধরা যাবে না। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. অলিউর রহমান জানান, গতবার ভুলের কারণে আমাদের জেলার জেলেদের জন্য বরাদ্দ আসেনি। এবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ব্যস্ততা ও তাদের বরাদ্দের কারণে আমরা বরাদ্দ পাব কিনা তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
×