ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বিশ্ব হার্ট দিবস

বছরে এক কোটি ৭২ লাখ লোক হৃদরোগ ও স্ট্রোকে মারা যায়

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বছরে এক কোটি ৭২ লাখ লোক হৃদরোগ ও স্ট্রোকে মারা যায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হৃদরোগ ও স্ট্রোকে সারাবিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৭২ লাখ লোক মারা যায়। বাংলাদেশেও হৃদরোগ ও স্ট্রোকের প্রকোপ বেড়ে চলেছে। দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২ দশমিক ৫ ভাগ হৃদরোগে এবং ২ ভাগ স্ট্রোকে আক্রান্ত। আর হৃদরোগে আক্রান্তের শতকরা ৭ দশমিক ৭ ভাগ রোগী এবং স্ট্রোকে আক্রান্তের শতকরা ৮ দশমিক ৯ ভাগ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামী ১৮ বছরে হৃদরোগ মহামারি রূপ নিতে পারে। ২০ বছরের নিচের বয়সীদের হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব হার্ট দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচী। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল্লাহ আল সাফী মজুমদার জনকণ্ঠকে বলেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে হৃদযন্ত্রবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা দরকার। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ আক্রান্ত হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপে। আর জন্মগত হৃদরোগে প্রতি হাজারে আক্রান্ত হচ্ছে ৭ থেকে ৮ জন। ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং কায়িক পরিশ্রমের অভাব- এসব কিছু নিয়ন্ত্রণ করলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকজনিত শতকরা ৮০ ভাগ মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। অধিকাংশ ব্যক্তি যতক্ষণ জেগে থাকে তার অর্ধেকেরও বেশি সময় কর্মক্ষেত্রে কাজের মধ্যে থাকে। সেজন্য স্বাস্থ্যকর কর্ম পরিবেশ একান্ত দরকার। খেতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। ধূমপানকে ‘না’ বলতে হবে। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। লবণ কম করে গ্রহণ করতে হবে। হৃদরোগ প্রতিরোধে সারাদেশে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বাড়াতে হবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। কর্মস্থল হতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত। হৃদরোগ চিকিৎসাসেবা বাড়াতে হবে। উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান রাকিবুল ইসলাম লিটু জনকণ্ঠকে বলেন, হৃদরোগ একটি জটিল ব্যাধি। সব বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। তাই আক্রান্ত হওয়ার আগেই এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হয়। তিনি জানান, হৃদরোগ থেকে মুক্ত থাকতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই। পাশাপাশি থাকতে হবে শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাত্রা। প্রতিদিন কমপক্ষে এক ঘণ্টা করে হাঁটতে হবে। সকালের চেয়ে বিকেলে হাঁটা উত্তম। ধূমপান পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে। উচ্চ চাপ, ডায়াবেটিস ও রক্তের চর্বিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। সামুদ্রিক মাছ ও শাক-সবজি বেশি করে খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে বলে জানান ডাঃ রাকিবুল ইসলাম লিটু। এদিকে বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সচেতনতামূলক র্যালি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। র্যালিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ এ এস এম জাকারিয়া স্বপন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল প্রমুখ।
×